সাবেক মেয়র আরিফুলকে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী করছে বিএনপি
Published: 6th, November 2025 GMT
সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে অবশেষে সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে প্রার্থী করছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত তথ্য বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আরিফুল হক নিজেই।
সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আরিফুল হক। গতকাল বুধবার রাতে আরিফুল হক বলেন, দলের উচ্চপর্যায় থেকে তাঁকে সিলেট-১-এর পরিবর্তে বেশ কয়েকবার সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বললেও তিনি রাজি হননি। গতকাল রাতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাঁকে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হতে নির্দেশনা দেন। এ নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ নেই।
বিএনপি গত সোমবার জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। সিলেট জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে সিলেট-১ আসনে প্রার্থী করা হয় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দিতাকারী খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরকে। আর যে দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি, এগুলো হচ্ছে সিলেট-৪ ও সিলেট-৫ (কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ)।
সাবেক মেয়র আরিফুলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে আরিফুল আশাহত হন। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার দলের উচ্চপর্যায় থেকে তাঁকে ঢাকায় জরুরি তলব করা হয়। পরে গতকাল রাত নয়টার দিকে তিনি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর বাসভবনে দেখা করার ডাক পান।
চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও আরিফুল হকের মুঠোফোনে আলাপ হয়। এ সময় চেয়ারপারসন আরিফুলকে সিলেট-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নির্দেশ দেন। বিষয়টি দ্রুত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দল জানাবে।
চেয়ারপারসন আমাদের জাতীয় মুরব্বি। তাঁর নির্দেশে আমি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে সম্মত হয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। সিলেট-৪ আসনের মানুষের ভালোবাসা নিয়েই আমি নির্বাচনী মাঠে নামব।আরিফুল হক চৌধুরীআরিফুল বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন। এর আগে তিনি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য। এর আগে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন একসময়ের ছাত্রদলের প্রভাবশালী এই নেতা।
বিএনপির মনোনয়নে আরিফুল টানা দুই মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়ে সিলেটে অনেক উন্নয়নকাজ করেছেন। দলমত–নির্বিশেষে সব মহলের কাছে তাঁর একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আরিফুলকে অংশ নেওয়ার জন্য দলের বাইরের ভোটারদের চাপ ছিল। তবে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি।
যোগাযোগ করলে আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চেয়ারপারসন আমাদের জাতীয় মুরব্বি। তাঁর নির্দেশে আমি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে সম্মত হয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। সিলেট-৪ আসনের মানুষের ভালোবাসা নিয়েই আমি নির্বাচনী মাঠে নামব। দলের প্রয়োজনে আমি বারবার নির্দেশ পালন করে আসছি। এখনো সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করার আদেশ মাথা পেতে মেনে নিয়েছি।’
আরও পড়ুন‘মহড়া’ দিয়ে সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইলেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক২২ অক্টোবর ২০২৫এদিকে স্থানীয় বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, সিলেট-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন অনেকে। এর মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির দুবারের সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা হেলাল উদ্দিন আহমদ, বিএনপি-দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের স্ত্রী জেবুন্নাহার সেলিম, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহস্বেচ্ছাসেবক–বিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান উল্লেখযোগ্য।
আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন। জৈন্তাপুর উপজেলার সাবেক এই চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবেও শক্তিশালী।
আরও পড়ুনসিলেটবাসীর সঙ্গে বৈষম্যের প্রতিবাদ, সড়ক বন্ধ করে আরিফুল হকের নেতৃত্বে গণ-অবস্থান০২ নভেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল ট ৪ আসন স ল ট ১ আসন ব এনপ র স আর ফ ল হক র আর ফ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানিকে নিয়ে কী বললেন কুমোর শীর্ষ তহবিলদাতা
বিল অ্যাকম্যান একজন হেজ ফান্ড ব্যবস্থাপক ও ধনকুবের। ট্রাম্পের গোঁড়া সমর্থক তিনি। এবার নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর নির্বাচনী প্রচারে শীর্ষ দাতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। সেই অ্যাকম্যান গতকাল বুধবার মেয়র পদে বিজয়ী ডেমোক্র্যাট জোহরান মামদানিকে শুভেচ্ছা জানাতে দেরি করেননি।
গতকাল বিল অ্যাকম্যান তাঁর এই সহানুভূতিশীল সুরের পেছনের ভাবনাও ব্যাখ্যা করেছেন।
জোহরান মামদানি সম্পর্কে অ্যাকম্যান বলেন, ‘তিনি আগামী চার বছরের জন্য আমাদের মেয়র হতে চলেছেন।’
জোহরান মামদানি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম। তাঁর মা ভারতের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মিরা নায়ার। বাবা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক মাহমুদ মামদানিও জন্মগতভাবে ভারতীয়।
ধনকুবের অ্যাকম্যান আরও যোগ করেন, ‘আমি নিউইয়র্ক নগরের জন্য গভীরভাবে ভাবি। ১৮৯০-এর দশকে আমরা নিউইয়র্কের অভিবাসী হওয়ার পর থেকে এই নগর আমার ও আমার পরিবারের প্রতি খুব সদয় ছিল।’
অ্যাকম্যান আরও বলেন, জোহরান মামদানিকে তিনি সমর্থন না করলেও তিনি এই নগরকে সাহায্য করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়র যেই হোন না কেন, আমি তাঁকে সাহায্য করতে পারি।’
ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জোহরান মামদানি মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিউইয়র্ক নগরের ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। এ জয়ের মধ্য দিয়ে জোহরান শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন।
একই সঙ্গে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী কোনো অভিবাসী প্রথম নিউইয়র্কের মেয়র হলেন। শুধু তাই নয়, এক শতাব্দীর মধ্যে জোহরান হচ্ছেন সবচেয়ে কনিষ্ঠ মেয়র।