২০০৫ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাংলাদেশের নদ-নদী শীর্ষক বইয়ের প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশে মোট ৩১০টি নদীর কথা বলা হয়েছিল। ২০১১ সালে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করে। এই সংস্করণে ৪০৫টি নদীর পরিচিতি তুলে ধরা হয়।

এই তালিকায় রংপুর জেলার মোট ১৪টি নদীর কথা উল্লেখ করা হয়। ২০২৩ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বাংলাদেশের নদ-নদী সংজ্ঞা ও সংখ্যা শীর্ষক বই প্রকাশ করে। বইটি ভুলে ভরা। এই তালিকা মোতাবেক দেশে নদ-নদীর সংখ্যা ১ হাজার ৮টি, রংপুর জেলায় মোট নদ-নদী ১৯টি।

অন্তর্বর্তী সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৪১৫টি নদীর তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকা প্রস্তুত করার কাজে বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীকে সদস্যসচিব এবং একজন নদীকর্মীকে দিয়ে বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

আমি রংপুর বিভাগীয় ওই কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলাম। সরেজমিন খুঁজে খুঁজে দীর্ঘ ১৫ বছরে যে নদীগুলোর সন্ধান পেয়েছিলাম, সেগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে যাচাই-বাছাইপূর্বক তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। রংপুরের নদীগুলো তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে রংপুরের জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেছেন। সরকারি হিসাব মোতাবেক রংপুর জেলায় এখন মোট নদ-নদীর সংখ্যা ৪৩।

এই ৪৩টি নদীর একটি নদীও নেই, যে নদীটিকে ভালো নদী বলা যায়। এর মধ্যে কোনোটি আছে নামসর্বস্ব নদী। দখলে-দূষণে-অযত্নে এ নদীগুলো সংকটাপন্ন।

রংপুরে বুড়াইল নামে চারটি নদী আছে। সিটি করপোরেশনের উত্তরে খটখটিয়ার পাশে বুড়াইলের বাজার এলাকা থেকে এ নদীটি উৎপন্ন হয়ে খোকসা ঘাঘট নদের কাছে শ্যামাসুন্দরীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মিঠাপুকুর উপজেলায় শালমারা এবং কাফ্রিখাল মিলিত হওয়ার পর বুড়াইল নামে নদীটি ঘাঘটে মিলিত হয়েছে। রংপুরের নব্দীগঞ্জ এবং মীরবাগের মাঝামাঝি বুড়াইল নদী প্রবাহিত হয়ে আলাইকুমারী নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই বুড়াইলের একটি ক্ষীণ শাখা মানাস নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে ব্রাহ্মণীকুণ্ডা এলাকায় বুড়াইল নাম ধারণ করেছে। চারটি বুড়াইল, মানাস, আলাইকুমারী, শালমারা, খোকসা ঘাঘট—কোনোটির অবস্থা ভালো নয়। নব্দীগঞ্জের পাশ দিয়ে যে বুড়াইল প্রবাহিত, সেটি থেকে প্রায় ২৮টি বাঁধ উচ্ছেদ করা হলেও আমতলী নামক স্থানে ক্ষমতাধরের দেওয়া বাঁধ অপসারণ করা হয়নি। রংপুরের আদি শহর মাহিগঞ্জ গড়ে উঠেছিল ইছামতী নদীর তীরে। সেখানে আফানউল্লাহ স্কুলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী মরি মরি অবস্থায়।

নদীগুলোর সুরক্ষার কাজ যদি এখনই শুরু করা না যায়, তাহলে যত দিন যাবে, ততই নদীগুলো আরও মুমূর্ষু হবে। তখন এগুলোকে বাঁচিয়ে তোলা কঠিন হবে।

শালমারা নদীতে অবৈধ দখল ছিল। সেই দখলের অনেকাংশ আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করা হলেও রেকর্ড সংশোধনের কাজ এখনো হয়নি। বদরগঞ্জে মরা তিস্তা নামে একটি নদী ভরাট হয়ে আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছিল। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই নদীটি খনন করে এর প্রাণপ্রবাহ ফিরিয়েছে কিন্তু এ নদীর জমিও ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়েছে।

বদরগঞ্জেই খটখটিয়া নামের একটি নদীর অনেকাংশে অবৈধ দখল বাতিল করা হলেও আরও কিছু অংশ দখলে থেকে গেছে। পীরগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর অনেক জমি দখল করে বাগান তৈরি করা হয়েছে। বদরগঞ্জের করতোয়া, সোনারবন, গড্ডাঙ্গি, খোড়া, পলিমারী, নেংটিছেড়া, ধাইজানের অবস্থাও শোচনীয়। চিকলি নদীর অবস্থা কিছুটা ভালো। চিকলি নদীটি বদরগঞ্জ উপজেলায় যমুনেশ্বরী নদীতে মিলিত হয়েছে।

রংপুরের তিনটি প্রধান নদী। তিস্তা, ঘাঘট এবং যমুনেশ্বরী-করতোয়া। তিস্তা পাঁচটি জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত, ঘাঘট তিনটি জেলার ওপর দিয়ে এবং যমুনেশ্বরী-করতোয়া পাঁচটি জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। তিনটি নদীর ওপরই আছে নানান অত্যাচার। ঘাঘটের তো উৎসমুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিস্তার পানিতে এ নদীর জন্ম হলেও বর্তমানে তিস্তা থেকে এ নদীটি বিচ্ছিন্ন। যমুনেশ্বরী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয় না। তিস্তা নদী তো দেশীয় অযত্ন আর ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার।

পীরগঞ্জের ডোমজানা নদীটিতে দূষণ আছে। মাদারগঞ্জে নলেয়া নদীর অবস্থা শোচনীয়। আখিরা, মরা, সোনামতি নদীও কোনো রকম অস্তিত্ব নিয়ে বেঁচে আছে। যেহেতু রংপুরের নদীগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, তাই এগুলোর পরিচর্যার জন্য জেলাভিত্তিক একটি মাস্টারপ্ল্যান করা প্রয়োজন। জেলা প্রশাসন চাইলে এ নদীগুলোর দখল চিহ্নিত করা সম্ভব। দখল হওয়া নদী উদ্ধারে জেলা প্রশাসনই যথেষ্ট। দূষণ বন্ধেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিস্তা নদীর সংকট দূরীকরণে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভূমিকা পালন করতে হবে। এ নদীর কয়েক হাজার একর জমি দখল হয়েছে। এই দখল মুক্ত করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

রংপুর জেলার নদীগুলোর পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব। রংপুর শহরের ভেতরে শ্যামাসুন্দরী, খোকসা ঘাঘট নদীতে বেশ কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এই অবকাঠামো যত দ্রুত উচ্ছেদ করা যায়, ততই কল্যাণ। যদি নদীগুলোর সুরক্ষার কাজ এখনই শুরু করা না যায়, তাহলে যত দিন যাবে, ততই নদীগুলো আরও মুমূর্ষু হবে। তখন এগুলোকে বাঁচিয়ে তোলা কঠিন হবে।

তুহিন ওয়াদুদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং নদী রক্ষাবিষয়ক সংগঠন রিভারাইন পিপলের পরিচালক

[email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ল ত হয় ছ বদরগঞ জ নদ গ ল র প রব হ ত র অবস থ নদ র স নদ র ক র একট উপজ ল নদ নদ করত য়

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুর জেলায় ৪৩টি নদীর একটিও ভালো নেই

২০০৫ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাংলাদেশের নদ-নদী শীর্ষক বইয়ের প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশে মোট ৩১০টি নদীর কথা বলা হয়েছিল। ২০১১ সালে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করে। এই সংস্করণে ৪০৫টি নদীর পরিচিতি তুলে ধরা হয়।

এই তালিকায় রংপুর জেলার মোট ১৪টি নদীর কথা উল্লেখ করা হয়। ২০২৩ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বাংলাদেশের নদ-নদী সংজ্ঞা ও সংখ্যা শীর্ষক বই প্রকাশ করে। বইটি ভুলে ভরা। এই তালিকা মোতাবেক দেশে নদ-নদীর সংখ্যা ১ হাজার ৮টি, রংপুর জেলায় মোট নদ-নদী ১৯টি।

অন্তর্বর্তী সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৪১৫টি নদীর তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকা প্রস্তুত করার কাজে বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীকে সদস্যসচিব এবং একজন নদীকর্মীকে দিয়ে বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

আমি রংপুর বিভাগীয় ওই কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলাম। সরেজমিন খুঁজে খুঁজে দীর্ঘ ১৫ বছরে যে নদীগুলোর সন্ধান পেয়েছিলাম, সেগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে যাচাই-বাছাইপূর্বক তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। রংপুরের নদীগুলো তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে রংপুরের জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেছেন। সরকারি হিসাব মোতাবেক রংপুর জেলায় এখন মোট নদ-নদীর সংখ্যা ৪৩।

এই ৪৩টি নদীর একটি নদীও নেই, যে নদীটিকে ভালো নদী বলা যায়। এর মধ্যে কোনোটি আছে নামসর্বস্ব নদী। দখলে-দূষণে-অযত্নে এ নদীগুলো সংকটাপন্ন।

রংপুরে বুড়াইল নামে চারটি নদী আছে। সিটি করপোরেশনের উত্তরে খটখটিয়ার পাশে বুড়াইলের বাজার এলাকা থেকে এ নদীটি উৎপন্ন হয়ে খোকসা ঘাঘট নদের কাছে শ্যামাসুন্দরীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মিঠাপুকুর উপজেলায় শালমারা এবং কাফ্রিখাল মিলিত হওয়ার পর বুড়াইল নামে নদীটি ঘাঘটে মিলিত হয়েছে। রংপুরের নব্দীগঞ্জ এবং মীরবাগের মাঝামাঝি বুড়াইল নদী প্রবাহিত হয়ে আলাইকুমারী নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই বুড়াইলের একটি ক্ষীণ শাখা মানাস নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে ব্রাহ্মণীকুণ্ডা এলাকায় বুড়াইল নাম ধারণ করেছে। চারটি বুড়াইল, মানাস, আলাইকুমারী, শালমারা, খোকসা ঘাঘট—কোনোটির অবস্থা ভালো নয়। নব্দীগঞ্জের পাশ দিয়ে যে বুড়াইল প্রবাহিত, সেটি থেকে প্রায় ২৮টি বাঁধ উচ্ছেদ করা হলেও আমতলী নামক স্থানে ক্ষমতাধরের দেওয়া বাঁধ অপসারণ করা হয়নি। রংপুরের আদি শহর মাহিগঞ্জ গড়ে উঠেছিল ইছামতী নদীর তীরে। সেখানে আফানউল্লাহ স্কুলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী মরি মরি অবস্থায়।

নদীগুলোর সুরক্ষার কাজ যদি এখনই শুরু করা না যায়, তাহলে যত দিন যাবে, ততই নদীগুলো আরও মুমূর্ষু হবে। তখন এগুলোকে বাঁচিয়ে তোলা কঠিন হবে।

শালমারা নদীতে অবৈধ দখল ছিল। সেই দখলের অনেকাংশ আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করা হলেও রেকর্ড সংশোধনের কাজ এখনো হয়নি। বদরগঞ্জে মরা তিস্তা নামে একটি নদী ভরাট হয়ে আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছিল। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই নদীটি খনন করে এর প্রাণপ্রবাহ ফিরিয়েছে কিন্তু এ নদীর জমিও ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়েছে।

বদরগঞ্জেই খটখটিয়া নামের একটি নদীর অনেকাংশে অবৈধ দখল বাতিল করা হলেও আরও কিছু অংশ দখলে থেকে গেছে। পীরগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর অনেক জমি দখল করে বাগান তৈরি করা হয়েছে। বদরগঞ্জের করতোয়া, সোনারবন, গড্ডাঙ্গি, খোড়া, পলিমারী, নেংটিছেড়া, ধাইজানের অবস্থাও শোচনীয়। চিকলি নদীর অবস্থা কিছুটা ভালো। চিকলি নদীটি বদরগঞ্জ উপজেলায় যমুনেশ্বরী নদীতে মিলিত হয়েছে।

রংপুরের তিনটি প্রধান নদী। তিস্তা, ঘাঘট এবং যমুনেশ্বরী-করতোয়া। তিস্তা পাঁচটি জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত, ঘাঘট তিনটি জেলার ওপর দিয়ে এবং যমুনেশ্বরী-করতোয়া পাঁচটি জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। তিনটি নদীর ওপরই আছে নানান অত্যাচার। ঘাঘটের তো উৎসমুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিস্তার পানিতে এ নদীর জন্ম হলেও বর্তমানে তিস্তা থেকে এ নদীটি বিচ্ছিন্ন। যমুনেশ্বরী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয় না। তিস্তা নদী তো দেশীয় অযত্ন আর ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার।

পীরগঞ্জের ডোমজানা নদীটিতে দূষণ আছে। মাদারগঞ্জে নলেয়া নদীর অবস্থা শোচনীয়। আখিরা, মরা, সোনামতি নদীও কোনো রকম অস্তিত্ব নিয়ে বেঁচে আছে। যেহেতু রংপুরের নদীগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, তাই এগুলোর পরিচর্যার জন্য জেলাভিত্তিক একটি মাস্টারপ্ল্যান করা প্রয়োজন। জেলা প্রশাসন চাইলে এ নদীগুলোর দখল চিহ্নিত করা সম্ভব। দখল হওয়া নদী উদ্ধারে জেলা প্রশাসনই যথেষ্ট। দূষণ বন্ধেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিস্তা নদীর সংকট দূরীকরণে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভূমিকা পালন করতে হবে। এ নদীর কয়েক হাজার একর জমি দখল হয়েছে। এই দখল মুক্ত করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

রংপুর জেলার নদীগুলোর পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব। রংপুর শহরের ভেতরে শ্যামাসুন্দরী, খোকসা ঘাঘট নদীতে বেশ কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এই অবকাঠামো যত দ্রুত উচ্ছেদ করা যায়, ততই কল্যাণ। যদি নদীগুলোর সুরক্ষার কাজ এখনই শুরু করা না যায়, তাহলে যত দিন যাবে, ততই নদীগুলো আরও মুমূর্ষু হবে। তখন এগুলোকে বাঁচিয়ে তোলা কঠিন হবে।

তুহিন ওয়াদুদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং নদী রক্ষাবিষয়ক সংগঠন রিভারাইন পিপলের পরিচালক

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ