বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রিমান্ডে
Published: 5th, November 2025 GMT
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে করা রাজধানীর চকবাজার থানার মামলায় বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
আজ শ্রীশান্তকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তিন দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ২২ অক্টোবর ওনার কাছ থেকে আইপ্যাড, ল্যাপটপ ও বাটন ফোন জব্দ করেছে পুলিশ। এসবের ফরেনসিক করে জানার কথা এটা কে করেছে। ২৩ ও ২৫ সালে ওনার দুটি মোবাইল হারিয়েছে। সেসবের জিডিও করা হয়েছে। সেই মোবাইলগুলো হয়তো কারও হাতে পড়েছে। তারা এ কাজ করেছে। শ্রীশান্ত ১৪ দিন ধরে কারাগারে। এ সময়ের মধ্যে ফরেনসিক করলে পুলিশ সব তথ্য পেতে পারত।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানিতে বলা হয়, ‘শ্রীশান্ত বিভিন্ন পেজে ফেক আইডি থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনে লেখালেখি করেছেন। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হলে এসবের সঙ্গে আর কে কে জড়িত, কেন এসব করেছেন, সে তথ্যগুলো জানা যাবে। আমরা তিন দিনের রিমান্ডের প্রার্থনা করছি।’
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর শ্রীশান্তকে আদালত থেকে হাজতখানার দিকে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিরাপত্তাকর্মী মো.
মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, আসামি বুয়েটের আহসান উল্লাহ হলে অবস্থান করে ছদ্মনাম ‘উইকলি সার্ভিস’ আইডি ব্যবহার করে মুসলিম নারী ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে গত ৮ জুন থেকে ৭ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন লেখা লেখেন। আসামি মুসলিম নারীসংক্রান্ত অশ্লীল মন্তব্য এবং ধর্মীয় ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন, যা বুয়েটের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিজিএমইএ-আইএমএফ বৈঠক
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মধ্যে পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও রূপান্তর নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় এই বৈঠক হয়।
আরো পড়ুন:
উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বিজিএমইএ-এনপিও সমঝোতা স্মারক
শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ
বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এজেন্ডায় পোশাক খাতের অবদানকে উচ্চ প্রশংসা করে এবং শিল্প খাতের চলমান রূপান্তর প্রচেষ্টায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেয়।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহসভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা এবং পরিচালক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী।
আইএমএফ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিনিয়র ইকোনমিস্ট কিয়াও চেন, সিনিয়র ইকোনমিস্ট রুইফেং ঝাং এবং ইকোনমিস্ট আয়া সাইদ।
আইএমএফের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পোশাকশিল্পের ভূমিকা, চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈশ্বিক অস্থিরতা সত্ত্বেও কিভাবে পোশাকশিল্প প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, প্রতিষ্ঠানটি এখন শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে উচ্চমূল্যের উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, ম্যান-মেইড ফাইবার (এমএমএফ) ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য শুল্ক পরিবর্তন ও বাণিজ্য সুবিধা হ্রাসের বিষয়েও আলোচনা হয়। বিজিএমইএ নেতারা জানান, তারা সরকারকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় থাকে।
বিজিএমইএ নেতারা বৈঠকে শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে ব্যবসা পরিচালন সহজীকরণ ও ব্যয় হ্রাসের ওপর জোর দেন। তারা উল্লেখ করেন, বোর্ড ইতিমধ্যে সরকারকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের স্থিতিশীলতা, বন্দর ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং সুদের হার এক অঙ্কে রাখার বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এছাড়া তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ