চট্টগ্রাম মহানগরীতে বড় দুটি সরকারি হাসপাতাল—একটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল আর একটি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু হাসপাতাল দুটিতে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজ করছে স্বাস্থ্যসেবার বৈপরীত্য। একদিকে চমেক হাসপাতালের ২ হাজার ২০০ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার রোগীর চাপ, অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালের ২৫০ শয্যার অর্ধেকের বেশি ফাঁকা পড়ে থাকে। জনগণের অর্থের অপচয় ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে।

জেনারেল হাসপাতাল সর্বশেষ ২০১২ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এর জনবল কাঠামো এখনো ১৯৮৬ সালের ১০০ শয্যার ভিত্তিতে রয়ে গেছে; অর্থাৎ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ। যখন পর্যাপ্ত নার্স বা চিকিৎসককে সহজে পাওয়া যায় না, তখন রোগীর ভর্তি না হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই জনবলসংকটের পাশাপাশি রয়েছে জরাজীর্ণ অবকাঠামো এবং যন্ত্রপাতির তীব্র অভাব। ভবনের বিভিন্ন অংশে পলেস্তারা খসে পড়ছে, ফাটল ধরছে। সবচেয়ে বড় কথা, এমআরআই মেশিন নষ্ট এবং ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিন প্রায়ই অচল। বাজেট বরাদ্দ না থাকার অজুহাতে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি কেনা সম্ভব হচ্ছে না। চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে একটি ২৫০ শয্যার হাসপাতাল যদি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি এবং ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন সেবার জন্য নার্স-চিকিৎসক নিশ্চিত না করতে পারে, তবে কেন একজন রোগী সেখানে ভর্তি হতে চাইবেন?

নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকার রংমহল পাহাড়ের ওপর হাসপাতালটির অবস্থানের কারণে রাতের বেলা পাহাড়ি পথে মাদকসেবী ও বহিরাগতদের আনাগোনা থাকে, যা ছিনতাই এবং নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি তৈরি করে। একজন রোগী সুস্থ হতে এসে যদি রাতে নিজের বা পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত থাকেন, তবে তিনি অবশ্যই অন্য কোথাও চলে যাবেন। সেখানে আনসার সদস্য নিয়োজিত করার কথা থাকলেও অনুমোদনগত প্রক্রিয়ার কারণে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে।

জেনারেল হাসপাতালে এভাবে শয্যা খালি পড়ে থাকায় চমেক হাসপাতালের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। যেমন চমেকে শিশু ওয়ার্ডে প্রতিটি শয্যায় কয়েকজন করে রোগী থাকে, কিন্তু জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে অনেক শয্যা পুরোপুরি খালিই থাকে। এ বছর সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগ (বহির্বিভাগ) থেকে সন্তুষ্টচিত্তে সেবা নিয়েছেন, তখন বোঝা যায় সেবার গুণগত মান খারাপ নয়; বরং হাসপাতালে ভর্তির পরিবেশই খারাপ।

এই হাসপাতালকে পুনরুজ্জীবিত করা এখন জরুরি। এর জন্য দরকার সুনির্দিষ্ট ও সমন্বিত পদক্ষেপ। জনবলসংকট নিরসন, যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন, ভবন সংস্কার, আনসার সদস্য নিয়োজিত করা ইত্যাদি পদক্ষেপ আন্তরিকতার সঙ্গেই নিতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে?

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফিফপ্রোর একাদশ: মেসি–রোনালদোর জায়গা হয়নি, ইয়ামাল সর্বকালের সর্বকনিষ্ঠ

ক্যারিয়ারের গোধূলিবেলায়ও আলো ছড়াচ্ছেন লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। বয়স তাঁদের থামাতে পারেনি। এবার ফিফপ্রোর বর্ষসেরা একাদশের প্রাথমিক তালিকায়ও ছিলেন দুজনই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জায়গা হয়নি চূড়ান্ত একাদশে। তরুণদের জোয়ারে হার মানতে হয়েছে ফুটবলের এই দুই কিংবদন্তিকে।

তাঁদের জায়গা না হলেও ইতিহাস গড়েছেন লামিনে ইয়ামাল। বার্সেলোনার এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ফিফপ্রোর একাদশে জায়গা পাওয়া সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড়। বয়স মাত্র ১৮। এর আগে সবচেয়ে কম বয়সী ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে—২০১৮ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে যিনি জায়গা পেয়েছিলেন ফিফপ্রোর একাদশে।

২৬ জনের প্রাথমিক তালিকার মতো চূড়ান্ত একাদশেও চোখে পড়ে পিএসজির আধিপত্য। ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নদের মধ্য থেকে পাঁচজন জায়গা পেয়েছেন একাদশে। তাঁরা হলেন—জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা (যিনি গত মৌসুম শেষে পিএসজি ছেড়ে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিয়েছেন), আশরাফ হাকিমি, নুনো মেন্দেস, ভিতিনিয়া এবং উসমান দেম্বেলে।

আরও পড়ুনফিফপ্রোর সেরা একাদশের জন্য নির্বাচিত ২৬ জনে কারা আছেন২৮ অক্টোবর ২০২৫

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা থেকেও জায়গা পেয়েছেন দুজন করে খেলোয়াড়। রিয়াল থেকে জুড বেলিংহাম ও কিলিয়ান এমবাপ্পে, আর বার্সা থেকে লামিনে ইয়ামাল ও পেদ্রি। লিভারপুল থেকে একজন—ভার্জিল ফন ডাইক। চেলসি থেকে জায়গা পেয়েছেন কোল পালমার।

ফিফপ্রোর এই পুরস্কারে সেরা খেলোয়াড়েরা নির্বাচিত হন বিশ্বের পেশাদার ফুটবলারদের ভোটে। এ বছর প্রায় ২০ হাজার খেলোয়াড় ভোট দিয়েছেন। শর্ত ছিল—খেলোয়াড়দের অবশ্যই ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩ আগস্টের মধ্যে অন্তত ৩০টি অফিশিয়াল ম্যাচ খেলতে হবে।

এরপর ভোটের ভিত্তিতে গঠিত হয় চূড়ান্ত একাদশ—একজন গোলরক্ষক, তিনজন ডিফেন্ডার, তিনজন মিডফিল্ডার, তিনজন ফরোয়ার্ড এবং সর্বাধিক ভোট পাওয়া আরেকজন খেলোয়াড়, যিনি হতে পারেন যেকোনো পজিশনের।

ফিফপ্রোর সেরা একাদশ ২০২৫

গোলরক্ষক: জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা (পিএসজি/ম্যানচেস্টার সিটি, ইতালি)
ডিফেন্ডার: ভার্জিল ফন ডাইক (লিভারপুল, নেদারল্যান্ডস), আশরাফ হাকিমি (পিএসজি, মরক্কো), নুনো মেন্দেস (পিএসজি, পর্তুগাল)

মিডফিল্ডার: জুড বেলিংহাম (রিয়াল মাদ্রিদ, ইংল্যান্ড), কোল পালমার (চেলসি, ইংল্যান্ড), পেদ্রি (বার্সেলোনা, স্পেন), ভিতিনিয়া (পিএসজি, পর্তুগাল)

ফরোয়ার্ড: উসমান দেম্বেলে (পিএসজি, ফ্রান্স), কিলিয়ান এমবাপ্পে (রিয়াল মাদ্রিদ, ফ্রান্স), লামিনে ইয়ামাল (বার্সেলোনা, স্পেন)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউ ইয়র্ক-এর ফাস্ট লেডি ‘রামা দুয়াজি’
  • রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো
  • ডাকসু নেতার প্রবীণ ব্যক্তিকে লাঠি হাতে শাসানো নিয়ে সমালোচনা-বিতর্ক
  • এক কাপ কফি খাও, তারপর লিখতে বসো—মতি ভাই বললেন
  • মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টকে চুমু দেওয়ার চেষ্টা মাতাল ব্যক্তির
  • দিনমজুর বাদশা মিয়াকে আমাদের সাধুবাদ
  • প্রেমিককে সামনে আনলেন জেনিফার
  • ‘কাণ্ডজ্ঞান’ নিয়ে কটাক্ষের শিকার মাধুরী
  • ফিফপ্রোর একাদশ: মেসি–রোনালদোর জায়গা হয়নি, ইয়ামাল সর্বকালের সর্বকনিষ্ঠ