বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে রিটা রহমান বললেন, ‘চাঁদাবাজের পক্ষে কীভাবে কাজ করব’
Published: 5th, November 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (সদর-মহানগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রিটা রহমান। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গত সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে রংপুর–৩ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর নাম ঘোষণা করা হয়। ওই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য রিটা রহমান। এ নিয়ে আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরের রাধাবল্লভে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
রিটা রহমানের অভিযোগ, তাঁর চেয়ে যোগ্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তিনি মেনে নিতেন। কিন্তু শহরের মানুষ যাঁকে ‘চাঁদাবাজ’ হিসেবে চেনেন, তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মনোনয়ন পাওয়া নেতার নাম উল্লেখ করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে রিটা রহমান বলেন, ‘আমি যদি দেখি কোনো চাঁদাবাজ, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এবং যাঁকে শহরের লোকেরা চাঁদাবাজ, দখলদার ও জমির দখলদার কী সব বলে। আমার কাছে বহুত ডকুমেন্টস আছে। এ রকম কাউকে যদি মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে আমি তাঁর পক্ষে কীভাবে কাজ করব?’ তিনি বলেন, ‘আমি হতভম্ব হয়েছি। আমার চেয়ে শিক্ষিত ও যোগ্য প্রার্থী দিলে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু এমন একজন দলের প্রার্থী হলেন, যিনি নির্বাচনে একবার অংশগ্রহণ করেছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়; কিন্তু জামানত ছিল না।’
বিএনপি প্রতিষ্ঠায় বাবার অবদানের কথা উল্লেখ করে রিটা রহমান বলেন, তাঁর বাবা মশিউর রহমান যাদু মিয়া বিএনপির সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বিএনপির একজন প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর বাবার যে অবদান রয়েছে, এ ক্ষেত্রে তাঁর চেয়ে যোগ্য কাউকে মনোনয়ন না দিলে এটা অন্যায় হবে। রংপুর-৩ আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করেন তিনি।
এর আগে দুপুরে রিটা রহমানকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মীরা। নগরের টাউন হল চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে পুলিশ লাইনস, সুরভী উদ্যান মোড় প্রদক্ষিণ শেষে টাউন হল চত্বরে এসে শেষ হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অস্কার মনোনীত অভিনেত্রী ডায়ান মারা গেছেন
তিনবারের অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত দাপুটে হলিউড অভিনেত্রী ডায়ান ল্যাড মারা গেছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ওজাইয়ের নিজ বাড়ি শেষ নিঃশ্বাস ত্যঅগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। চলচ্চিত্র বিষয়ক ম্যাগাজিন ভ্যারাইটিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রীর কন্যা লরা ডার্ন।
‘ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট’খ্যাত অভিনেত্রী ডায়ানার কন্যা লরা ডার্ন মায়ের মৃত্যুর খবর জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে লরা বলেন, “আমার অসাধারণ হিরো এবং জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার, আমার মা ডায়ান ল্যাড মারা গেছেন। ওজাইয়ের বাড়িতে আজ সকালে আমার পাশে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।”
আরো পড়ুন:
হলিউডে সৃজিতের নয়া মিশন
শতবর্ষে নিভে গেল অভিনেত্রীর জীবনপ্রদীপ
“তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ কন্যা, মা, দাদি, অভিনেত্রী, শিল্পী এবং সহানুভূতিশীল আত্মা—যেমনটা শুধু স্বপ্নেই কল্পনা করা যায়। আমরা ভাগ্যবান যে, তাকে পেয়েছিলাম। এখন তিনি স্বর্গদূতদের সঙ্গে উড়ছেন।” বলেন লরা।
১৯৬০ সালে মার্কিন অভিনেতা ব্রুস ডার্নের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ডায়ান। এ সংসারে জন্ম নেয় লরা ডার্ন। যদিও ডায়ানের প্রথম সংসার ভেঙে যায়। প্রাক্তন স্ত্রীকে নিয়ে ব্রুস একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেন, “ডায়ান ছিলেন অসাধারণ একজন অভিনেত্রী। আমি তাকে ‘লুকানো রত্ন’ মনে করি। ডেভিড লিঞ্চ যখন তাকে ‘ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট’ সিনেমায় লরার মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন, তখনই দুনিয়া তার প্রতিভার প্রকৃত স্বরূপ চিনতে পারেন। বহু বছর ধরে ডায়ান স্ক্রিন অ্যাক্টর গিল্ডের সদস্য হিসেবে অভিনেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন, যা ছিল অমূল্য অবদান। ভালো একটি জীবন কাটিয়েছেন ডায়ান।”
“সহঅভিনেত্রী হিসেবে ডায়ান ছিলেন অসাধারণ। হাস্যরসিক, বুদ্ধিমতী, দয়ালু মানুষ ছিলেন ডায়ান। কিন্তু আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—আমাদের অসাধারণ কন্যার জন্য মহান একজন মা ছিলেন ডায়ান। এর জন্য আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।” বলেন ব্রুস।
১৯৩৫ সালের ২৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন ডায়ান। মঞ্চ ও টিভি নাটক দিয়ে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন এই অভিনেত্রী। ল্যাড মার্টিন স্করসেজি নির্মিত ‘অ্যালিস ডাজনট লাইভ হিয়ার এনিমোর’ সিনেমা ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায়। এ সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতি কুড়ান তিনি। কেবল তাই নয় এ সিনেমার জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে অস্কার মনোনয়ন লাভ করেন ডায়ান।
পরবর্তীতে ‘চায়নাটাউন’, ‘প্রাইমারি কালার্স’, ‘ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট’, ‘র্যাম্বলিং রোজ’-সহ অসংখ্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ডায়ান। ডেভিড লিঞ্চ নির্মিত ‘ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট’ সিনেমা ১৯৯০ সালে মুক্তি পায়। এতে খলনায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন ডায়ান। ‘ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট’ ও ‘র্যাম্বলিং রোজ’ সিনেমার জন্য দুইবার অস্কার মনোনয়ন পান এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত