প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল, স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযুক্ত হিসেবে নাম আসা খেলোয়াড়–কর্মকর্তাদের এবারের বিপিএলের বাইরে রাখা হবে। গভর্নিং কাউন্সিল দলগুলোকে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেবে, কাকে কাকে দলে নেওয়া যাবে না। তবে কাল জানা গেল, সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে গভর্নিং কাউন্সিল।

পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অভিযুক্ত কোচ–কর্মকর্তারাই শুধু এবারের বিপিএলে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন না। কিন্তু অভিযুক্ত খেলোয়াড়েরা থাকবেন ড্রাফটে, পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে খেলতেও পারবেন। কেন এই সিদ্ধান্ত বদল, জানতে চাইলে গভর্নিং কাউন্সিলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা কাল বলেন, ‘আমরা চাইলেই এটা করতে পারছি না। কারণ, অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি। তাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আরও তদন্ত প্রয়োজন, সেটি চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত এই ক্রিকেটাররা খেলতে পারবে।’

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে বিপিএল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

জলবায়ুর ক্ষয়ক্ষতির উপাত্ত যেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য হয়

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতে বাংলাদেশে যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, সেটার উপাত্তগুলো যেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য হয়। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সামনের সারিতে থাকলেও এ উপাত্তগুলোকে জলবায়ুর পরিবর্তনের অভিঘাতের সঙ্গে সম্পর্কিত করতে হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে নানামুখী ক্ষয়ক্ষতির পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন এবং সেগুলো সংরক্ষণ করে যেতে হবে।

আজ বুধবার রাজধানীতে অক্সফাম আয়োজিত ‘ফ্রম গ্রাউন্ড টু গ্লোবাল: দ্য লস অ্যান্ড ড্যামেজ ড্যাশবোর্ড ফর ক্লাইমেট ইকুইটি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে যে প্রাণহানি, জীববৈচিত্র্যের ধ্বংস ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বিলুপ্তিকে লস (অ-আর্থিক ক্ষতি) বলা হয়। আর জলবায়ুর অভিঘাতে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরবাড়ি, অবকাঠামো, ফসলের ক্ষয়ক্ষতিকে ড্যামেজ (আর্থিক ক্ষতি) হিসেবে গণ্য করা হয়।

২০১৩ সালে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সম্মেলনে লস অ্যান্ড ড্যামেজ প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়। ২০২২ সালে মিসরে অনুষ্ঠিত কপ-২৭–এ লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে একটি ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সে ফান্ডে প্রাথমিকভাবে উন্নত বিশ্বের চারটি দেশ ৪০ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিজ্ঞানভিত্তিক উপাত্ত সংগ্রহে অক্সফাম একটি উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে ব্যক্তি পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত যে কেউ ক্ষয়ক্ষতির উপাত্ত দিতে পারবে।

প্রমাণ তৈরিতে উপাত্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এখানে একেক সংস্থা একেকভাবে উপাত্ত তৈরি করে। লস অ্যান্ড ড্যামেজের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে আমাদের মানদণ্ড সাযুজ্যপূর্ণ হচ্ছে কি না, সেটা দেখতে হবেরউফা খানম, সহকারী পরিচালক, সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস বলেন, বাংলাদেশসহ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করছে। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে পাঁচটি বড় বন্যাসহ ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন; দেশের ৩০ শতাংশ ভূমি প্লাবিত হয়েছে।

সুইডিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং অ-অর্থনৈতিক ক্ষতিও ভয়াবহ—যেমন প্রাণহানি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিলুপ্তি এবং পূর্বপুরুষের ভূমি ছেড়ে যেতে বাধ্য হওয়ার মানসিক আঘাত। এসব ক্ষয়ক্ষতির নানামুখী দিক পর্যবেক্ষণে রাখা, মূল্যায়ন করা এবং সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতির ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে উদ্ভাবিত ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ড্যাশবোর্ড’কে সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন নিকোলাস উইকস। এই ড্যাশবোর্ড ক্ষয়ক্ষতির একটি দালিলিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে জানান তিনি।

নিকোলাস উইকস জানান, সুইডেন ২০২৪ সালে রেকর্ড পরিমাণ ১২০ কোটি ডলার জলবায়ু সহায়তা দিয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া দেশটি গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের সহসভাপতি হিসেবে জলবায়ু অর্থায়নের দক্ষতা ও ফলপ্রসূতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। গত বছর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনে সুইডেন জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার জন্য গঠিত বৈশ্বিক তহবিলে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার অনুদান দেয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) সদস্যসচিব শরীফ জামিল বলেন, আর্থিক ও অ-আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব একই পদ্ধতিতে করলে হবে না। দুটোর ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করতে হবে দুটি ভিন্ন পদ্ধতিতে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিজ্ঞানভিত্তিক উপাত্ত সংগ্রহে অক্সফাম একটি উদ্যোগ নিয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ