রাজশাহী নগরের পদ্মা নদীর দরগাপাড়া থেকে পাঠানপাড়া লালন শাহ মুক্তমঞ্চ পর্যন্ত এলাকায় গরু বেঁধে রাখার কারণে সৌন্দর্য হারাচ্ছে পদ্মাপার। একসময় এই এলাকায় সিটি করপোরেশন পায়ে হাঁটার জন্য ফুটপাত তৈরি করেছিল। এটিকে অনেকটা পার্কের মতো করে সাজিয়েছিল, যেখানে বিকেলে শিশুরা খেলাধুলা করত। তবে তিন মাস ধরে এই এলাকায় স্থানীয় মানুষেরা গরু লালন-পালন করায় ভ্রমণপিপাসু এবং প্রাতর্ভ্রমণকারীরা আপত্তি তুলেছেন।

সকালে অনেকেই ওই এলাকায় হাঁটাহাঁটি করেন আর বিকেলে ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমান। তাঁরা গরু বাঁধা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, গরুর গোবর এবং দুর্গন্ধের কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত জুলাইয়ের শেষ দিকে পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে চরগুলো ডুবে যায়। তখন থেকেই তাঁরা চরে থাকা গরুগুলো শহর রক্ষা বাঁধের নিচে নিয়ে এসেছেন। পানি কমে গেলে তাঁরা আবারও গরুগুলো চরে ফিরিয়ে নেবেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এবং আজ বুধবার সকালে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দরগাপাড়া থেকে লালন মুক্তমঞ্চের পশ্চিম দিকে শহর রক্ষা বাঁধের নিচে দক্ষিণ পাশে অন্তত ১০০ গরু বাঁধা আছে। গরুগুলোর থাকা, চরা এবং খাওয়ানো সবই ওই জায়গাতেই হচ্ছে। দিনের বেলায় বাঁধের নিচে খোলা জায়গায় গরু চরানো হচ্ছে। এর মাঝ দিয়েই হেঁটে চলাচল করেন মানুষ। অনেক সময় ফুটপাতের ওপর গোবরও পড়ে থাকে, যা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলী হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছয়-সাত মাস আগেও জায়গাটা ভালো ছিল। এখন গরু বেঁধে জায়গাটা নষ্ট করে ফেলেছে। শহরের বাইরে থেকে কেউ এলে এখানে ঘুরতে আসেন। তাঁরা শহর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা নিয়ে যাবেন। এগুলো প্রশাসনের দেখা দরকার।

আজ সকালে কয়েকজন নারী গরুগুলোকে খাওয়াচ্ছিলেন এবং গোসল করাচ্ছিলেন। তাঁরা জানান, তাঁদের বাড়ি শহর রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে উত্তর দিকে এবং বাড়িতে গরু রাখার জায়গা নেই। পদ্মায় পানি বেড়ে যাওয়ায় গরুগুলো এখানে রাখা হয়েছে। পানি কমে গেলে আবার চরে চলে যাবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নারী নদী দেখিয়ে বলেন, ‘ওই যে দেখা যায় ভাঙা গোয়ালঘর। ওইগুলো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পদ্মার পানি কমে গেলে ওখানে চলে যাব।’ ওই নারী দাবি করেন, এখানে গরু রাখা হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা হচ্ছে এবং কোনো দুর্গন্ধ রাখা হয় না।

সকালে এই এলাকার ফুটপাত ধরে হাঁটতে গিয়ে কয়েকজন অস্বস্তি প্রকাশ করেন। হায়াত আলী নামের একজন বলেন, ‘আমরা অনেক মানুষ সকালে হাঁটাহাঁটি করি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে গরু বেঁধে রাখা হয়েছে। বন্যার কারণে এখানে রাখা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা (স্থানীয় বাসিন্দারা)। কিন্তু এখন তো পানি কমে গেছে। জায়গাটার একটা সৌন্দর্য আছে, সেটা তো নষ্ট হচ্ছে।’

বিষয়টি নজরে আনা হলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মো.

রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সেখানে অসংখ্যবার মাইকিং করেছি। অভিযান চালিয়েছি, কিন্তু তাঁরা সরছেন না। আমরা ওই এলাকায় আরও শক্ত পদক্ষেপ নেব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য় শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

দোকানে ঢুকে র‍্যাকুনের কাণ্ড

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি মদের দোকান। গভীর রাতে হঠাৎ এক অনুপ্রবেশকারী সেখানে ঢুকে পড়ে। স্কচ ও হুইস্কির বোতল রাখা তাকের ওপর আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে ওপরের একটি আলগা টাইলস ধসে পড়ে। এতে বোতলগুলো নিচে পড়ে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। গোটা মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ে মদ।

সন্দেহভাজনকে দেখে মনে হচ্ছিল, সে অস্বাভাবিক আচরণ করছে। শেষমেশ নিশ্চিত হওয়া যায় তার পরিচয়। সেই অনুপ্রবেশকারী কোনো মানুষ নয়। একটি র‍্যাকুন। মেঝেতে ছড়িয়ে পড়া স্কচ ও হুইস্কি খেয়ে প্রাণীটি মাতাল হয়ে যায়। পরে শৌচাগার থেকে অচেতন অবস্থায় সেটিকে উদ্ধার করা হয়।

গত শনিবার সকালে ভার্জিনিয়ার অ্যাশল্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মদের দোকানের একজন কর্মচারী র‍্যাকুনটিকে শৌচাগারের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয় বন্য প্রাণী বিভাগের কর্মকর্তারা এসে সেটিকে উদ্ধার করেন।

স্থানীয় বন্য প্রাণী নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সামান্থা মার্টিন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে র‍্যাকুন অনেক পছন্দ করি। ছোট্ট প্রাণীটি বেশ মজার। সে ছাদের একটি টাইলসের ফাঁক দিয়ে ঢুকে গোটা দোকানের একটি অংশে তাণ্ডব চালিয়েছে। এরপর সামনে যা পেয়েছে, পান করেছে।’

মার্টিন বলেন, তিনি পরে র‍্যাকুনটিকে প্রাণীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যান। পুরো সময়টাতে তিনি হাসি থামাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘মনে হয় একজন বন্য প্রাণী নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার জীবনের একটা অসাধারণ দিন ছিল এটা।’

ভার্জিনিয়ার হ্যানোভার কাউন্টির ‘অ্যানিমেল প্রটেকশন অ্যান্ড শেল্টার’ দারুণভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য মার্টিনের প্রশংসা করেছে। র‍্যাকুনটি এখন পুরোপুরি সুস্থ বলে জানিয়েছে তারা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘কয়েক ঘণ্টা ঘুমানোর পর এবং কোনো আঘাতের চিহ্ন না পাওয়ায় র‍্যাকুনটিকে নিরাপদে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি সে বুঝতে পেরেছে, বাড়িঘর ভেঙে ভেতরে ঢোকা ভালো কিছু নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদক একটা ওয়ানওয়ে জার্নি, এটা দিয়ে ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না: উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন
  • জাবরা গ্রাম থেকে কম্পিউটার অধ্যাপনায় ড. কায়কোবাদ
  • ধামরাইয়ে মোবাইল চুরির অভিযোগে কিশোরকে গাছে বেঁধে মারধর 
  • ধানের শীষের ভোট চেয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন প্রধান শিক্ষক
  • একীভূত ৫ ব্যাংকের গ্রাহকেরা কীভাবে টাকা ফেরত পাবেন
  • দুটি ডিমের খাঁচা উন্মোচন করল ২৪ বছর আগে পাওয়া অজ্ঞাত লাশের রহস্য
  • অধরা খান ‘ঋতুকামিনী’র অপেক্ষায়!
  • মাগুরায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে ভূমি ও রেজিস্ট্রি অফিসে আগুন
  • রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে ১৪ জন গ্রেপ্তার
  • দোকানে ঢুকে র‍্যাকুনের কাণ্ড