চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পাঁচ নেতা–কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ তিনজন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক (বিলুপ্ত কমিটি) গোলাম আকবরের অনুসারী। বাকি দুজন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী।

গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন রাউজান উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ, বাগোয়ান ইউনিয়ন কৃষক দলের সহসভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল, বাগোয়ান ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী, বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি রবিউল হোসেন ও স্থানীয় বিএনপির কর্মী মোহাম্মদ সোহেল।

আরও পড়ুনরাউজানে একের পর এক খুন, ধরা পড়ছে না অস্ত্রধারীরা২৭ অক্টোবর ২০২৫

পুলিশ জানায়, এ ঘটনার পর ওই গ্রামের বাসিন্দারা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক হননি।

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি সাবের সুলতান প্রথম আলোকে দাবি করেন, এ ঘটনায় তাঁদেরও দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

জানতে চাইলে রাউজান রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মুহাম্মদ বেলায়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় বিএনপির রাজনীতির দুই পক্ষ আলাদা অবস্থানে থাকলেও গোলাগুলির ঘটনাটি এলাকার আধিপাত্য নিয়ে হতে পারে। ঘটনায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি।

আরও পড়ুন২০০ মিটার দূরত্বে পুলিশ ফাঁড়ি, গাড়ি ঘিরে ছোড়া হয় মুহুর্মুহু গুলি০৮ অক্টোবর ২০২৫

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেই চলেছে। গত এক বছরে এই উপজেলায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। কখনো প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে, কখনো ছুরিকাঘাত বা পিটিয়ে এসব খুন করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অস্ত্রধারী কিংবা মূল আসামিরা ধরা পড়েনি। এমনকি ঘটনায় ব্যবহৃত কোনো অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সহিংসতায় এ উপজেলায় মোট ১৭টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১২টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর যুবদলের কর্মী মুহাম্মদ আলমগীর আলমকে গুলি করে খুন করা হয়। এর আগে ৭ অক্টোবর খুন হন বিএনপির কর্মী মুহাম্মদ আবদুল হাকিম (৫২)। রাউজানের খামারবাড়ি থেকে ফেরার পথে হাটহাজারীর মদুনাঘাটে চলন্ত গাড়িতে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা। এ ঘটনায়ও অস্ত্রধারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ ব এনপ র ঘটন য় এ ঘটন র ঘটন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সঙ্গে বৈঠক করেছে। এতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অবহিত হওয়ার চেষ্টা করে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।

পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিএমইএর নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা, রশিদ আহমেদ হোসাইনী প্রমুখ। অন্যদিকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কিয়াও চেন, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রুইফেং ঝাং ও অর্থনীতিবিদ আয়া সাইদ।

উভয় পক্ষের আলোচনায় পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রভাব, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজিত পণ্য বৈচিত্র্যকরণের কৌশল গুরুত্ব পায়। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব, ব্যবসায়ের পরিচালন ব্যয় কমানো ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য করণীয় বিষয়েও আলোচনা হয়।

আইএমএফের প্রতিনিধিদের কাছে জাতীয় অর্থনীতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের অবদানসহ শিল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিজিএমইএর নেতারা। তাঁরা শিল্পের কৌশলগত রূপকল্প তুলে ধরে জানান, পোশাকশিল্প বর্তমানে শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে কৃত্রিম তন্তু ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলভিত্তিক পোশাক তৈরির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

বিজিএমইএ নেতারা জানান, তাঁদের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার উন্নয়ন, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্কসুবিধা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ), যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সই করার বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ
  • পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিজিএমইএ-আইএমএফ বৈঠক
  • রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়ায় আটক ৬
  • ভোট ছাড়া সমঝোতায় জুয়েলার্স সমিতির নতুন পর্ষদ, সভাপতি এনামুল হক খান
  • ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫, এলাকায় উত্তেজনা