জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব ঘোচাতে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে ৯টি রাজনৈতিক দল। এ উদ্যোগে গণতন্ত্র মঞ্চের ছয়টি দলের সঙ্গে আছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) ও গণ অধিকার পরিষদ। আজ বুধবার দুপুরে এসব দলের নেতারা সংকট সমাধানে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন।

গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয় দল হলো গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জেএসডি ও ভাসানী জনশক্তি পার্টি। এর সঙ্গে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতারা আজ দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেছেন। আলোচনার পর বিভিন্ন দলের নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন।

গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয় দলের পক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম। তিনি বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিতে বলেছে। কোন পথে বিষয়টার সমাধান করা যায়, তা নিয়ে মতবিনিময়ের জন্য আজকে আমরা বসেছি। কিছু বিষয়ে আমরা কাছাকাছিও এসেছি। অন্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলা অব্যাহত রাখব। সংস্কার বাস্তবায়ন প্রশ্নে কাছাকাছি আসার চেষ্টা করব।’ আজকের আলোচনায় অগ্রগতি আছে বলে উল্লেখ করলেও তা এখনই বলতে চাননি হাসনাত কাইয়ূম।

আলোচনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা কেন এখনই খোলামেলা বলা হচ্ছে না—এর ব্যাখ্যা দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, একেক দল একেক ফর্মুলা প্রস্তাব করে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছে। এখন আমরা একটা ফর্মুলা বললে অহেতুক বিতর্ক তৈরি হবে, যেটা আমরা এড়াতে চাই। সংস্কার নিয়ে সংকট সমাধানে আমরা অন্য দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। তবে সরকার চাইলেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে। কারও সঙ্গে তাদের কথা বলা দরকার হলে বলতে পারবে। আমরা কোনো উদ্যোগ না নিলে জনগণ বলত, আপনারা কিছু করলেন না। আশা করছি, ইনশা আল্লাহ একটা সুষ্ঠু সমাধান হবে। এটা করতেই হবে।’

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এনসিপি সব সময় আলোচনার পক্ষপাতী। সবার সঙ্গে মিলে যেকোনো সংকট দূরীভূত করতে আজকে এ আলোচনা। অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে। সংস্কার নিয়ে সংকট যেন সুষ্ঠুভাবে সমাধান হয়, এ ব্যাপারে সরকারকে সাহসী ভূমিকা নিতে হবে।

বিএনপি, জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন দলের সঙ্গে ৯ দল আলোচনায় বসবে বলে জানান গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্যে এসে আমরা নির্বাচনের দিকে যেতে পারব বলে আশা করি।’

৯ দলের আজকের আলোচনায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, মুখপাত্র ফারুক হাসান, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া প্রমুখ অংশ নেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দলগ ল র এনস প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।

তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে: নজরুল ইসলাম খান
  • নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়া, জনতাকে ‘শাস্তি’ ও গণতন্ত্র নিয়ে কয়েকটি কৌতুক
  • দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের জন্য বিএনপিকে দায়ী করলেন আখতার হোসেন
  • সরকারের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে
  • ভারতের ১ শতাংশ ধনকুবেরের সম্পত্তি ৬২ শতাংশ বেড়েছে
  • ভারতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব কি পৈতৃক সম্পত্তি
  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান