শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলীসহ (৬১) চারজনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে এ রিমান্ড বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। 

হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের একটি মামলায় আজ এ রিমান্ড আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ। রিমান্ড চাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ (৫৩), এম এ এস শরিফ (২৫) ও মো.

আরাফাত ইবনে মাসুদ (৪৩)। 

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে এবং তাদেরকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করত। সুব্রত বাইন তৎকালীন খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করেন। আসামিরা বিভিন্ন মামলায় সাজা ভোগ করা অবস্থায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ গ্রেপ্তার হন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, আসামি এস এম শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত মিটিং করেন এবং সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি, অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রয়েছে। পরে হাতিরঝিল থানাধীন নতুন রাস্তা এলাকা থেকে একইদিন বিকেলে এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের এ মামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আরও অনেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার এবং আরও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জামিনে মুক্তি পেলে চিরতরে পালাতে পারেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের ১০ দশ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন তিন বছর ধরে আয়নাঘরে ছিলেন, দাবি আইনজীবীর

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, ২০২২ সালের পর থেকে সুব্রত বাইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন। ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে নারায়ণগঞ্জের ভূলতায় ফেলে চলে যান।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ বুধবার বিকেলে সুব্রত বাইনের রিমান্ড শুনানিতে এসব কথা বলেন তাঁর আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া।

আইনজীবী বাদল মিয়া আরও বলেন, সুব্রত বাইনকে গত বছরের ৫ আগস্ট ভূলতায় ফেলে যাওয়ার পর তাঁর মক্কেল ভয় পেয়ে যান। তিন বছর ধরে আয়নাঘরে নির্যাতিত হওয়ার তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলন করার কথাও ভেবেছিলেন; কিন্তু জীবন বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত সুব্রত বাইন ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

সুব্রত বাইনকে ২০২২ সালে ভারত সরকার বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল বলে আদালতে দাবি করেন তাঁর এই আইনজীবী।

২০০১ সালে তৎকালীন সরকার ২৩ জনকে শীর্ষ সন্ত্রাসী উল্লেখ করে একটি তালিকা প্রকাশ করে ছিল। সেই তালিকায় সুব্রত বাইনের নাম ছিল।

সুব্রত বাইনে ‘মিডিয়ার সৃষ্টি’ দাবি করে আদালতে আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া বলেন, তাঁর মক্কেল নিরপরাধ। তিনি অসুস্থ।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং ১টি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত সুব্রত বাইনকে আট দিন এবং আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদসহ তিনজনকে ছয় দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন মোল্লা মাসুদের সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফ।

এর আগে সুব্রত বাইনসহ চারজনকে কড়া পুলিশ পাহারায় বিকেল সাড়ে তিনটার পর হাজতখানা থেকে আদালত কক্ষে তোলা হয়। কাঠগড়ায় তোলার পর সুব্রত বাইনসহ অন্যদের পরানো হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের দেখার পর সুব্রত বাইন বলতে থাকেন, সংবাদকর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে মনগড়া কাহিনি লিখে যাচ্ছেন বহু বছর ধরে। তিনি এর কোনো প্রতিবাদ করেননি। বাস্তব কাহিনি সাংবাদিকেরা জানেন না বলেও দাবি করেন সুব্রত বাইন।

মোল্লা মাসুদেরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন তিন বছর ধরে আয়নাঘরে ছিলেন, দাবি আইনজীবীর