‘বাংলাদেশের জিডিপি ভারতের চেয়ে ভালো, কেন বাংলাদেশিরা ভারতে আসবে’
Published: 31st, July 2025 GMT
বাংলাদেশের জিডিপি ভারতের চেয়ে ভালো, কেন বাংলাদেশিরা ভারতে আসবে? বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে সর্বভারতীয় গণমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
মহুয়া বলেন, “বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনাই ঘটে না। কারণ জিডিপিসহ পরিকাঠামোগত দিক থেকে ভারতের তুলনায় অনেকাংশেই ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশিদের এখন ভারতে আসার কোনো প্রয়োজন পড়ে না।” বিজেপির মোদি-শাহের উদ্দেশ্যে তার পরামর্শ, “আপনারা( মোদি-শাহ) আপনাদের এই ভ্রান্ত ধারণা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুল।”
মঙ্গলবার(২৯ জুলাই) একটি ভিডিও সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ভারতের একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি গণমাধ্যমে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে, অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন করেছেন এক নারী সঞ্চালক। সেই প্রশ্নের বিরোধীতা করে মহুয়া বলেছেন, “কোথায় ব্যাপক হারে অনুপ্রবেশের সমস্যা রয়েছে? কোথায়? কারা ভারতে থাকতে চায়? কারা? আমার সংসদীয় এলাকা হলো বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী। আপনি কি বলতে পারেন কারা এখন ভারতে থাকতে চায়? বাংলাদেশি?”
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের কাছে আবারো ইলিশের জন্য অনুরোধ করেছে ভারত
সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
এরপরই মহুয়া বলেছেন, “আমার সংসদীয় এলাকা নদীয়ার জেলার কৃষ্ণনগর আসন। নদীয়া অপর প্রান্তে কুষ্টিয়া। সেখানে জিডিপি, স্বাস্থ্য সূচকসহ অনেক কিছুর ভারতের নিরিখে বাংলাদেশে ভালো। দয়া করে নরেন্দ্র মোদিজি এবং অমিত শাহজিকে- এই ভাবনা ঝেড়ে ফেলতে বলুন যে, গোটা পৃথিবীর মানুষ ভারতে আসতে চায় এবং এদেশে এসে বসবাস করতে চায়।”
তৃণমূলের সাংসদের দাবি, “গত তিন বছরে প্রায় ১১ লাখ ভারতীয়, যারা ভারতে থাকতেন, ভারতকে ট্যাক্স দিতেন, তারা এখন ভারত ছেড়ে চলে গেছেন। ভারতকে কেউই এখন আর মধু আর ক্রিমের দেশ হিসেবে দেখতে চায় না। আর এখানে এসে তারা (বাংলাদেশি) বসতি স্থাপন করবেন? দয়া করে এগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। ঠিক আছে? আজ ভারত থেকেই অভিবাসীরা অন্য দেশে পালিয়ে যাচ্ছেন। আজ তারা দুবাই, পর্তুগাল, ইউরোপীয় দেশগুলোতে সোনালী পাসপোর্টের জন্য ১০ লাখ ডলার খরচ করছেন।”
এরপরই নারী সঞ্চালক যখন বলেন যে, দরিদ্র বাংলাদেশিরা বৈধভাবে অভিবাসন বা গোল্ডেন ভিসার জন্য এই বিপুল অর্থ প্রদানের বিলাসিতা বহন করতে পারে না। জবাবে মহুয়া বলেছেন, “এক মিনিট। এক সেকেন্ড। আমি ভারতীয়দের কথা বলছি যারা অর্থ প্রদান করেন। কিন্তু দয়া করে আপনার মাথা থেকে এই বিষয়টি ঝেড়ে ফেলুন যে, বাংলাদেশিরা ভারতে এসে বসবাস করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যদি আপনার (কেন্দ্রীয় সরকার) সিএএ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন) এত দুর্দান্ত বিষয় হয়ে থাকে তবে তো আপনি সবাইকে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে কেন কেউ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে না? এখনো পর্যন্ত সিএএ-র মাধ্যমে দু হাজার মানুষও, ভারতীয় নাগরিকত্বের আবেদন করেনি।”
মোদি সরকারের উদ্দেশ্যে মহুয়া বলেছেন, আপনারা (কেন্দ্রীয় সরকার) সিএএ করেছেন। আপনারা বলছেন, বাংলাদেশি হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেব। সিএএ এখন আইনে বাস্তবায়িত হয়ে গেছে। তাহলে বাংলাদেশি হিন্দুদের কেন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে হবে? তারা ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবেন এবং অমিত শাহ তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেবেন।
মহুয়া ক্ষোভের স্বরে বলেছেন, তাহলে কারা, কোন মানুষগুলোকে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে, কারা ভারতে আসতে চাইছেন? তাছাড়া সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আপনার(কেন্দ্র) অধীনে, কেন আপনি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাজেটে আপনি দুই লাখ কোটি রুপি খরচ করেছেন? সেই দুই লাখ কোটি রুপি কোথায় গেল? সীমান্তে নিরাপত্তা কেন বাড়ছে না? আরো বিএসএফ মোতায়েন করুন, আরো আলো বসাও। আরো প্রযুক্তি আনুন। যদি একজনও আসে তারা কীভাবে আসছে?
সম্প্রতি ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোয় বাংলা ভাষাভাষীদের উপরে সন্ত্রাস চলছে, এমন অভিযোগ তুলে বারেবারে সরব হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অপরদিকে বিজেপির দাবি, ভারতীয় নয়, অবৈধ বাংলাদেশি রুখতে কঠোর হয়েছে প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সদস্য মহুয়ার এমন দাবি রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ন কর ছ ন আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাক্ষাৎ
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের
সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সভাপতি মাসউদুল হক জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিবালয় বিটে কর্মরত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পত্র পাঠানো হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি।
তিনি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের পাশাপাশি ৫ নম্বর গেট দিয়েও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বিএসআরএফের সভাপতির প্রস্তাব আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।
সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন পিন্নু, সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী