মালেগাঁওয়ে কবরস্থানে বিস্ফোরণ মামলায় বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞাসহ সবাই খালাস
Published: 31st, July 2025 GMT
ভারতের মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে ১৭ বছর আগে বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত সাতজনকেই বেকসুর খালাস দিলেন এনআইএর বিশেষ আদালত। ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে লোকসভায় নির্বাচিত বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রজ্ঞা।
আজ বৃহস্পতিবার এনআইএর বিশেষ আদালতের বিচারক এ কে লাহোটি তাঁর রায়ে বলেন, শুধু সন্দেহের বশে মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে, তা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বাইকটিও যে সাবেক সংসদ সদস্যের, তা প্রমাণ করা যায়নি।
এ মামলায় মোট ৩২৩ জন সাক্ষীর বয়ান খতিয়ে দেখে বিচারপতি লাহোটি বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনাটি ভয়াবহ, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু নিতান্তই সন্দেহের বশে ও নৈতিকতার যুক্তিতে কাউকে দোষী ঠাওর করা যায় না।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক জেলার মালেগাঁও শহরে ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে এক বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়, আহত হয়েছিলেন শতাধিক। শহরের মসজিদ লাগোয়া এক কবরস্থানে এক বাইকে দুটি বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
অভিযোগ উঠেছিল, পূর্ববর্তী সন্ত্রাসী হামলার পাল্টা হিসেবে মুসলিম–অধ্যুষিত এলাকায় ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। ব্যবহৃত বাইকটির মালিক ছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমন সংস্থার তদন্তে জানা যায়, এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ওই দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত।
ওই মামলার তদন্তের সময় সাধ্বী প্রজ্ঞা ও এক সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে.
তদন্তে জানা গিয়েছিল, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বাইকটি প্রজ্ঞার নামে নিবন্ধন করা ছিল। কিন্তু ফরেনসিক তদন্তে তা প্রমাণ করা যায়নি। তা ছাড়া আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, প্রজ্ঞা ওই ঘটনার দুই বছর আগেই সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। এরপর তদন্তের ভার এনআইএ গ্রহণ করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ করা হয়েছিল। অস্ত্র আইনে মামলাও রুজু হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি লোহাটি জানান, এই মামলায় ইউএপিএ প্রযোজ্য হবে না।
মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনে সাধ্বী প্রজ্ঞাকে ভোপাল থেকে বিজেপি প্রার্থী করে। তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। ভোটে প্রজ্ঞা জিতে যান। ২০২৪ সালের ভোটে অবশ্য বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করেনি।
বেকসুর খালাস পাওয়ার পর ৫৫ বছর বয়সী সাধ্বী প্রজ্ঞা গণমাধ্যমকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর তাঁর ওপর অত্যাচার হয়েছিল। তাঁর জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। বেঁচে রয়েছেন সন্ন্যাসী হয়েছেন বলে। তিনি দাবি করেন, মামলাটি ছিল গেরুয়া অবমাননার। তবে গেরুয়ারই জয় হয়েছে। হিন্দুত্বের জয় হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫