সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের নাখালপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে চেক উদ্ধারের বিষয়টি জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তবে এই চেক কোন প্রতিষ্ঠান দিয়েছে, তা তিনি জানাননি।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ওই সোয়া দুই কোটি টাকার চেক নেওয়া হয়েছে রংপুর-৬ আসনে (পীরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড জোন’ থেকে। ট্রেড জোনের পোশাক কারখানাসহ নানা ব্যবসা রয়েছে।

ট্রেড জোনের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সোয়া দুই কোটি নয়, মোট ৫ কোটি টাকার ১১টি চেক নিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাকসহ ছয়জন। তবে একটি চেকের বিপরীতেও তাঁরা টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। কারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে ট্রেড জোন কর্তৃপক্ষ টাকা রাখেনি। তিনি বলেন, টাকা উত্তোলন করতে না পেরে রাজ্জাকসহ অন্যরা ট্রেড জোনের মালিককে হুমকি দিচ্ছিলেন।

রাজ্জাকসহ অন্যরা কীভাবে চেক নিয়েছিলেন, তা প্রথম আলোকে বিস্তারিত জানিয়েছেন সাইফুল ইসলাম।

শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের কাছ থেকে প্রথম দফায় ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পর দ্বিতীয়বার টাকা নিতে গিয়ে ১৭ জুলাই হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন আবদুর রাজ্জাকসহ পাঁচজন। বাকি চারজন হলেন ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামির এখন রিমান্ড চলছে। ঘটনাটিতে মামলা করেছেন সিদ্দিক আবু জাফর।

ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ছিলেন। আবদুর রাজ্জাক ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। পরে তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য। গ্রেপ্তারের পর সবাইকে বহিষ্কার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় বাদে অন্য সব কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।

চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার আব্দুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ র র জ জ ক র জ জ কসহ সদস য ন ওরফ

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচিত সরকার না হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। সবাই একটা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘রংপুর বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের রাজনৈতিক অধিকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আমীর খসরু এ কথা বলেন।

রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে চেম্বার ভবনে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশ থেকে যারা আসে তারা আমাদের জিজ্ঞেস করে, আপনাদের নির্বাচনটা কবে হবে। সব কথা শোনে, শোনার পর বলে, নির্বাচন কবে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এত বড় কমিটমেন্টে কেউ যাবে না। তাদের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বিনিয়োগ করে। এটা কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়। সুতরাং সবাই বসে আছে হাত গুটিয়ে। সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য।’

‘এক একটা দিন আমরা নষ্ট করছি ও পিছিয়ে যাচ্ছি’—এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছি। এখন সবাইকে শক্তিশালীভাবে বলতে হবে, আমরা নির্বাচিত সরকার চাই, যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধ। এর বাইরে অন্য কোনো সরকারের জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ হলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। যে কারণে কেউ কাজ করছে না। পুলিশ কাজ করছে না, সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না। কোনো জায়গায় কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে না, হবে না।’

নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের মালিকানার প্রতিফলন ঘটাতে যার জন্য গত ১৭ বছর যুদ্ধ করেছি। ‎শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের রাজনীতিতে একটি মানসিক পরিবর্তন এসেছে। এখন আমাদের প্রত্যাশা ও দায়িত্ব বাড়ছে। আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাই, তবে জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করব।’

রংপুরের অর্থনীতি প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘রংপুরের হস্ত ও তাঁতশিল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। কামারের পণ্য রপ্তানিযোগ্য হলেও তা রপ্তানি হচ্ছে না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমাদের লক্ষ্য রংপুরে কলকারখানা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় উদ্যোক্তা তৈরি করা। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে উদ্যোক্তাদের আর্থিক সুবিধা ও কাঁচামাল সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিদেশে সোনার অলংকার রপ্তানি এবং ডায়মন্ড কাটিং সেক্টরেও কাজ করার পরিকল্পনা আছে।’

রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এমদাদুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন হায়দারসহ বিএনপির স্থানীয় নেতা ও ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া সভায় রংপুর অঞ্চলের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন। রংপুরের পিছিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙা করতে করণীয়, শিল্প-বাণিজ্য প্রসার, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ