শেখ হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তাঁর অপরাধ কমবে না: নাহিদ ইসলাম
Published: 30th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তাঁর অপরাধ আসলে কমবে না। বাংলাদেশের মানুষ কখনো ক্ষমা করবে না শেখ হাসিনাকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না আওয়ামী লীগকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না কোনো ধরনের রিফাইন্ড আওয়ামী লীগকে।
আজ বুধবার রাত ১০টার দিকে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়ে এনসিপির মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় হটস্পট ছিল। এদিকে নারায়ণগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, এদিকে সাভার-আশুলিয়া, ওদিকে গাজীপুর, টঙ্গী। আপনারা প্রতিবাদ করেছিলেন বলে ঢাকা সুরক্ষিত ছিল। ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসার সাহস করেছিল। এই সাভার–আশুলিয়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় আমরা জানি, কী নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, গুলি চালানো হয়েছিল, আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিল। আশুলিয়ায় শহীদ সজলকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল নির্মমভাবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা ঠিক এইভাবেই সারা বাংলাদেশে নিপীড়ন চালিয়েছিল।’
ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকে আগামীতে নেতৃত্ব তৈরি হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এ উপজেলাগুলো বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে। আমরা মনে করি, এই পাঁচটি উপজেলায় অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব। শ্রমিক অঞ্চল রয়েছে এই সাভারেও। কিন্তু নানা কারণে শ্রমিকেরা আন্দোলন গড়ে তোলেন। কারণ, শ্রমিকদের ন্যায্যমজুরি দেওয়া হয় না। এই শ্রমিকেরাই আমাদের গণ-অভ্যুত্থানে শক্তি জুগিয়েছিল। রাজপথে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল। আমরা সেই শ্রমিকের ন্যায্যমজুরির জন্য লড়াই করতে চাই। আমরা সাভার-আশুলিয়াসহ পুরো ঢাকা জেলাকে চাঁদামুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সন্ত্রাসমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। দুর্নীতিমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র শেষ দিন ছিল আজ বুধবার। সাভারের বাইপাইল মোড়ে পথসভা করার মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচির সমাপ্তি হলো। ১ জুলাই রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী পদযাত্রা শুরু করেছিল এনসিপি।
বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে ৩০ দিন জুলাই পদযাত্রা করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, আমাদের বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের পদযাত্রায় যে জনস্রোত নেমে এসেছে, সে জনস্রোতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমাদের বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা থেমে যাইনি, এই জনস্রোত থামানো যায়নি, পদযাত্রা থামানো যায়নি। ইনশা আল্লাহ, আগামীর বাংলাদেশে, আগামীর ঢাকায় এনসিপির দিকে এই জনস্রোত থামানো যাবে না।’
পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মেহরাব সিফাত, কেন্দ্রীয় সংগঠক ও ঢাকা জেলার প্রধান সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র ব জনস র ত পদয ত র এনস প র হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “জুলাই সনদ হতে হবে, জুলাই সনদের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। নির্বাচিত যে সরকার আসুক এই সদন বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা থাকবে।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গাজীপুরের রাজবাড়ি সড়কে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র হতেই হবে। এর বিকল্প আমরা দেখতে চাই না। সরকার সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে। জুলাই সনদ শুধু সংস্কার হলে হবে না, এটি কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে ঐক্যমত হতে হবে।”
আরো পড়ুন:
ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, ৫ আগস্টের আগেই অন্তবর্তীকালীন সরকার এবং সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে পারবেন। আমরা সবাই মিলে আকাঙ্ক্ষিত গণঅভ্যুত্থানের একবছর উদযাপন করতে পারব।”
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, কেন্দ্রীয় সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মুহিম, মো. মহসিন উদ্দিন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের সাবেক আহ্বায়ক নাবিল আল ওয়ালিদ।
এনসিপির পথসভাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন মোড়ে ও সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাতে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করা হয়। রাজবাড়ীর সড়কে বন্ধ থাকে সব ধরনের যান চলাচল।
এর আগে, এনপিপির কেন্দ্রীয় নেতরা টাঙ্গাইলের পথসভা শেষে গাজীপুরে কালিয়াকৈরে উপজেলা হয়ে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা যান। সেখানে বিকেলে পথসভা শেষে গাজীপুর শহরের রাজবাড়িতে আসেন তারা।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ