নতুন ঠিকানায় প্রথম ম্যাচেই আলো ছড়ালেন রদ্রিগো ডি পল। ইউরোপীয় ঘরানার ফুটবলের স্বাদ এবার আমেরিকার ঘাসে আনতে এসেছেন আর্জেন্টিনার মিডফিল্ড জেনারেল। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে ধারে আসা এই তারকা প্রথম দিনেই বুঝিয়ে দিলেন, মায়ামির মাঝমাঠ এবার আরও শক্ত হবে।

তবে সব আলো কেড়ে নিলেন সেই চিরচেনা নাম লিওনেল মেসি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে এসেই করলেন জোড়া অ্যাসিস্ট। তার মঞ্চায়িত খেলায় মুগ্ধ হলো পুরো চেজ স্টেডিয়াম।

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে লিগ কাপের উত্তেজনায় যখন মাঠে নামে ইন্টার মায়ামি ও ক্লাব অ্যাটলাস, তখন কেউই ভাবেনি ম্যাচটা এতটা নাটকীয় হবে। প্রথমার্ধে গোল না হলেও দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ খুলে যায় জমজমাট নাটকের বইয়ের মতো।

আরো পড়ুন:

মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়সূচি ঘোষণা

মেসিহীন মায়ামির হতাশা, নাটকীয় ড্রয়ে থমকে গেল স্বপ্নযাত্রা

৬০ মিনিটে সার্জিও বুসকেটস ও মেসির যুগলবন্দিতে বল পেয়ে যান তেলাস্কো সেগোভিয়া। এক ঝলক দক্ষতায় বল পাঠিয়ে দেন জালে। উল্লাসে ফেটে পড়ে মায়ামি। কিন্তু অ্যাটলাসও ছাড়ার পাত্র নয়। ৮০ মিনিটে রিভালদো লোজানো দারুণ এক চেষ্টায় সমতা ফেরান। তখন মনে হচ্ছিল, হয়তো ড্রতেই গড়াবে ম্যাচ।

কিন্তু ইনজুরি টাইমের ষষ্ঠ মিনিটে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষ রক্ষণকে বিভ্রান্ত করে বল বাড়ালেন মেসি। সেই বল থেকে মার্সেলো ভাইগান্ট দুর্দান্ত শটে বল পাঠালেন জালে। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই নিশ্চিত হলো মায়ামির ২-১ গোলের দারুণ এক জয়।

এই জয়ে মায়ামি যেমন পূর্ণ তিন পয়েন্টে উল্লাসে ভাসছে, তেমনি মেসি বুঝিয়ে দিলেন, এখনও তার পায়ে যাদু শেষ হয়নি। আর ডি পলের অভিষেকটা যেন উপহার হয়ে এলো দলের জন্য। বুসকেটস, আলবা ও মেসিকে পাশে পেয়ে ডি পল এখন আরও প্রাণবন্ত। ইউরোপের সেই সমন্বিত পাসিং ফুটবল এবার আমেরিকার মাঠেও দেখতে পাচ্ছে ফুটবলপ্রেমীরা।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ