আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলা পাহাড় ধসের শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। 

বুধবার (১৮ জুন) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ভারী বৃষ্টিপাতের সর্তবার্তায় বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। 

অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন, কক্সবাজার জেলাসমূহের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে ভারী বৃষ্টির কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের অপর এক বার্তায় বলা হয়েছে, দেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় সর্বোচ্চ ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। 

ঢাকা/ইভা 
 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে নরওয়েসহ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন দাবি

২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’ এর সদস্য হিসেবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। আসন্ন এ নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে নরওয়েসহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন দাবি করেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

বুধবার (১৮ জুন) বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে উপদেষ্টা এ দাবি জানান।

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম মেরিটাইম কান্ট্রি। আমাদের একটি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ মোট চারটি সমুদ্র বন্দর রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। এ দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বিভিন্নভাবে নদ-নদী ও মেরিটাইম সেক্টরের ‍উপর নির্ভরশীল। বিদ্যমান তিনটি বৃহৎ সমুদ্র বন্দরের পাশাপাশি মাতারবাড়িতে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে।”

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রশংসা করলেন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত

কুয়েতে ঈদের দিন রাষ্ট্রদূত ও প্রবাসীদের শুভেচ্ছা বিনিময় 

তিনি বলেন, “অন্তত ৫৪টি প্রধান নদীবন্দর রয়েছে। হাজারের উপর নদ-নদী দেশজুড়ে জালের মতো বিস্তৃত। দেশে ১০ হাজার কিলোমিটারের অধিক বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ নৌপথ রয়েছে। দেশের দক্ষিণে বিশাল বঙ্গোপসাগরের অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বকে বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরকে আরো এগিয়ে নিতে এবং মেরিটাইম সেক্টরের বৈশ্বিক পর্যায়ে অবদান রাখতে বাংলাদেশ আইএমও কাউন্সিল নির্বাচনে  প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘোষণা  করেছে।”

উপদেষ্টা বাংলাদেশের সামুদ্রিক ঐতিহ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থান এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান অবদান তুলে ধরে বলেন, “মেরিটাইম সেক্টরে বাংলাদেশের শক্তিশালী অংশগ্রহণ রয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থার (আইএমও) সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টরের বিভিন্ন নীতি-নির্ধারণী বিষয়েও বাংলাদেশের ভূমিকা রয়েছে। প্রতি বছর বাংলাদেশে ৫ হাজারের বেশি জাহাজ, ৯৫টি সমুদ্রগামী ও ২০ হাজারের বেশি উপকূলীয় জাহাজ আসে।”

তিনি টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়নের প্রতি দেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আইএমও’র কার্বনমুক্ত ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের কথা জানান।

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জাহাজ শিল্পে নরওয়ে সরকারকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাহাজ পুনঃব্যবহার খাতে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং ১২০ এর বেশি নারীসহ ২১ হাজার প্রশিক্ষিত নাবিক দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা, নাবিক কল্যাণ ও জেন্ডার অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখছে।”

নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, “দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। জাহাজ নির্মাণ ও পুনঃব্যবহার খাতে নরওয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। নরওয়ের বিভিন্ন কোম্পানিও জাহাজ শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”

এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আইএমও কনভেনশন বাস্তবায়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং সমুদ্র দূষণ রোধে বাংলাদেশের সতর্ক অবস্থানের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পে পরিবেশ সুরক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, “মাতারবাড়ি ও মোংলা গভীর সমুদ্র বন্দরের ডকইয়ার্ড নির্মাণে নরওয়ে কারিগরি সহায়তা ও আর্থিক বিনিয়োগ করতে পারে। নরওয়ে সরকারের মতো বাংলাদেশ সরকারও সমুদ্রে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বন্দরগুলোকে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনতে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে। নরওয়ে সরকার বাংলাদেশের বন্দরগুলোকে গ্রিন পোর্টে রূপান্তরিত করতে সহযোগিতা করবে বলে আশা করছি।”

রাষ্ট্রদূত এসব বিষয়ে বাংলাদেশকে নরওয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, “নরওয়ে সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে। আসন্ন আইএমও নির্বাচনেও বাংলাদেশের প্রার্থীতার পক্ষে নরওয়ে সরকার সমর্থন করবে।” তিনি বাংলাদেশ সরকারকেও এ নির্বাচনে নরওয়ের সমর্থন জানানোর অনুরোধ জানান।

সাক্ষাৎকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ আইএমও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের ‘সি’ ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর হিসেবে ২০২৪-২৫ মেয়াদে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ