সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী সুমিলপাড়া বিহারী ক্যাম্পের কুখ্যাত ও চিহ্নিত মাদক সম্রাট রমজান (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিহারী ক্যাম্পের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।

ধৃত রমজান ওই ক্যাম্পের গুফ ভান্ডারীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, মারামারিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। রমজানের গ্রেফতারে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা কামাল জানান, রমজান একটি মারামারি মামলার প্রধান আসামি এবং দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে, সে তার নিজ বাসায় আত্মগোপন করে আছে।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে বিকেলে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় সে পালানোর চেষ্টা করে খাটের নিচে লুকিয়ে ছিল। পুলিশ তাকে খাটের নিচ থেকেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

এদিকে, রমজানের গ্রেফতারের খবরে বিহারী ক্যাম্প এলাকায় স্বস্তি ফিরে এলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে তার মাদক সিন্ডিকেট নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিহারী ক্যাম্প এলাকার এক দোকানদার জানান, রমজান ও তার পরিবারের সকল সদস্যই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। সে এলাকার প্রধান মাদকের ডিলার। এর আগে তার মা আয়েশা বেগমও মাদকসহ সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, রমজান একাধিক মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতো। সে তার ভাইদের সঙ্গে মিলে পুরো ক্যাম্পে মাদকের একচ্ছত্র সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। বিশেষ করে ৩ নং বালুর মাঠ এলাকায় রমজানের সহযোগী জাহিদ, জাকির ও তুহা বড় ডিলার হিসেবে পরিচিত। তারা বাইরে থেকে মাদকের চালান এনে সরবরাহ করে। এরপর স্থানীয় কয়েকজনকে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা মজুরি দিয়ে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে খুচরা বিক্রি করায়।

ওই সূত্রটি আরও অভিযোগ করে, মোস্তফা, মুর্তুজা, রাজু, ফয়সাল, মোরাদ ও গুফ ভান্ডারীর স্ত্রী আয়েশা আক্তারসহ কয়েকজন নারীও এই মাদক নেটওয়ার্কে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই ক্যাম্পের অলিগলিতে নেশার ভয়াবহ বাজার জমে ওঠে, যা এলাকাবাসীর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বলেন, আদমজী বিহারী ক্যাম্প এলাকার চিহ্নিত মাদকের ডিলার হিসেবে পরিচিত রমজানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

ওসি আরও জানান, রমজানকে একটি মারামারি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন বিক্রেতাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

তবে মূল হোতাদের ধরতে পুলিশ সবসময় চেষ্টা চালাচ্ছে। যারা মাদকের সঙ্গে জড়িত তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি সপ্তাহে যেকোনো দিন তফসিল ঘোষণা: ইসি সানাউল্লাহ 

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে যেকোনো দিন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এর আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হবে।

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ইসির দশম কমিশন সভার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

 নির্বাচন কমিশনার বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং একই দিনে ঐতিহাসিক গণভোটের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। দুই ভোট সফলভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।

আবু জাফর মো. সানাউল্লাহ বলেন, আজ দশম কমিশন সভা হয়েছে। শিগগিরই তফসিল ঘোষণা করা হবে। চলতি সপ্তাহের যেকোনো একসময়ে তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব। নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট পৌঁছে যাবে।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির দশম কমিশন সভা শুরু হয়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও একই দিনে গণভোট আয়োজনের তফসিল চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই ও প্রত্যাহারের তারিখসহ ভোট গ্রহণের সময়সূচি আজই বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়েও মতবিনিময় হবে। পাশাপাশি পোস্টাল ব্যালটের সময়সূচি, মাঠপর্যায়ের প্রশাসনিক প্রস্তুতি এবং আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত অগ্রগতি খতিয়ে দেখবে কমিশন।

এরইমধ্যে নির্বাচন ঘিরে জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও পুলিশ প্রশাসনে বড় পরিসরে রদবদল করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর প্রয়োজনে আরো পরিবর্তন আনা হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসি।

প্রথা অনুযায়ী, নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি জানাতে ১০ ডিসেম্বর কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সেই বৈঠকের পর শিগগির তফসিল ঘোষণা করা হবে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি রয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, কমিশন সভায় তফসিলের সময়সূচি চূড়ান্ত করা হবে। এরপর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘোষণার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

তিনি আরো বলেন, এবার ভোট প্রক্রিয়া ও আইন-বিধি সংশোধনের দাবি উঠেছে। শতভাগ আইনমান নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। 

রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও ভোটারদের সহযোগিতা কামনা করেছেন নির্বাচন কমিশনার।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। সেই সরকারের ঘোষণা অনুসারে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ভোটিংয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ব্যবস্থার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েও আজকের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ