বেশির ভাগ শেয়ারের দর কমলেও ঊর্ধ্বমুখী সূচক
Published: 3rd, July 2025 GMT
টানা প্রায় সাত দিন বৃদ্ধির পর গতকাল বৃহস্পতিবার কমেছে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানির দর। তবে ব্যাংক খাতের শেয়ার দর বৃদ্ধির ফলে সূচক না কমে উল্টো বেড়েছে। এমনকি এ খাতের লেনদেন বৃদ্ধির কারণে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোট লেনদেন প্রায় দুই মাস পর ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের অজ্ঞাতে শেয়ার কেনাবেচাসহ নানা অনিয়ম প্রতিরোধে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর অসংশোধনযোগ্য ‘ব্যাক অফিস’ সফটওয়্যার ব্যবহার নিশ্চিতের আদেশ অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউস বাস্তবায়ন করেছে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ৮৫টি ব্রোকারেজ হাউস এখনও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তাদের আগামী ৩১ জুলাই, ১৫ আগস্ট এবং ৩১ আগস্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গত মঙ্গলবার ডিএসইর কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান পরিচালক কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব দিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জটির পরিচালনা পর্ষদ। অন্যদিকে পৌনে তিন বছর খালি থাকার পর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) পদে ড.
ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে
গত রোববার পর্যন্ত টানা প্রায় সাত দিন সব খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছিল। স্বাভাবিকভাবে গতকাল মুনাফা নিতে অনেকে শেয়ার বিক্রি করেছেন। এতে দর হারিয়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার। তবে ব্যতিক্রম ছিল ব্যাংক, ব্যাংকবর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং মিউচুয়াল ফান্ড খাত। দর হারিয়েছে বীমা, বস্ত্রসহ অন্য সব খাতের বেশির ভাগ শেয়ার।
গতকাল ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে ২৫টির দর বেড়েছে, কমেছে একটির এবং বাকি ১০টির দর অপরিবর্তিত ছিল। এতে এ খাতের গড় শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার দর বৃদ্ধি সূচকে যোগ করেছে প্রায় ৩৭ পয়েন্ট। এর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের দর বৃদ্ধি ১০ পয়েন্ট, ইসলামী ব্যাংকের দর বৃদ্ধি প্রায় ৭ পয়েন্ট, প্রাইম ব্যাংকের দর বৃদ্ধি পৌনে ৪ পয়েন্ট, ইস্টার্ন ব্যাংকের দর বৃদ্ধি পৌনে ৩ পয়েন্ট এবং সিটি ব্যাংকের দর বৃদ্ধি সোয়া ২ পয়েন্ট যোগ করে সূচকে। গতকাল ডিএসইএক্স সূচক পৌনে ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪৮৯৪ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। সূচকভুক্ত ৩২৬ কোম্পানির মধ্যে ১১৮টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ২০৮টির দর।
গতকাল ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের তালিকাভুক্ত ২৩ কোম্পানির মধ্যে ১৩টির দর বেড়েছে, কমেছে ৫টির। তবে বীমা খাতের তালিকাভুক্ত ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ৪০টির দর কমেছে, বেড়েছে ১৫টির। বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর কমেছে, বেড়েছে ১২টির। এদিন টেলিযোগাযোগ খাতের তিনটিই দর হারিয়েছে। বাকি সব খাতের দর হারানো এবং দর বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ার সংখ্যার ব্যবধান ছিল তুলনামূলক কম।
গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজারে ৫০৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। গত ৭ মের পর এটাই এক দিনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কেনাবেচা হলো। খাতওয়ারি হিসেবে লেনদেনে ব্যাংক খাতের অংশ ছিল সর্বাধিক সাড়ে ৯৭ কোটি টাকা, যা মোটের সোয়া ১৯ শতাংশ। সাড়ে ৬৪ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ খাত।
ব্যাক অফিস সফটওয়্যার
দেশের বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অজ্ঞাতে শেয়ার বিক্রির অভিযোগ পুরোনো। গোপনে গ্রাহকদের শেয়ার বিক্রির পর সামাল দিতে না পেরে ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে অন্তত চার ব্রোকারেজ হাউস বন্ধ হয়ে যায়। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, দীর্ঘদিন ধরে তারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রকৃত তথ্য দেওয়ার জন্য একটি এবং গ্রাহকদের ভুয়া তথ্য দিতে পৃথক আরেকটি ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করত।
ফাঁকি ধরার পর বিএসইসি ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে অসংশোধনযোগ্য ব্যাক অফিস ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকার হিসেবে কাজ করে এমন ২৯১টি ব্রোকারেজ হাউসের মধ্যে ২৪৪টি এবং শুধু চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকার হিসেবে কাজ করা ৮২ ব্রোকারেজ হাউসের মধ্যে ৪২টি এরই মধ্যে বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালন করেছে। তবে এখনও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৪৭টি এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ৩৮টি ব্রোকারেজ হাউস বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালন করতে পারেনি। এসব ব্রোকারেজ হাউসকে আরও কিছুটা সময় দিতে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ আবেদন করায় বিএসইসি বিভিন্ন মেয়াদে সময় বাড়িয়েছে। এর মধ্যে মিনহার, শেলটেক, ব্যাংক এশিয়া, আইসিবি, আইএফআইসি এবং ইউনিক্যাপ সিকিউরিটিজকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অসংশোধনযোগ্য ‘ব্যাক অফিস’ সফটওয়্যার ব্যবহারের সময় বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি। বাকিগুলোকে ১৫ আগস্ট এবং ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ক র দর ব দ ধ সফটওয় য র ব য ক অফ স র দর ব ড় ছ ব যবহ র ব এসইস ল নদ ন দর হ র গতক ল আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
বছরজুড়ে প্রতিদিন পাঁচ লাখ ক্ষতিকর ফাইল শনাক্ত করেছে ক্যাসপারস্কি
২০২৫ সালে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ লাখ ক্ষতিকর ফাইল শনাক্ত করেছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ বেশি। ক্যাসপারস্কি সিকিউরিটি বুলেটিনের তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের সাইবার হুমকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যার মধ্যে পাসওয়ার্ড চুরির জন্য ম্যালওয়্যার ৫৯ শতাংশ, স্পাইওয়্যার ৫১ শতাংশ ও অন্যান্য হামলা ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ক্যাসপারস্কি বাংলাদেশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা সবচেয়ে বেশি সাইবার হামলার ঝুঁকিতে ছিলেন। মোট হামলার ৪৮ শতাংশই উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ২৭ শতাংশ ব্যবহারকারী অনলাইনভিত্তিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং ৩৩ শতাংশ ইউএসবি, ডিস্ক বা ইনস্টলারের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হয়েছে।
ক্যাসপারস্কির থ্রেট রিসার্চ বিভাগের প্রধান আলেকসান্দার লিসকিন বলেন, বর্তমান সাইবার–দুনিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে জটিল। করপোরেট নেটওয়ার্কে ঢোকার সবচেয়ে সহজ উপায় এখনো সফটওয়্যারের দুর্বল জায়গা ও চুরি হওয়া পাসওয়ার্ড। তাই পাসওয়ার্ড চুরি ও স্পাইওয়্যার অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি সাপ্লাই চেইন আক্রমণও বেড়েছে, বিশেষ করে ওপেন সোর্স সফটওয়্যারকে লক্ষ্য করে। এ পরিস্থিতিতে শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা কৌশল না থাকলে প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ সময় কার্যক্রম বন্ধ থাকার ঝুঁকিতে পড়বে। একইভাবে ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীরাও দুর্বল সুরক্ষার কারণে নিজের তথ্যের পাশাপাশি নিজেদের কর্মস্থলের তথ্যও ঝুঁকিতে ফেলতে পারেন।
২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের সব অঞ্চলে সাইবার হুমকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এপিএসি ও ইউরোপে পাসওয়ার্ড স্টিলার ও স্পাইওয়্যার হামলা সবচেয়ে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপরিচিত উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোড বা লিংকে ক্লিক না করার পাশাপাশি সব সময় দুই স্তরেরর নিরাপত্তাব্যবস্থা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে ক্যাসপারস্কি। এ ছাড়া প্রতিটি অ্যাকাউন্টে শক্তিশালী ও আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহারসহ নিয়মিত সফটওয়্যার হালনাগাদ করতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।