তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা না থাকায় জনগণকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে: আমীর খসরু
Published: 20th, November 2025 GMT
দেশে দীর্ঘদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা না থাকায় দেশের জনগণকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন সুসংহত ও গ্রহণযোগ্য হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বটতলায় কমল মেডিএইড আয়োজিত বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন। এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
আজ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, পরের নির্বাচন থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়কে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় দেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এমন একটি সময়ে আমরা নির্বাচনের সম্মুখীন, এই নির্বাচনকে সামনে রেখে আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে নির্বাচন অন্তত সুষ্ঠু হবে, গ্রহণযোগ্য হবে, যদিও এই নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসম্পর্কিত নয়। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত সরকারের পক্ষে যেসব কাজ করা সম্ভব হয়, কোনো অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে তা সম্ভব নয়। সুতরাং বাংলাদেশের মানুষ একটি নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।’
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘সামাজিক ও কল্যাণমূলক কাজ যেকোনো উন্নত দেশে স্বাভাবিক কাজ। উন্নত দেশে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অংশ হিসেবেই কিছু না কিছু সামাজিক কাজে অংশ নিতে হয়। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখানে এখনো শুরু হয়নি। যারা উদ্যোগ নিয়েছে, তাদের ধন্যবাদ। আমি অবাক হয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ফার্মেসি নেই। এটাই বোঝা যায়, স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমরা কতটা অসচেতন।’
আয়োজনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আপনাদের সমালোচনা ও প্রশংসাগুলো অব্যাহত থাকুক, যাতে আমরা এখন থেকে জবাবদিহির সংস্কৃতিতে বড় হই।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘হলে থাকা অবস্থায় আমাদের স্বাস্থ্যে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা আসলে বোঝা যায় না। হল থেকে বের হলে বোঝা যায় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো স্বাস্থ্যের কী অপূরণীয় ক্ষতি করে দেয়। পরবর্তী সময়ে আমাদের চিকিৎসার ওপর থাকতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ১০৪ বছর হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ফার্মেসি নেই। জরুরি প্রয়োজনে ওষুধ আনতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যেতে হয়।’ তিনি শিক্ষার্থীদের শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ক্যাম্পেইন চালু করা উচিত বলে মনে করেন।
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড.
আজকের এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন কবি জসীম উদ্দীন হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামীম। শিক্ষার্থীদের জন্য এমন কার্যক্রম চালু থাকবে বলেও জানান তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র ক সরক র ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি ঢাকায় আসছেন আজ
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ে। তিনি ২০ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। এর আগে কমনওয়েলথ মহাসচিব বাংলাদেশ সফরে আসছেন।
বাংলাদেশের জাতীয় পরিক্রমার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে শার্লি তাঁর এই সফরে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
কমনওয়েলথের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শার্লি তাঁর সফরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তিনি রাজনৈতিক দলের নেতা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনারসহ অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনায় পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে; বিশেষ করে শান্তি, স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র, সুশাসন ও সমৃদ্ধির জন্য জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশের ধারাবাহিক জাতীয় অগ্রগতিকে সমর্থন করার লক্ষ্যে চলমান সম্পৃক্ততাকে আরও গভীর করা।
সফরে মহাসচিব শার্লি অংশীজনদের সামনে কমনওয়েলথের নতুন ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান’ তুলে ধরবেন, যার তিনটি প্রধান স্তম্ভের একটি হলো গণতন্ত্র। পাশাপাশি প্রয়োজনভিত্তিক সহায়তা কীভাবে বাংলাদেশের জনগণকে সর্বোত্তমভাবে সাহায্য করতে পারে, তা শুনবেন তিনি।
সফর নিয়ে শার্লি বলেছেন, কমনওয়েলথ ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারত্ব রয়েছে। আর আগামী বছর দেশটি নির্বাচনের দিকে এগোতে থাকায় এই অংশীদারত্বের গুরুত্ব এখন আরও বেশি।
শার্লি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকার হলো একটি শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশকে সমর্থন করা, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো হবে।’
কমনওয়েলথ মহাসচিব বলেন, ‘এটাই বাংলাদেশের মানুষের আমাদের কাছে ন্যায্য প্রত্যাশা। সবার জন্য ন্যায়সংগত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ার প্রয়াসে তাঁরা কমনওয়েলথকে একটি বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে আস্থায় রাখতে পারেন।’
ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রস্তুতিকালে বাংলাদেশের জনগণকে শুভকামনা জানান কমনওয়েলথ মহাসচিব। একই সঙ্গে তিনি গণতান্ত্রিক যাত্রায় কমনওয়েলথের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
এর আগে গত মাসে কমনওয়েলথের একটি প্রাক্-নির্বাচনী মূল্যায়ন দল বাংলাদেশ সফর করেছিল।