চীনের ভূমি দখল নিয়ে রাহুলের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট। আজ মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জোটের নেতারা এক বৈঠকের পর বিচারপতিদের ওই মন্তব্য ‘অস্বাভাবিক ও অযাচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন।

ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বিরোধী নেতারা বলেছেন, জাতীয় স্বার্থে মন্তব্য করাই বিরোধীদের কাজ। বিশেষ করে তিনি যদি লোকসভার বিরোধী নেতা হন। সীমান্ত রক্ষায় সরকার যখন বিশ্রিভাবে ব্যর্থ হয়, তখন প্রত্যেক নাগরিকের নৈতিক অধিকার হলো সরকারকে দায়ী করা। রাহুল সেটাই করেছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা মিলিত হন। সেখানেই সবাই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপংকর দত্ত ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসিহর মন্তব্যের সমালোচনা করেন। রাহুলের বিরুদ্ধে আনা এক মানহানি মামলার শুনানির সময় গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওই দুই বিচারপতির বেঞ্চ কংগ্রেস নেতার উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘উনি যা বলেছেন, কোনো প্রকৃত ভারতীয় তা বলবেন না।’

ভারত জোড়ো যাত্রার সময় রাহুল গালওয়ান সংঘর্ষ নিয়ে মন্তব্য করে বলেছিলেন, সেখানে ২০২০ সালের সংঘর্ষের পর ভারতের ২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চীন দখল করে রেখেছে।

বিচারপতি দত্ত সেই মন্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছিলেন, কোথা থেকে রাহুল ওই তথ্য পেয়েছেন? তিনি কি গালওয়ানে উপস্থিত ছিলেন? তাঁর কাছে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে কি? বিচারপতিরা বলেছিলেন, বাক্‌স্বাধীনতা থাকার অর্থ এমন নয় যে, যা খুশি তা–ই বলা যায়। ইন্ডিয়া জোট আজ মঙ্গলবার বিচারপতিদের ওই মন্তব্যেরই সমালোচনা করে।

ইন্ডিয়া জোটের পাশাপাশি কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতারাও বিচারপতিদের ওই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। আজ মঙ্গলবার কেরালার ওয়েনাডের সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র সংসদ ভবনে প্রবেশ করার আগে এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রকৃত ভারতীয় কে, তা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বিচার্য বিষয় নয়।’

প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, কে প্রকৃত ভারতীয়, কে নয়; তা বিচারের ভার বিচারপতিদের নয়। রাহুল সব সময় দেশের সেনাবাহিনী ও জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছেন। সরকারকে প্রশ্ন করাই বিরোধী নেতার কাজ। রাহুল সেটাই করেছেন। সরকার তাঁকে পছন্দ করে না। তাঁর প্রশ্নের জবাবও দিতে চায় না।’

কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মঙ্গলবার বলেন, ‘গালওয়ান সংঘর্ষের পর এমন প্রশ্ন প্রত্যেক ভারতীয়ই করেছেন; কিন্তু মোদি সরকার উত্তর দিচ্ছে না। তাদের নীতি হলো, অস্বীকার করো, সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে দাও, মিথ্যা বলো এবং যা করা হয়েছে, তা ন্যায্য প্রমাণিত করো।’

রাহুলের আনা অভিযোগের সমর্থনে রমেশ বলেন, ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর জমি হারানোর সবচেয়ে বড় ঘটনা গালওয়ানেই ঘটেছে।

কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সুরযেওয়ালা এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, চীনাদের ভারতীয় জমি দখলে রাখার বিষয়টি বাস্তব। কাল্পনিক নয়। কোনো দেশপ্রেমী ভারতীয় তা অস্বীকার করতে পারবে না।

রণদীপ লেখেন, ‘জাতীয়তাবাদ সরকারকে প্রশ্ন করতে শিখিয়েছে। সেটা অন্যায় হলে, অবমাননাকর হলে ধর্মাবতার, এক ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আমি তা বারবার করতে প্রস্তুত।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব চ রপত দ র ব চ রপত র গ লওয় ন কর ছ ন ইন ড য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টির পানি চুলের জন্য ভালো না খারাপ?

ছবি: প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ