‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—তিন দিন আগে হুমকি পেয়েছিলেন সরোয়ার
Published: 6th, November 2025 GMT
চট্টগ্রামে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে গুলি করার তিন দিন আগে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন আরেক ‘সন্ত্রাসী’ মো. রায়হান। ওই সময় সরোয়ারকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, তাঁর সময় শেষ, যা খাওয়ার যেন খেয়ে নেন। সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার রাতে আবদুল কাদেরের সঙ্গে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার খন্দকারপাড়া এলাকার বাড়িতে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে তিন দিন আগে গত রোববার মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী রায়হান। বলেছিলেন, “তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে।”’
গতকাল নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। জনসংযোগের বহর এগোতে এগোতে চলছিল স্লোগান। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। ঘটনাস্থলেই গুলিতে মারা যান সরোয়ার। গুলিবিদ্ধ হন এরশাদ উল্লাহসহ চারজন। সরোয়ারের পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এরশাদ উল্লাহসহ অন্যরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের বলেন, তাঁর ছেলেকে প্রায়ই হুমকি দিতেন বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী, তাঁর সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও মো.
আবদুল কাদের আরও বলেন, ‘এভাবে বাড়ির কাছে ছেলেকে মেরে ফেলবে, তা কল্পনা করিনি কখনো। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকেও রাস্তায় পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ।’
আবদুল কাদের যখন কথা বলছিলেন, তখনো তাঁর পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ছেলেকে যখন গুলি করা হচ্ছিল, তখন তিনিও কাছে ছিলেন। লোকজনের ভিড় থাকায় বুঝতে পারেননি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। পরে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা ও সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে যান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রিকশাতেই আমার ছেলে আমার কোলে মারা যায়। তবু মনকে বোঝাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।’
চট্টগ্রাম নগরের হামজারবাগের এই স্থানেই গুলি করা হয় সরয়ারকে। ঘটনার পর গতকাল সেখানে বসে কথা বলছিলেন তাঁর বাবা আবদুল কাদের । তাঁর পাঞ্জাবিতে তখনো লেগেছিল ছেলের রক্তউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ক দ র সন ত র স নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানির ‘ট্রানজিশন’ দলের সবাই নারী
নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনে জয়ের পরদিন থেকেই দায়িত্ব গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন জোহরান মামদানি। গতকাল বুধবার তিনি তাঁর ‘ট্রানজিশন টিম’ বা ক্ষমতা গ্রহণকারী দলের নাম ঘোষণা করেছেন। পাঁচ সদস্যের এ দলের সবাই নারী।
আগামী ১ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করবেন জোহরান মামদানি। ৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এই মেয়র নিজেকে একজন ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে পরিচয় দেন।
স্থানীয় সময় গতকাল সকালে কুইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রানজিশন দলের নাম ঘোষণা করেন জোহরান মামদানি। এর নেতৃত্ব দেবেন লানা লেপোড। তিনি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কাজ করবেন। কো–চেয়ার হিসেবে থাকবেন নিউইয়র্কের সাবেক ফার্স্ট ডেপুটি মেয়র মারিয়া তোরেস-স্প্রিংগার। আরও আছেন নিউইয়র্কের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের সাবেক প্রধান লিনা খান, ইউনাইটেড ওয়েজের প্রেসিডেন্ট ও সিইও গ্রেস বোনিয়া এবং সিটির স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিষেবাবিষয়ক সাবেক ডেপুটি মেয়র মেলানি হারজোগ।
নিউইয়র্কের দায়িত্ব গ্রহণ করে জোহরান মামদানি প্রশাসনকে শুরুতেই বড় ধরনের বাধার মুখে পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং তিনি মেয়র হলে নিউইয়র্ক সিটির জন্য কেন্দ্রীয় তহবিলের সরবরাহ বন্ধ করাসহ নানা হুমকি দিয়েছেন।সংবাদ সম্মেলনে জোহরান মামদানি বলেন, ‘আগামী মাসগুলোতে আমার দল ও আমি এমন একটি সিটি হল গড়ে তুলব, যেটি (আমাদের) নির্বাচনী প্রচারের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি প্রশাসন গড়ে তুলব; যা সমানভাবে সক্ষম ও সহানুভূতিশীল হবে, সততা দিয়ে পরিচালিত হবে এবং ততটাই কঠোর পরিশ্রম করতে প্রস্তুত থাকবে; যতটা পরিশ্রম এ শহরকে নিজেদের বাড়ি মনে করা কোটি কোটি নিউইয়র্কবাসী করে থাকেন।’
গত মঙ্গলবার রাতে জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর গতকাল টেলিভিশনে নিজের প্রথম সাক্ষাৎকারে জোহরান মামদানি দ্রুত দায়িত্ব গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ১ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে প্রস্তুত থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের হাতে ৫৭ দিন আছে।’
নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানি। একই সঙ্গে তিনি প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ও আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী নিউইয়র্কের মেয়র। এক শতাব্দীর বেশি সময়ের মধ্যে তাঁর চেয়ে কম বয়সী মেয়র নিউইয়র্ক সিটি আর পায়নি।
আরও পড়ুনজোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প৫ ঘণ্টা আগেনিউইয়র্ক সিটির দায়িত্ব গ্রহণ করে জোহরান মামদানি প্রশাসনকে শুরুতেই বড় ধরনের বাধার মুখে পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি (জোহরান) মেয়র হলে নিউইয়র্ক সিটির জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল সরবরাহ বন্ধ করাসহ নানা হুমকি দিয়েছেন।
আমরা এমন এক প্রশাসন গড়ে তুলব; যা সমানভাবে সক্ষম ও সহানুভূতিশীল হবে, সততা দিয়ে পরিচালিত হবে এবং ততটাই কঠোর পরিশ্রম করতে প্রস্তুত থাকবে যতটা পরিশ্রম এ শহরকে নিজেদের বাড়ি মনে করা কোটি কোটি নিউইয়র্কবাসী করে থাকেন।জোহরান মামদানি, নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়রজোহরান মামদানি নিজেও স্বীকার করেছেন, তাঁকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক জটিলতা সামলানো ও শত্রুভাবাপন্ন ট্রাম্প প্রশাসনের অধীন কাজ করা। তবে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, এর মধ্যেও তিনি নিজের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন।
জোহরান মামদানি বলেন, তিনি রাজনৈতিক বিভাজনকে পেছনে ফেলে নিউইয়র্কবাসীদের একত্র করার লক্ষ্যে কাজ করবেন। তাঁর মতে, নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের রাজনৈতিক মত যা–ই হোক, সবাইকে একই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। সামনের দিনগুলোতে তিনি ডেপুটি মেয়র ও এজেন্সি কমিশনারদের নাম ঘোষণা করবেন।
গত মঙ্গলবার রাতে জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর গতকাল টেলিভিশনে নিজের প্রথম সাক্ষাৎকারে জোহরান মামদানি দ্রুত দায়িত্ব গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ১ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে প্রস্তুত থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের হাতে ৫৭ দিন আছে।’এ ব্যাপারে মেয়র বলেন, কয়েকটি নাম আপনাদের চেনা হবে, কয়েকটি হবে না। তবে তাঁরা সবাই পুরোনো সমস্যার নতুন সমাধান খুঁজে পেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবেন। তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১ জানুয়ারি, যখন আমাদের শহর নতুন প্রশাসনের শপথ অনুষ্ঠান উদ্যাপন করবে, চলুন একই সঙ্গে আমরা আমাদের শহরে একটি নতুন যুগের সূচনাও উদ্যাপন করি।’
আরও পড়ুনজোহরান মামদানির জয়: নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলে চলে আসতে বলছেন ইসরায়েলি মন্ত্রী৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনমেয়র নির্বাচনে জয়ের পর এবার আসল চ্যালেঞ্জের মুখে মামদানি১৫ ঘণ্টা আগে