নো হাঙ্কি পাঙ্কি, গণভোট আগে চাই: তাহের
Published: 6th, November 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনে সময় ক্ষেপন করা হচ্ছে অভিযোগ করে সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করতে আইনি কোনো বাধা নেই। সুতরাং সময় আছে, আরো পনেরদিন ক্ষেপণ করবেন, তারপরও সময় থাকবে। নতুন করে সময় বের করা হবে। কী বোঝাতে চায় বুঝে নিয়েন, নো হাঙ্কি পাঙ্কি। গণভোট আগে দিতেই হবে।”
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার আগে পল্টনমোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জামায়াতের এই শীর্ষনেতা এসব কথা বলেন।
পাঁচ দফা দাবিকে গণদাবি উল্লেখ করে তাহের বলেন, “দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আবারো রক্ত যাবে, জীবন যাবে তবুও দাবি আদায় করে ছাড়ব। জুলাই আন্দোলন, শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা পরাজিত হবে। জুলাই সনদ যেভাবে আছে ওইভাবে বাস্তবায়ন হবে এবং ওইভাবে সংবিধানে লিপিবদ্ধ হবে।”
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “চালাকি শুরু করেছেন? চালাকি করবেন না। এই বলব-সেই বলব বলে নির্বাচনের সময় কাছাকাছি চলে এসেছে। আপনাদের চালাকি আমরা বুঝি, আপনারা যতই চালাকি করেন দাবি আমরা আদায় করবই। দাবি আদায়ে আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে আছি। সোজা আঙ্গুলে যদি ঘি না উঠে আঙ্গুল বাঁকা করব।”
এসময় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকনসহ আটদলের শীর্ষনেতারা বক্তব্য রাখেন।
পরে আট দলের নেতারা বিশাল মিছিল নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে পদযাত্রা নিয়ে যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রায় আট দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা নেতৃত্বে দেন।
রাজধানীর শাপলা চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন জামায়াত নেতাকর্মীরা। ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসের দুই অংশসহ অন্যদলগুলো নেতাকর্মীরা আগ থেকেই পল্টন মোড়ে অবস্থান নেন।
দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
ইসলামি আটটি দলের মধ্যে রয়েছে- জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ চলছে
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ভারতের বিহার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ চলছে। প্রথম দফায় রাজ্যটির ২৪৩টি বিধানসভার আসনের মধ্যে ১২১ টি আসনে ভোট নেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যটির ১৮টি জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই আসনগুলো। স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকাল ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে শতকরা ২৭.৬৫ শতাংশ। এই নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট এবং বিরোধী মহাজোট।
আরো পড়ুন:
নেপাল ও ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল ঘোষণা
বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের দল ঘোষণা, নেই ছেত্রী
এনডিএ জোটের শরিক দলগুলো হলো- বিজেপি, জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ), হিন্দুস্থানী আওয়াম মোর্চা, বিকাশশীল ইনসান পার্টি।
অন্যদিকে মহাজোটের শরিক দলগুলো হলো- রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), কংগ্রেস, সিপিআইএমএল, সিপিআইএম, সিপিআই। যদিও এবারের নির্বাচনে এক্স ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে দেশটির ভোট কুশলী এবং রাজনৈতিক নেতা প্রশান্ত কিশোরের জন সুরজ পার্টি।
প্রথম দফায় মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৫ লাখ ১৩ হাজার ৩০২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ কোটি ৯৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩২৫ জন, নারী প্রার্থী ১ কোটি ৭৬ লাখ ৭৭ হাজার ২১৯ জন।
প্রথম দফায় মোট ১৪১৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে। এর মধ্যে পুরুষপ্রার্থী ১১৯২ এবং নারী প্রার্থীর সংখ্যা ১২২। এদফায় হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাঘোপুর কেন্দ্র থেকে। এছাড়াও নির্বাচনী ময়দানে রয়েছে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজেপি প্রার্থী সম্রাট চৌধুরী (তারাপুর কেন্দ্র), কৃষিমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা (লক্ষ্মীসরাই কেন্দ্র), স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডে (সিওয়ান কেন্দ্র), জনশক্তি জনতা দল প্রার্থী তেজ প্রতাপ যাদব (মহুয়া কেন্দ্র), লোকসংগীত শিল্পী বিজেপি প্রার্থী মৈথিলী ঠাকুর (আলিনগর কেন্দ্র), ভোজপুরি সুপারস্টার আরজেডি প্রার্থী কেশরী লাল যাদব (ছাপরা), আরেক ভোজপুরি সুপারস্টার জন সুরজ পার্টি প্রার্থী রিতেশ পান্ডে (কারগাহার কেন্দ্র)। এছাড়াও বিহারের রাজনীতিতে বাহুবলী পরিচিত আরজেডি প্রার্থী ওসামা সাহাব (রঘুনাথপুর কেন্দ্র) এবং জেডিইউ প্রার্থী অনন্ত সিং (মোকামা কেন্দ্র) থেকে লড়াই করছেন।
এদিন সকালে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ কুমার যাদব, উপ মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী, রাজ্যটির দ্বিতীয় উপ মুখ্যমন্ত্রী রাজীব সিনহা, মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং, রাজীব রঞ্জন সিং প্রমুখ।
দ্বিতীয় দফায় ১২২ আসনে ভোট হবে ১১ নভেম্বর। ভোট গণনা আগামী ১৪ নভেম্বর।
আগামী ২২ নভেম্বর রাজ্য বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে নির্বাচন এবং সরকার গঠন সম্পর্কিত সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ