বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার কিংবা ফ্যাসিবাদ নির্মূলে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে কাদের গনি চৌধুরী এ কথা বলেন। বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন, সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিল ও সাগর-রুনি হত্যার বিচার—এসব দাবির একটিও পূরণ হয়নি। সরকার দৃশ্যমান সংস্কার আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

জুলাই সাহসী সাংবাদিক পুরস্কার নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, যাঁরা রাজপথে ছিলেন না, তাঁদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে। আর প্রকৃত সাংবাদিকদের অবজ্ঞা করা হচ্ছে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হলেও চূড়ান্ত বিজয় এখনো আসেনি। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’ তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যা এখনো বন্ধ হয়নি। ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো এখনো প্রচারিত হচ্ছে। এসব প্রশ্নের জবাব সরকারকে দিতে হবে।

ডিইউজে সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় একজন ব্যক্তির পরামর্শে সাংবাদিকদের উপেক্ষা করে ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করছে। কল্যাণ ট্রাস্ট এখন আত্মীয়স্বজন পুনর্বাসন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

অনুষ্ঠানে ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালের কণ্ঠের যুগ্ম সম্পাদক সাঈদ খান বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গণমাধ্যম সংস্কারে এক বছরেও অগ্রগতি নেই

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন কার্যকর হয়নি, গণমাধ্যম সংস্কারেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা একথা বলেন।

বক্তারা বলেন, এখনো তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করছে এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগও তুলেছেন তারা।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, ‘‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য হলেও সেখানে প্রকৃত সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চাই।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘যেদিন সাংবাদিকরা রাজপথে নামবে, সেদিন কেউ রেহাই পাবে না।’’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, ‘‘আজ আমাদের আনন্দ ও বেদনার দিন। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও এখনও গণতন্ত্র পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ। ভারতীয় টিভি চ্যানেল এখনো বন্ধ হয়নি। কিছু উপদেষ্টার অজ্ঞতা দেশকে অস্থির করে তুলছে।’’

বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরি বলেন, ‘‘সাইবার সিকিউরিটি আইন এখনো বাতিল হয়নি, এটা হাসিনার সরকারের মতোই দমনমূলক। ভোটহীন ১৭ বছর পর গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের আশায় অপেক্ষা করছি, কিন্তু এখনো সংস্কারের নামে শুধু প্রতিশ্রুতি শুনছি।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ১৭ বছর ধরে রাজপথে ছিলাম, রক্ত দিয়েছি। এবার যদি আবার প্রতারণা হয়, তাহলে সাংবাদিক সমাজ আর সহ্য করবে না।’’

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, গণমাধ্যমে যারা স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, তারা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। এই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গণমাধ্যমকে মুক্ত করতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ মুরসালীন নোমানী, রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাংবাদিক নেতা আব্দুল্লাহ মজুমদার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণমাধ্যম সংস্কারে এক বছরেও অগ্রগতি নেই