১১ ডিআইজিসহ ৭৬ ওএসডি পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানো হলো ঢাকার বাইরে
Published: 6th, August 2025 GMT
পুলিশের ১১ উপমহাপরিদর্শকসহ বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) থাকা ৭৬ পুলিশ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করে বদলি বা পদায়ন করা হয়েছে। আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশের বিষয়টি জানানো হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে ওএসডি হয়ে থাকা ডিআইজি, এডিশনাল ডিআইজি ও পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৭৬ কর্মকর্তাকে নতুন করে সংযুক্তির ঘটনায় বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা চলছে। কারণ, ওএসডি থাকা কর্মকর্তাদের কার্যত কোনো কাজ থাকে না। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, যেই কর্মকর্তারা চাকরিতে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছেন, তাঁদের কেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা পুলিশের ইউনিটগুলোতে সংযুক্ত করতে হলো?
এ বিষয়ে জননিরাপত্তা বিভাগের একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, ওএসডি হয়ে জননিরাপত্তা বিভাগে সংযুক্ত কর্মকর্তারা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। এই সুযোগে এই কর্মকর্তাদের অনেকেই বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে প্রায়ই বৈঠকে মিলিত হতেন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তাদের একটি অংশ ওই সব বৈঠকে বর্তমান সরকারবিরোধী নানা বিষয়ে আলাপ–আলোচনা করতেন বলে খবর আসছিল। এ ছাড়া পূর্বের যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নথিও পাচার করে থাকতে পারেন, এমন আলোচনাও ছিল।
সূত্রটি বলছে, এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৭৬ কর্মকর্তাকে জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে বিভিন্ন রেঞ্জ ও জেলা পুলিশ কার্যালয়সহ বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়, যাতে তাঁরা একসঙ্গে ঢাকায় অবস্থান করে কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে না পারেন। এ জন্য বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের সংযুক্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলছে, ইউনিটগুলোতে সংযুক্ত হওয়া কর্মকর্তাদের বাস্তব অবস্থা অনেকটা ওএসডি থাকা কর্মকর্তাদের মতোই। এমন কর্মকর্তাদেরও কার্যত কোনো কাজ থাকে না।
এদিকে যেসব কর্মকর্তাকে নতুন করে বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কয়েকজন গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এখনো পলাতক। পলাতক কর্মকর্তাদেরও বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করার কারণ হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রটি বলছে, এখন পর্যন্ত পলাতক কর্মকর্তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা জননিরাপত্তা বিভাগকে দেয়নি পুলিশ। এ কারণে পলাতক কিছু কর্মকর্তার নাম ৭৬ জনের তালিকায় থাকতে পারে।
তবে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে ভিন্ন কথা। সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, পলাতক পুলিশ সদস্যদের তালিকা তারা জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠিয়েছে। সর্বশেষ গত ২৪ জুলাই ৪৩ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি–মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ওএসডি হওয়া এই কর্মকর্তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে পুলিশ সদর দপ্তর কর্মস্থলে অনুপস্থিত বা পলাতক বা আত্মগোপনে থাকা কর্মকর্তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে।
ইউনিটগুলোতে সংযুক্ত হওয়া ৭৬ কর্মকর্তার মধ্যে ১১ জন ডিআইজি আছেন। তাঁদের মধ্যে শাহ্ মিজান শাফিউর রহমানকে রংপুর রেঞ্জে, মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদকে সিলেট রেঞ্জে, মো.
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তখনকার পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর অথবা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসএসডি) করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়েছে অনেককে।
যেসব পুলিশ কর্মকর্তাকে দেশের বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়েছে.pdfডাউনলোডউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ভ ন ন ইউন ট কর মকর ত দ র কর মকর ত ক কর মকর ত র ই কর মকর ত স য ক ত কর ড আইজ সরক র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ডিএনএ পরীক্ষা করানোর ঘোষণার পরদিন সেই ইউএনওকে ওএসডি
জালিয়াতি করে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটায়’ প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ ওঠা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামাল হোসেনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে ওএসডি করার প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়।
কামাল হোসেনের প্রকৃত মা-বাবা কারা, তা নিশ্চিত হতে গতকাল মঙ্গলবার ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের মহাপরিচালক (তদন্ত) মো. আক্তার হোসেন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এক দিন পর ইউএনও কামাল হোসেনকে ওএসডি করা হলো। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কামাল হোসেনের ওএসডির এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
দুদক সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিতে জালিয়াতির অভিযোগে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দুদকের সম্মিলিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এর উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু বাদী হয়ে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
বর্তমানে তদন্তাধীন ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরি পাওয়াসহ বিভিন্ন সুবিধা ভোগের উদ্দেশ্যে কামাল হোসেন তাঁর জন্মদাতা পিতা-মাতা মো. আবুল কাশেম ও মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে নিজের চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব ও চাচি মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা দেখিয়েছিলেন। এই কৌশলে তিনি ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি পান।
কামাল হোসেনের মা-বাবা কারা, তা নিশ্চিত হতে তাঁর ডিএনএ নমুনার সঙ্গে তাঁর মা–বাবা ও চাচা-চাচির ডিএনএ মিলিয়ে দেখার নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর কমিশন ডিএনএ পরীক্ষার অনুমোদন দেয় জানিয়ে দুদক সূত্র বলেছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলাফল পাওয়া গেলে অভিযোগের সত্যতা নির্ধারণে তা হবে বড় প্রমাণ।
আরও পড়ুনজালিয়াতি করে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটায়’ চাকরি: ইউএনও কামালের ডিএনএ পরীক্ষা হবে২২ ঘণ্টা আগে