ঢাকার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজে আরও বেশি পরিমাণে দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছে সরকার।

অবকাঠামো নির্মাণে এত দিন দেশীয় রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি এখন থেকে দেশীয় গ্লাস ও বৈদ্যুতিক তারের (ক্যাবল) ব্যবহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যয় কমানো, সময় সাশ্রয়সহ দেশীয় শিল্পকে সুবিধা দিতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।

বর্তমানে ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করছে। এই পথটির নাম এমআরটি লাইন-৬। এটি এখন মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

এর বাইরে ঢাকায় আরও পাঁচটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত পথে একটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। সাভারের হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত অন্য একটি মেট্রোরেল লাইনের প্রাথমিক নির্মাণকাজও চলছে। গাবতলী থেকে মোহাম্মদপুর, রাসেল স্কয়ার, কারওয়ান বাজার ও হাতিরঝিল হয়ে দাসেরকান্দি পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণের প্রকল্প দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা আছে সরকারের। বাকি দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এই দুটি লাইনের সম্ভাব্যতা যাচাইসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া চলছে, কাজ নির্মাণ পর্যায়ে যায়নি।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, নির্মাণকাজে দেশীয় সরঞ্জামের ব্যবহার বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়ন মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের সম্প্রসারণকাজ দিয়ে শুরু হয়েছে। এরপর ঢাকায় যত মেট্রোরেলের লাইন নির্মাণ করা হবে, সেগুলোতে বেশি পরিমাণে দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে দিন দিন মেট্রোরেল বাড়বে। ফলে সরঞ্জামের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করা ঝুঁকিপূর্ণ। তা ছাড়া ব্যয় কমানোসহ দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এসব বিবেচনায় এখন বেশি পরিমাণে দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হবে। এর অংশ হিসেবে এখন স্থানীয় গ্লাস ও তার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এভাবে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে সুযোগ দেওয়া হলে আগামী কয়েক বছরে তারা অন্যান্য দেশের সক্ষমতায় পৌঁছে যেতে পারবে।

দেশীয় গ্লাস ব্যবহারে জোর

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত কাজের ক্ষেত্রে মেট্রোরেলের ট্রেন, রেললাইন, সংকেতব্যবস্থার সরঞ্জামের বেশির ভাগই জাপানসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। তবে উড়ালপথ ও স্টেশন ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত রড, সিমেন্ট ও কিছু স্টিল দেশীয় কোম্পানি থেকে নেওয়া হয়েছে। স্টেশন ও ভবনে ব্যবহৃত গ্লাস আমদানি করা হয়েছে। সব গ্লাসই ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণের মূল লাইনের তার ও সাবস্টেশনের যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকেই আনা হয়েছে। এর মধ্যে সাবস্টেশন থেকে যেসব গুরুত্বপূর্ণ লাইন টানা হয়, সেগুলোর তার এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারত থেকে।

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন মেরামতের সময় প্রথমবারের মতো দেশীয় নাসির গ্লাস ব্যবহার করা হয় বলে জানান ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা। এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে। ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, এই উদ্যোগটির পেছনে ছিলেন ভারতসহ বিভিন্ন দেশে মেট্রোরেল প্রকল্পের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব পান। মূলত এরপরই দেশীয় গ্লাসের ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেওয়া হয়।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারত থেকে এনে লাগানো গ্লাসের দাম বাংলাদেশে তৈরি গ্লাসের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি। দেশীয় গ্লাস ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়ে গত ৫ মে বৈঠক করে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে নাসির গ্লাস, পিএইচপি ও আকিজ বশির গ্লাস কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বৈঠকের আলোচনা থেকে জানা যায়, প্রয়োজনীয় গ্লাস সরবরাহ করার সক্ষমতা নাসির গ্লাস কোম্পানির রয়েছে। আকিজ বশির গ্লাস কোম্পানি আগামী বছর থেকে প্রয়োজনীয় মানের গ্লাস সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, নির্মাণাধীন কমলাপুর স্টেশনে দেশীয় গ্লাস ব্যবহার করা হবে। তবে স্টেশনের নিয়ন্ত্রণকক্ষের আগুন প্রতিরোধক গ্লাস আমদানি করা হবে, নাকি দেশীয় গ্লাস ব্যবহার করা হবে—এ বিষয়ে আরও আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া পরবর্তীতে মেট্রোরেলের যত স্টেশন ও ভবন নির্মাণ করা হবে, সেগুলোতে দেশীয় গ্লাস লাগানো হবে।

এমআরটি লাইন-৬-এর নির্মাণকাজ তদারকের দায়িত্বে আছে জাপানের নিপ্পন কোই। নির্মাণকাজের ঠিকাদারও জাপানি। ডিএমটিসিএলের বৈঠকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোইকে দেশীয় গ্লাস ব্যবহারের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে নকশা বা দরপত্র দলিলে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে তাও করার কথা বলা হয়েছে।

দেশীয় ক্যাবলে গুরুত্ব

ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে স্থাপিত ১৩২ কেভি লাইনসহ গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিক সংযোগের ক্ষেত্রে বিদেশি তার (ক্যাবল) ব্যবহার করা হয়েছে। আর স্টেশন ও ভবনের ওয়্যারিং দেশীয় বিআরবি ক্যাবল দিয়ে করা হয়েছে। তবে এখন থেকে স্টেশনসহ অন্যান্য অবকাঠামোর পাশাপাশি হাইভোল্ডেজ লাইনে দেশীয় তার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের এমডি, কর্মকর্তা, পরামর্শক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে ক্যাবল তৈরির কারখানা ইতিমধ্যে পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রকল্পে কর্মরত একাধিক প্রকৌশলীর মতে, গ্লাস, তার, রড, সিমেন্টসহ মেট্রোরেলে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জাম বাংলাদেশেই তৈরি করা সম্ভব। এত দিন এর চাহিদা ছিল না বলে দেশীয় কোম্পানিগুলো এতে আগ্রহ দেখায়নি। ভবিষ্যতে পাঁচটি মেট্রোরেলের লাইন হবে। সে ক্ষেত্রে চাইলে অনেক সরঞ্জামই দেশে তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা বেঁচে যাবে। আমদানিতে যে সময় ব্যয় হতো, তা সাশ্রয় হবে। প্রকল্পের খরচও কমবে।

ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা বলেন, ভারত শুরুতে অন্যান্য দেশ থেকে সরঞ্জাম আমদানি করত। এখন দেশটিতে একসঙ্গে অনেকগুলো মেট্রোরেল লাইনের নির্মাণকাজ চলমান। এখন দেশটিতে স্থানীয়ভাবেই বেশির ভাগ সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়। এমনকি তারা এখন মেট্রোরেলের সংকেত ব্যবস্থাসহ নানা সরঞ্জাম রপ্তানি পর্যন্ত করছে।

ঢাকার মেট্রোরেল পরিকল্পনা

২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এর মধ্যে এমআরটি লাইন-৬-এ এখন মেট্রোরেল চলছে। বাস্তবায়নাধীন আছে এমআরটি লাইন-১, এমআরটি লাইন-৫ (নর্দান রুট) ও এমআরটি লাইন-৫ (সাউদার্ন রুট)। এমআরটি লাইন-২ ও এমআরটি লাইন-৪ প্রকল্প এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, ছয়টি লাইন মিলে উড়াল ও পাতাল পথে মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ১২৮ কিলোমিটার। উড়াল পথের স্টেশন হবে ৫১ টি। পাতাল স্টেশন ৫৩ টি। বিভিন্ন স্থানে একটি লাইনের সঙ্গে অন্যটির সংযোগ তৈরি হবে। সবগুলো লাইন মিলে দিনে ৪৭ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে মেট্রোরেল।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেলের নির্মাণকাজে দেশীয় সরঞ্জামের ব্যবহার বাড়ানো হলে রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হয়ে যাবে। যত দিন যাবে, মেট্রোরেলের স্থাপনা পুরোনো হবে। রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। বারবার বিদেশ থেকে সরঞ্জাম আমদানি করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ছাড়া বাড়তি ব্যয়ের বোঝা তো আছেই। দেশীয় সরঞ্জামের ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে স্থানীয় শিল্পকেও সহায়তা করা হবে।

আরও পড়ুনমেট্রোরেলের আয়ে ঋণের কিস্তির টাকা উঠছে না০৬ আগস্ট ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ট র র ল ল ইন ন র ম ণ দ শ য় গ ল স ব যবহ র র ব যবহ র ব ড় ন র দ শ য় সরঞ জ ম স দ ধ ন ত হয় সরঞ জ ম র ব ব যবহ র কর সরঞ জ ম ব ব যবহ র র কর মকর ত অন য ন য প রকল প ব যবস থ কমল প র ল ইন র ক য বল র ওপর সরক র আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম নগরে নেতৃত্বশূন্য যুবদল, হতাশ তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা

গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের কমিটি। এক বছর পার হলেও নতুন কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে নগরে সাংগঠনিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে দলটি। কমিটি না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

নেতা-কর্মীরা জানান, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কমিটি থাকলে দলের প্রার্থীদের জন্য ওয়ার্ড, থানা কমিটিসহ তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণা চালানো সহজ হতো। এখন কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে।

দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগেই কমিটি ঘোষণার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয় নেতাদের পছন্দের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিটি গঠন করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র।

২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেনকে সভাপতি ও মোহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর চার মাসের মাথায় ঘোষণা করা হয় ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকে নেতৃত্বহীন অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল।

২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেনকে সভাপতি ও মোহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর চার মাসের মাথায় ঘোষণা করা হয় ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকে নেতৃত্বহীন অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল।

কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মহানগর যুবদলের শীর্ষ দুই পদের জন্য প্রার্থীদের রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা নেওয়া হয়। পদ পেতে আগ্রহী অর্ধশতাধিক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা দেন। প্রার্থীরা এতে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রামে নিজের ভূমিকা–সম্পর্কিত তথ্য উল্লেখ করেছেন। পরের মাসের শেষের দিকে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।

আহ্বায়ক পদ পেতে রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা দেওয়া কয়েকজন হলেন নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ইকবাল হোসেন ও সাবেক সহসভাপতি শাহেদ আকবর প্রমুখ।

সদস্যসচিব পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন নগর যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এর মধ্যে এমদাদুল হককে গত ১২ জুলাই দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে তিনি দাবি করেছেন, পদপ্রত্যাশী হওয়ায় মিথ্যা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। কমিটির শীর্ষ পদের জন্য আরও আলোচনায় আছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ। নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পদে না থাকলেও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সামনেও করব।’

নির্বাচনের আগেই কমিটি আসবে। সৎ, ত্যাগী ও দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন হবে।—মীর হেলাল উদ্দীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক, বিএনপি

নগর যুবদলের তৃণমূল পর্যায়ের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, বর্তমানে কোনো কমিটি না থাকলেও তাঁরা দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু সাংগঠনিক কাজকে এগিয়ে নিতে নেতৃত্বের প্রয়োজন। বিশেষ করে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে নেতৃত্ব থাকা দরকার। কমিটি থাকলে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষের প্রার্থীর জন্য ভোট চাইতে সুবিধা হবে। এরই মধ্যে বিএনপির একটি সহযোগী সংগঠন উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কমিটি না থাকায় যুবদল পিছিয়ে রয়েছে।

আগামী সংসদ নির্বাচনে দলকে এগিয়ে রাখতে নির্বাচনের আগে কমিটি ঘোষণা করা দরকার জানিয়ে নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি শাহেদ আকবর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে কমিটি থাকলে দলের কাজ আরও গতিশীল হবে।’

নগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচন যেহেতু কয়েক মাস পরে। আশা করা যায় এর আগেই কমিটি ঘোষণা হতে পারে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই কমিটি আসবে। সৎ, ত্যাগী ও দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন হবে।’

জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কমিটির যাচাই-বাছাই প্রায় শেষ। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে শিগগিরই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। আরও কয়েকটি জেলার কমিটিও পরিকল্পনায় রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ