জাতীয় পার্টিতে (জাপা) জি এম কাদেরের বিরোধী অংশের নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ডেকেছেন। আগামী শনিবার রাজধানীর গুলশান এলাকার একটি মিলনায়তনে এই সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।

জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী এই সম্মেলনসহ পুরো প্রক্রিয়াকে ‘বেআইনি’ এবং ‘গঠনতন্ত্রবিরোধী’ বলে উল্লেখ করেছেন।
গত ৩০ জুলাই ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো.

নুরুল ইসলাম এক আদেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন, যা পরবর্তী ধার্য তারিখ আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে গঠনতান্ত্রিক পন্থায় সম্মেলন করে দলের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হয়েছেন জি এম কাদেরের বিরোধী অংশ। সম্মেলন আয়োজনের মূল ভূমিকায় আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সঙ্গে আছেন জ্যেষ্ঠ দুই নেতা এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নু।

প্রসঙ্গত, জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ প্রেসিডিয়াম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ২৮ জুন বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে ১৬ জুন জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি সম্মেলনের জন্য মিলনায়তনের বরাদ্দ না পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। এর বিরোধিতা করে জ্যেষ্ঠ নেতাদের ওই অংশটি ২৮ জুনই সম্মেলন করার ঘোষণা দেয়। এমনকি জি এম কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান ও রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব পদে প্যানেল দেওয়ার ঘোষণা দেন। এখান থেকেই বিরোধের শুরু হয় এবং তা দিনে দিনে আরও প্রকট হয়ে আদালত পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। এখন জি এম কাদেরের বিরোধী অংশটি সম্মেলন করতে যাচ্ছে।
জি এম কাদেরের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরপর আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেছে জি এম কাদেরের বিরোধী অংশ। সেই সঙ্গে জি এম কাদের যে নেতাদের বহিষ্কার করেছিলেন, তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয় তারা।

আরও পড়ুনআনিসুল ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান’ হয়ে বহিষ্কৃতদের করলেন পুনর্বহাল০৫ আগস্ট ২০২৫

জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পার্টির চেয়ারম্যান যাঁদের বহিষ্কার করেছেন, তাঁরা আদালতের আদেশ অনুযায়ী এখনো বহিষ্কৃতই আছেন। যেহেতু দলে তাঁদের প্রাথমিক সদস্যপদ নেই, সেহেতু তাঁরা প্রেসিডিয়ামের সভা ডাকতে এবং সভায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না। আর চেয়ারম্যানের অনুমোদন ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করার বিধানও গঠনতন্ত্রে নেই। পুরো প্রক্রিয়াই বেআইনি এবং গঠনতন্ত্রবিরোধী।’

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘পল্লীবন্ধু পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কথা বলেন শামীম হায়দার। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সময় সরকারি মদদে জাতীয় পার্টিকে খণ্ডিত করা হয়েছে। কিন্তু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শে জাতীয় পার্টি কখনো দুর্বল হয়নি। আজও জি এম কাদেরের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিটি ইউনিট এবং নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা ঐক্যবদ্ধ আছে।’

এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় পার্টি জানিয়েছে, মতবিনিময় অনুষ্ঠানে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, আলমগীর সিকদার, শামসুন নাহার বেগম, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল, হুমায়ুন খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির চার অংশ এক মঞ্চে, নেই জিএম কাদেরের জাপা১৪ জুলাই ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এম ক দ র র ব র ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যানকে নিয়োগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ২০২৫ মেয়াদের কার্যনির্বাহী পরিষদের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এইচএম মোশারফ হোসেন।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান এ পদে অধ্যাপক মোশারফকে মনোনীত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে ধরা ঢাবি হল সংসদ নেতাসহ ৬ শিক্ষার্থী

ঢাবি উপাচার্য-প্রক্টরসহ ৩ জনকে আইনি নোটিশ

নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে, ডাকসু গঠনতন্ত্রের ৬(এ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধ্যাপক মোশারফকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন উপাচার্য।

ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটিতে পদের সংখ্যা ৩০টি। এর মধ্যে ২৮টি পদে নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের থেকে নেতৃত্ব বাছাই করা হয়। বাকি দুটি পদের মধ্যে পদাধিকারবলে উপাচার্য সভাপতি হন এবং কোষাধ্যক্ষ পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে মনোনীত করেন উপাচার্য।

নির্বাচিত পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয় ভিপি (সহ-সভাপতি), জিএস (সাধারণ সম্পাদক) ও এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদ। এরপর ১২টি সম্পাদকীয় পদ রয়েছে। বাকি ১৩টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদ। 

এবারের নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত সাদিক কায়েম ভিপি, এস এম ফরহাদ জিএস ও মহিউদ্দীন খান এজিএস পদে জয়ী হন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যানকে নিয়োগ