সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬ বছরের জুলুমের বিরুদ্ধে লড়ে তাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

সাইফুল হক বলেছেন, ‘‘এত বড় অভ্যুত্থান পৃথিবীর আর কোনো দেশে নজির নেই। এ দেশের বৃদ্ধ পিতা-মাতারাও রাস্তায় নেমে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। মানুষ জীবন দিতে রাস্তায় এসেছেন। তাদের পরাজিত করার শক্তি কারো ছিল না। সব শেষে শেখ হাসিনাকে আমরা পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি।’’

ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে টাঙ্গাইল শহরে জুলাই যোদ্ধাদের অংশ গ্রহণে ‘ফিরে দেখা রক্তঝরা জুলাই-আগস্ট, প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি’ শীর্ষক কথকতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

নিজেকে ড.

ইউনূস ও হাসিনার দ্বন্দ্বের বলির পাঠা বলে দাবি করলেন টিউলিপ

পরিবারসহ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু সোমবার

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘হাসিনা দিনের আলোতে লাখ লাখ নেতাকর্মীকে বিপদে ফেলে পালিয়েছে। ১০০ বছর আগে লক্ষণ সেন এভাবে পালিয়েছিলেন। হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, বায়তুল মোকারম মসজিদে খতিব ও ইমাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ অনেক বড় বড় নেতা পালিয়েছেন।’’

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মব জাস্টিস দমনে সফলতার কথা জানান তিনি।  সাইফুল হক বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার বলছেন, তারা মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করছেন। তবে আমরা সকল রাজনৈতিক দল তাদের সমর্থন দেয়ার পরও কেন তিনি নির্বাচন দিতে পারছেন না। আমরা ধৈর্য ধরছি একটি পরিবর্তনের জন্য।’’ 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশীখা জামালী, আকবর খান, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক আজাদ খান ভাসানী, ক্রীড়া সংগঠক আলী ইমাম তপন, জেলা ভাসানী যুবশক্তি পার্টির সভাপতি খোরশেদ আলম, বিপ্লবী যুব মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম অনল, জেলা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান পিপলু।

অনুষ্ঠানে জেলা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি সাইফুর রেজা মামুনের সভাপতিত্বে অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/কাওছার/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য কর ছ

এছাড়াও পড়ুন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র‍্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।

পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।

কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগে

পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগে

বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ