কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কে বন্ধ হলো মরণফাঁদ খিলা ইউটার্ন
Published: 21st, September 2025 GMT
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের খিলা দক্ষিণ বাজারের দীর্ঘদিনের ‘মরণফাঁদ’ হিসেবে পরিচিত সেই ইউটার্ন অবশেষে বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সেনাবাহিনী ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ইউটার্নটি বন্ধ করে দেয়। বিকল্প হিসেবে এখন থেকে সব যানবাহনকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার সামনে লুধুয়া পেট্রোল পাম্পের সামনে থাকা ইউটার্ন ব্যবহার করতে হবে। দুর্ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
আরো পড়ুন:
খুলনায় যানজট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন
স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী নিহত
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ ইউটার্নকে ঘিরে ভয়াবহ সব দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল উল্টো পথে যানবাহনের প্রবেশ ও বাহির। গত তিন বছরে এখানে অন্তত ৫৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন যাত্রী, পথচারী ও চালক। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ, যাদের মধ্যে অনেকে স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খিলা বাজারে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য পরিবহন ও প্রাইভেট গাড়ি উল্টো পথে ইউটার্ন অতিক্রম করত। ফলে উভয়মুখী দ্রুতগতির যানবাহন হঠাৎ বিভ্রান্ত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতো। ফোর লেন উন্নয়নের পর থেকে ইউটার্নটি যেন দুর্ঘটনার ‘মৃত্যুকূপে’ পরিণত হয়েছিল। চলতি বছরের সাড়ে আট মাসে এখানে অন্তত ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সবশেষ গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। স্থানীয় খিলা ইউনিয়নের উল্লাপাড়া গ্রামের মো.
ঘটনার পর দিন বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসকের মাসিক উন্নয়ন সভায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার, পুলিশ সুপার, সেনাবাহিনীর ২৩ বীর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান, সড়ক ও জনপথের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আদনান ইবনে হাসান এবং লাকসাম হাইওয়ে থানার ওসি আদেল আকবরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দুর্ঘটনা রোধে অবিলম্বে খিলা দক্ষিণ বাজারের ইউটার্ন বন্ধ করে দেওয়া হবে। সিদ্ধান্তের পর শনিবারই সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ ও সওজ কর্মকর্তারা গিয়ে তা বাস্তবায়ন করেন।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, “বিপজ্জনক ওই ইউটার্নে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার মূল কারণ উল্টো পথে যানবাহন চলাচল। এটি বন্ধ হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।”
জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বলেন, “ইউটার্নটি যেহেতু ঝুঁকিপূর্ণ, তাই এটি বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে।”
সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আদনান ইবনে হাসান বলেন, “খিলা দক্ষিণ বাজারের ইউটার্ন বন্ধের সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনের উন্নয়ন সভাতেই গৃহীত হয়। সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ ও সওজ কর্মকর্তারা যৌথভাবে পরিদর্শন শেষে এটি আপাতত বন্ধ ঘোষণা করেছেন। আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। সবাইকে সড়ক আইন মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
স্থানীয়দের মতে, বহু প্রাণ কেড়ে নেওয়া ‘মরণফাঁদ’ ইউটার্নটি বন্ধ হওয়ায় এখন দুর্ঘটনা ও যানজট অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/রুবেল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন ন হত কর মকর ত র দ র ঘটন র ইউট র ন হ ইওয়
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কে বন্ধ হলো মরণফাঁদ খিলা ইউটার্ন
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের খিলা দক্ষিণ বাজারের দীর্ঘদিনের ‘মরণফাঁদ’ হিসেবে পরিচিত সেই ইউটার্ন অবশেষে বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সেনাবাহিনী ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ইউটার্নটি বন্ধ করে দেয়। বিকল্প হিসেবে এখন থেকে সব যানবাহনকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার সামনে লুধুয়া পেট্রোল পাম্পের সামনে থাকা ইউটার্ন ব্যবহার করতে হবে। দুর্ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
আরো পড়ুন:
খুলনায় যানজট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন
স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী নিহত
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ ইউটার্নকে ঘিরে ভয়াবহ সব দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল উল্টো পথে যানবাহনের প্রবেশ ও বাহির। গত তিন বছরে এখানে অন্তত ৫৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন যাত্রী, পথচারী ও চালক। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ, যাদের মধ্যে অনেকে স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খিলা বাজারে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য পরিবহন ও প্রাইভেট গাড়ি উল্টো পথে ইউটার্ন অতিক্রম করত। ফলে উভয়মুখী দ্রুতগতির যানবাহন হঠাৎ বিভ্রান্ত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতো। ফোর লেন উন্নয়নের পর থেকে ইউটার্নটি যেন দুর্ঘটনার ‘মৃত্যুকূপে’ পরিণত হয়েছিল। চলতি বছরের সাড়ে আট মাসে এখানে অন্তত ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সবশেষ গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। স্থানীয় খিলা ইউনিয়নের উল্লাপাড়া গ্রামের মো. শাহ আলম (৫৫) ও বাদল (১৮) নামে দুই ব্যক্তি নিহত হন। তারা ইজিবাইকের যাত্রী ছিলেন। হিমাচল পরিবহনের একটি বাস ইজিবাইকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে তারা প্রাণ হারান। এতে আরো দুইজন আহত হন।
ঘটনার পর দিন বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসকের মাসিক উন্নয়ন সভায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার, পুলিশ সুপার, সেনাবাহিনীর ২৩ বীর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান, সড়ক ও জনপথের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আদনান ইবনে হাসান এবং লাকসাম হাইওয়ে থানার ওসি আদেল আকবরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দুর্ঘটনা রোধে অবিলম্বে খিলা দক্ষিণ বাজারের ইউটার্ন বন্ধ করে দেওয়া হবে। সিদ্ধান্তের পর শনিবারই সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ ও সওজ কর্মকর্তারা গিয়ে তা বাস্তবায়ন করেন।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, “বিপজ্জনক ওই ইউটার্নে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার মূল কারণ উল্টো পথে যানবাহন চলাচল। এটি বন্ধ হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।”
জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বলেন, “ইউটার্নটি যেহেতু ঝুঁকিপূর্ণ, তাই এটি বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে।”
সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আদনান ইবনে হাসান বলেন, “খিলা দক্ষিণ বাজারের ইউটার্ন বন্ধের সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনের উন্নয়ন সভাতেই গৃহীত হয়। সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ ও সওজ কর্মকর্তারা যৌথভাবে পরিদর্শন শেষে এটি আপাতত বন্ধ ঘোষণা করেছেন। আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। সবাইকে সড়ক আইন মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
স্থানীয়দের মতে, বহু প্রাণ কেড়ে নেওয়া ‘মরণফাঁদ’ ইউটার্নটি বন্ধ হওয়ায় এখন দুর্ঘটনা ও যানজট অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/রুবেল/বকুল