‘৫ দফা দাবি মেনে নিন, অন্যথায় আবার গণ–আন্দোলনের সূচনা হবে’
Published: 10th, October 2025 GMT
জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবি করায় বলা হচ্ছে, আমরা নাকি নির্বাচন চাই না। অথচ এক বছর আগেই ২০০ আসনে আমরা প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছি। বড় দলটির একটি আসনে এখানো ১০ জনের বেশি প্রার্থী কাজ করছেন। প্রার্থী ঘোষণা করে দেখেন না, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।’
আজ শুক্রবার দুপুরে সিলেটে জামায়াতের কেন্দ্রঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত গণমিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এহসানুল মাহবুব এ কথা বলেন। নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে সিলেট মহানগর জামায়াত।
অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে উল্লেখ করে এহসানুল মাহবুব আরও বলেন, ‘কেউ কেউ পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) বোঝেন না। সময় গেলে এটাও বুঝবেন। কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) পদ্ধতির মতো পিআর পদ্ধতিও এ দেশে কার্যকর এবং গ্রহণযোগ্য হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানসহ জামায়াত ঘোষিত ৫ দফা দাবি মেনে নিন। অন্যথায় আবার গণ–আন্দোলনের সূচনা হবে।’
আরও পড়ুন‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই, উপদেষ্টা অনেকের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ: গোলাম পরওয়ার২ ঘণ্টা আগেএহসান মাহবুব বলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ভুল বোঝানো হচ্ছে। অথচ পিআর পদ্ধতি হলে বেশি ভোট কাস্ট হবে। মনোনয়ন–বাণিজ্য বন্ধ হবে। জনগণের ভোটের সঠিক মূল্যায়ন থাকবে। তাই আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। স্বৈরশাসকের সঙ্গে থাকা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। নির্বাচন সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না।
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে কোর্ট পয়েন্ট থেকে গণমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা মোড়ে গিয়ে সমাপ্ত হয়। মিছিলে সিলেট মহানগর ও বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড-ইউনিটের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। সহকারী সেক্রেটারি জাহেদুর রহমান চৌধুরী ও মাওলানা ইসলাম উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য সিলেট জেলার আমির হাবিবুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন জেলার নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, মহানগরের নায়েবে আমির নূরুল ইসলাম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান আহমদ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সিলেট মহানগর সভাপতি জামিল আহমদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর সভাপতি শাহীন আহমদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির সভাপতি তারেক মনোয়ার প্রমুখ।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে খেলাফত মজলিস সিলেট মহানগর শাখার উদ্যোগে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানসহ ৬ দফা দাবিতে গণমিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে সিলেট নগরের বন্দরবাজার থেকে গণমিছিল শুরু হয়ে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা এলাকায় গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সিলেট মহানগরী সভাপতি তাজুল ইসলাম হাসানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদু হান্নান। মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুরে মাওলার সঞ্চালনায় গণমিছিল ও সমাবেশে বক্তব্য দেন মহানগরের সহসভাপতি শাহ আশিকুর রহমান, সিলেট জেলার সহসভাপতি মুখলিসুর রহমান, মহানগরের সহসভাপতি শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলয়াস, আবদুল হান্নান তাপাদার, মুহাম্মদ ফয়জুল হক, ইমদাদুল হক নোমানী, জেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক দিলওয়ার হোসাইন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ র আইন গণম ছ ল র রহম ন ম হব ব ইসল ম এহস ন
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে এফসির সদর দপ্তরে আত্মঘাতী হামলা, বাহিনীর তিন সদস্যসহ ছয়জন নিহত
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের পেশোয়ারে আজ সোমবার সকালে আধা সামরিক বাহিনী ফেডারেল কনস্টাব্যুলারির (এফসি) সদর দপ্তরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এতে এফসির তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
পেশোয়ার শহরের সাদ্দার এলাকার ব্যস্ততম সড়কে সকাল আটটার দিকে এ আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, গায়ে চাদর মুড়িয়ে এক সন্ত্রাসী এফসি সদর দপ্তরের গেটের সামনে আসেন এবং আত্মঘাতী বোমা হামলা চালান। এর কয়েক সেকেন্ড পর আরও দুই সন্ত্রাসী সদর দপ্তর প্রাঙ্গণে ঢোকার চেষ্টা করেন।
পেশোয়ার ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ কর্মকর্তা মিয়া সাইদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে তিন সন্ত্রাসী সদর দপ্তরে হামলার চেষ্টা করেছিল। একজন গেটে আত্মঘাতী হয়, আর দুজনকে এফসি সদস্যরা গুলি করে হত্যা করেছেন।
মিয়া সাইদ আহমদ আরও বলেন, এ হামলায় এফসির তিন সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুজন। তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হামলার পরে সদর দপ্তরের বাইরে অভিযান চালানো হয়েছে। এফসি সদস্যদের সতর্কতার কারণে সন্ত্রাসীদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুনখাইবার পাখতুনখাওয়ায় ১৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি শাহবাজের১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ‘সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেওয়ায়’ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সেরে ওঠার প্রার্থনা করেছেন। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এফসির সদর দপ্তর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সেনানিবাসের কাছাকাছি অবস্থিত। এখানে ব্যারাক, হাসপাতাল ও আবাসিক কোয়ার্টার রয়েছে। হামলার সময় সেখানে একটি অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
এই হামলার পর লেডি রিডিং হাসপাতাল এবং খাইবার টিচিং হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। ওই দুই হাসপাতালে আহত ১২ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আজকের ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে পেশোয়ারের নিরাপত্তা স্থাপনায় দ্বিতীয় বৃহৎ সন্ত্রাসী হামলা। ২০২৩ সালে পেশোয়ারের পুলিশ লাইনস এলাকায় একটি মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় ৮৪ জন নিহত হয়েছিলেন।