প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক বছর পর একটি রিয়েল ইলেকশন হবে। আগে তো আমরা দেখেছি সব ফেক ইলেকশন, হাসিনার আমলের ১৬ বছর পুরোটা আমরা ফেক ইলেকশন দেখেছি। আমরা সেই জায়গা থেকে সরে এসে কীভাবে সুন্দর নির্বাচন হয়, তা দেখাব। আমরা মনে করি, এবার বাংলাদেশের অন্যতম একটি সুন্দর নির্বাচন হবে।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রায়ই সভা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রধান উপদেষ্টার অফিস, নির্বাচনে কমিশন কী কী প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা জানাচ্ছে। নির্বাচনের আমেজ সব জায়গায় দেখছি। মানুষের মধ্যেও নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যখন আগামী দুই–তিন সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা শুরু করবে, তখন পরিস্থিতি অন্য রকম হয়ে যাবে।’

ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘আপনারা জানেন, ১৫ অক্টোবর জুলাই সনদ সই হবে। এরপর দেশের সমস্ত দল নির্বাচনের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেবে। ইতিমধ্যে দুয়েকটি দল তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। বাংলাদেশের সুস্থ ধারার রাজনীতি এর মাধ্যমে নবযাত্রা শুরু করবে। বাংলাদেশে আগের মতো হানাহানির রাজনীতি আর থাকবে না। রাজনৈতিক দলগুলো দখন জুলাই সনদে সই করবে, তখন বোঝা যাবে, তারা অনেক বিষয়েই ঐকমত্যে এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলো পিআর ইস্যুটা ঠিক করবে, এর ডিসিশন কী হবে।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারে যাঁরা আছেন, তাঁরা খুবই ডেডিকেটেড। গত ১৪ মাসে তাঁরা খুব ডেডিকেটেড ওয়েতে দেশকে সার্ভ করেছেন। তাঁরা খুবই দেশপ্রেমী এবং তাঁরা নিজেদের সর্ব্বোচ্চটা দিয়েছেন।’

ইসরায়েলের কারাগার থেকে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, শহিদুল আলমের মুক্তি ও ইসরায়েল থেকে তাঁর প্রত্যাবর্তনে সহায়তার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

মতবিনিময় সভায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি নওয়াব আলী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সভাপতি এম আইয়ুব আলীসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর

শহরের নিতাইগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি। প্রথমে সে জরুরী বিভাগে থাকা ডাক্তারকে দেখান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি ডাক্তারের কাছে।

কার্ডিওলজি ডাক্তার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করে এসে ডাক্তারের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৪ নভেম্বর  (সোমবার) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।

মৃত্যু ব্যক্তিটির নাম আব্দুল জব্বার। তিনি ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব সস্তাপুর এলাকায় অস্থায়ী বাসিন্দা। তার গ্রামের বাসা ময়মনসিংহ জেলায়। পেশায় তিনি ছিলেন মাছ বিক্রেতা।

এদিকে তার মৃত্যুবরণ হাসপাতালে এক প্রকার হৈচৈ পড়ে যায়। কারণ, তার সাথে কোন স্বজন ছিলো না। ফলে কার কাছে লাশটি বুুঝিয়ে দিবেন সেই লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফলে শুরু হয় লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান। কিন্তু স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি রাখা হয় হিমঘরে।

গত দুইদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান করা হয়। কিন্তু কোনভাবেই স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি অজ্ঞাতভাবে লাফন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে এ আবেদনটি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন হাসপাতালের অফিস সহায়ক সাউদ নূরে শফিউল কাদের। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে যাওয়ার পর পরই তাকে হাসপাতাল থেকে কল করে বলা হয়, ‘লাশটির স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত হাসপাতালে চলে আসুন।’

এদিকে জরুরী বিভাগের পাশে লাশকাটা ঘরের সামনে অশ্রুসিক্ত নয়নে দাঁড়িয়ে আছে মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আমির হামজা। তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তারা পিতা মারা গেছে। একদম জলজ্যান্ত মানুষটি বাসা থেকে অনেকটাই সুস্থভাবেই বেড়িয়ে আসলেন, অথচ তিনি আজ মৃত। এসব ভেবেই তিনি অনেকটাই দুঃখে শোকে কাতর। এমন পরিস্থিতিতে তার বক্তব্য নেয়ার সুযোগ ছিলো না।

তবে এ বিষয়ে মৃত আব্দুল জব্বারের চাচাতো ভাই মো: মফিজুল ইসলাম বলেন, যথারীতি ২৪ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসেন আব্দুল জব্বার। তার পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাইনি। আমরা তাকে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছি।

কিন্তু পাই নি। আজ সকালে আমাদের এলাকারই এক মহিলা বলে, ওনাকে নাকি এ হাসপাতালে দেখছে। তার কথা শুনে আমরা এ হাসপাতালে এসে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারি, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে তিনি মারা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহে নিয়ে যাবো এবং ওখানে দাফন করবো।

এ ব্যাপারে হাসপাতালটির ওয়ার্ড মাষ্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তিনি প্রথমে জরুরী বিভাগে আসেন। সেখান থেকে তাকে ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি স্যারের কাছে পাঠানো হয়। স্যার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু হঠাৎ করেই স্যারের রুমে মাটিতে পড়ে যান এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, আমরা তার স্বজনদের খোঁজ পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাই নি। আজ তাই ডিসি স্যারের কাছে লিখিত আবেদন নিয়ে পাঠিয়েছিলা যে, এ লাশটি এখন কি করবো। তার নির্দেশনা আসলে আমরা তাকে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফন করতাম।

আল্লাহ্’র রহমতে এর আগেই তার স্বজনরা চলে আসছে। আমরা মৃত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য ও ছবির সাথে মিলিয়ে এবং যাচাই করে এ স্বজনদের হাতে লাশটি বুঝিয়ে দিচ্ছি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর
  • হতাশায় ডুবে থাকলে সম্ভাবনা দেখা যায় না
  • সম–অধিকারের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সমঝোতা করতে চাইলে স্বাগত জানাই: মামুনুল হক
  • নারীর ভোট মানেই পরিবর্তনের ঘোষণা: এমরান সালেহ
  • ময়মনসিংহে ক্লিনিকে অভিযানে কারাদণ্ড-জরিমানা