ভারতে আফগান দূতাবাসে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সংবাদ সম্মেলনে কোনো নারী সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকে তোলপাড় শুরু হয়েছে দিল্লির রাজনীতিতে। বিতর্কের মুখে শনিবার একটি বিবৃতি দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিষয়টিতে তাদের কোনো হাত নেই।

ছয় দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতে এসেছেন মুত্তাকি। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর শুক্রবার দিল্লির আফগান দূতাবাসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। কিন্তু ওই সংবাদ সম্মেলনে কোনো নারী সাংবাদিককে দেখা যায়নি। 

এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, নারী সাংবাদিকদের সেখানে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে সরব হন অনেক সাংবাদিক। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। সুর চড়ায় কংগ্রেস। 

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্রগুলো মুম্বাইতে আফগানিস্তানের কনসাল জেনারেলের নির্বাচিত সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল, যারা আফগান মন্ত্রীর সফরের জন্য দিল্লিতে অবস্থান করছিলেন। আফগান দূতাবাসের এলাকা ভারত সরকারের এখতিয়ারভুক্ত নয়।

লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “মাননীয় মোদি, প্রকাশ্য মঞ্চে আপনার নারী সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে দেওয়া হল। যার অর্থ ভারতের প্রত্যেক নারীকে এটাই বললেন যে আপনি তাদের হয়ে দাঁড়াতে ব্যর্থ।” 

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে এই ঘটনা নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন। তিনি লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি, তালেবান প্রতিনিধির ভারত সফরে সাংবাদিক বৈঠকে নারী সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হল না। এই বিষয়ে দয়া করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন।” 

বিতর্ক শুরু হতেই শনিবার বিবৃতি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছে, “গতকাল (শুক্রবার) দিল্লিতে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের  কোনো হাত নেই।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট রমন ত র আফগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাফল্য তোমাকে অসুখীও করে তুলতে পারে: ইয়ামালকে পরামর্শ নাদালের

সাফল্য কে না চায়! কিন্তু সেই সাফল্যের বিপদও আছে। সবার নজর চলে যায় সফল মানুষটার দিকে। তখন একটু পা হড়কালেই সমস্যা। আর ভুল পথে হাঁটলে সাফল্যের খ্যাতিই হয়ে উঠতে পারে বিপদের কারণ। কিংবদন্তি স্প্যানিশ টেনিস তারকা রাফায়েল নাদালের তাই পরামর্শ, সঠিক পথে হাঁটো, সঠিক মানুষদের পাশে রাখো।

ভাবছেন, পরামর্শটা কাকে দিলেন নাদাল? দিয়েছেন তাঁর দেশেরই এক সফল মানুষকে, বয়সের কারণে যাঁর আসলে এখন ভালো পরামর্শের খুব প্রয়োজন। লামিনে ইয়ামাল তাঁর নাম।

বয়স মাত্র ১৮। এ বয়সে ইয়ামাল এত কিছু পেয়েছেন, যা অনেকের সারাজীবনের স্বপ্ন! খেলছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব বার্সেলোনায়। এরই মধ্যে তিনি দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজন। ক্লাবের হয়ে এরই মধ্যে লা লিগা জিতেছেন দুবার, সঙ্গে একটি করে কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপ। জাতীয় দল স্পেনের হয়ে জিতেছেন ইউরো।

বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন তিনি। ব্যালন ডি’অরে একবার রানারআপ হয়েছেন, দুবার জিতেছেন সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার কোপা ট্রফি। কিন্তু এই সাফল্যের পাশাপাশি মাঠে ও মাঠের বাইরে সাম্প্রতিক কালে তাঁকে নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। কখনো প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, কখনো বিলাসী পার্টিতে উদ্দাম, আবার কখনো আর্জেন্টাইন গায়িকা নিকি নিকোলের সঙ্গে প্রেম-ঘোরাঘুরি, ইয়ামালকে নিয়ে কত গুঞ্জন!

এর মধ্যে আবার চোট। ২০২৫-২৬ মৌসুমের বড় অংশ কাটাতে হয়েছে কুঁচকির চোটে। তবে ফেরাটা ছিল প্রত্যাশিত। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১২ ম্যাচে ৬ গোল, ৮ অ্যাসিস্ট। যেন বুঝিয়ে দিলেন, মাঠের বাইরে যত আলোচনাই হোক, মাঠে তিনি দিন দিন ধারালোই হচ্ছেন। কিন্তু এই ধার কমে যেতে পারে মাঠের বাইরের ঘটনায় বেশি জড়িয়ে পড়লে। নাদাল তাই স্বদেশি তারকাকে দিয়ে রাখলেন সতর্কবার্তা—ফর্ম সামলানো সহজ, খ্যাতি সামলানো কঠিন। সব সময় রাশ টেনে ধরে রাখতে হবে নিজের।

আরও পড়ুনলিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ, বিশ্বকাপ, ব্যালন ডি’অর—সব জিততে চান ইয়ামাল২১ নভেম্বর ২০২৫

মোভিস্টারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইয়ামাল প্রসঙ্গ আসতেই নাদাল বলেছেন, ‘তার চারপাশে এমন সব মানুষ থাকা দরকার, যারা সত্যিই তাকে সমর্থন করবে। সফল মানুষেরা যেসব কথা শুনতে পছন্দ করে না, সেগুলো বলার মতো বুদ্ধিমান হতে হবে ওদের। তার চারপাশে এমন মানুষ থাকা দরকার, যারা সত্যিই তার ভালো চায়। আর তার মধ্যেও সেই মানুষদের কথা শোনার ক্ষমতা থাকতে হবে। আলোয় থাকা একজন তরুণের জন্য এটা সহজ নয়। কিন্তু এটা তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

নাদাল আরও যোগ করেন, ‘তার পাশে এমন মানুষ থাকা দরকার, যারা তার উপকারে আসবে। ওরা পরিবারের মানুষ হতে পারে, কিংবা তার সতীর্থ। দেখুন, সবার বাস্তবতা আলাদা, সবার মানসিকতা আলাদা। সাফল্যের অনেক পথ আছে। কিন্তু সেই সাফল্য কে কীভাবে সামলায়, সেটাই ঠিক করে দেয় মানুষটা সুখী হবে নাকি অসুখী। কারণ, সাফল্য আর খ্যাতি একসময় আপনাকে গ্রাস করে ফেলতে পারে। আপনাকে অসুখী করে তুলতে পারে।’

আরও পড়ুনমেসির মতো হতে ইয়ামালকে যে পরামর্শ দিলেন বার্সা কোচ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইয়ামাল চাইলে নাদালের পরামর্শগুলো নিতে পারেন। কারণ, সাফল্যের যে পথে এখন তিনি হাঁটছেন, সেই পথটা অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছেন নাদাল। মাত্র ১৪ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে পা রেখেছিলেন। ১৯-এ পৌঁছানোর কয়েক দিনের মধ্যে জেতেন প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেন, উঠে যান বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ের ২ নম্বরে। কিন্তু এই খ্যাতি কখনো তাঁকে গ্রাস করতে পারেনি। নিজেকে দারুণভাবে সামলে রেখেছেন বলেই আজ নাদাল টেনিসের সর্বকালের সেরাদের একজন।

এখন ইয়ামালই ঠিক করবেন, তিনি ফুটবলে সর্বকালের সেরাদের হতে চান, নাকি কয়েক মৌসুমের তারকা হয়ে পরে হারিয়ে যাবেন!

সম্পর্কিত নিবন্ধ