কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলার জেরে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। 

শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে তালেবান যোদ্ধারা পাকিস্তানি সামরিক পোস্টে হামলা চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ব্যবহার করা হয় ভারী অস্ত্র। 
 
নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, চলতি সপ্তাহে কাবুলে পাকিস্তানি বিমান হামলার পর এই সহিংসতা শুরু হয়। তালেবান বাহিনী অভিযোগ করেছে, ইসলামাবাদ আফগান ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে তারা পাল্টা সশস্ত্র অভিযান শুরু করে। আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশে পাকিস্তানের দুটি সীমান্ত পোস্ট দখলের দাবি করেছে তালেবান।

আরো পড়ুন:

বিশ্বনাথে হুমায়ুন-লুনা অনুসারীদের সংঘর্ষ, আহত ১০

মাদারীপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫

পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সংঘর্ষের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তারা শক্ত হাতে জবাব দিয়েছেন। এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “আজ রাতে তালেবান বাহিনী কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টে গুলি চালানো শুরু করে। আমরা সীমান্তের চারটি স্থানে আর্টিলারি হামলা চালিয়ে জবাব দিয়েছি। পাকিস্তানি বাহিনী কোনো আগ্রাসন সহ্য করবে না।”

পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাল্টা হামলায় আর্টিলারি, ট্যাংক এবং হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে।

ইসলামাবাদ বিমান হামলায় সম্পৃক্ততা স্বীকার বা অস্বীকার না করলেও কাবুলকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করে। এই গোষ্ঠীটি ২০২১ সাল থেকে শত শত পাকিস্তানি সেনা হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। 

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, “পাকিস্তানের জনগণের জীবন রক্ষায় আমরা যা প্রয়োজন, তা করছি এবং করে যাব।” 

তিনি আফগানিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, তাদের ভূখণ্ড যেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার না হয়।

ইসলামাবাদভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বলেন, “টিটিপি ঘাঁটির ওপর সাম্প্রতিক হামলা এবং আফগান সরকারের নিষ্ক্রিয়তা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করেছে। পাকিস্তানের ধৈর্য শেষ হয়ে আসছিল, তাই তারা সরাসরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।”

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আফগ ন স ত ন আফগ ন স ত ন র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সাফল্য তোমাকে অসুখীও করে তুলতে পারে: ইয়ামালকে পরামর্শ নাদালের

সাফল্য কে না চায়! কিন্তু সেই সাফল্যের বিপদও আছে। সবার নজর চলে যায় সফল মানুষটার দিকে। তখন একটু পা হড়কালেই সমস্যা। আর ভুল পথে হাঁটলে সাফল্যের খ্যাতিই হয়ে উঠতে পারে বিপদের কারণ। কিংবদন্তি স্প্যানিশ টেনিস তারকা রাফায়েল নাদালের তাই পরামর্শ, সঠিক পথে হাঁটো, সঠিক মানুষদের পাশে রাখো।

ভাবছেন, পরামর্শটা কাকে দিলেন নাদাল? দিয়েছেন তাঁর দেশেরই এক সফল মানুষকে, বয়সের কারণে যাঁর আসলে এখন ভালো পরামর্শের খুব প্রয়োজন। লামিনে ইয়ামাল তাঁর নাম।

বয়স মাত্র ১৮। এ বয়সে ইয়ামাল এত কিছু পেয়েছেন, যা অনেকের সারাজীবনের স্বপ্ন! খেলছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব বার্সেলোনায়। এরই মধ্যে তিনি দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজন। ক্লাবের হয়ে এরই মধ্যে লা লিগা জিতেছেন দুবার, সঙ্গে একটি করে কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপ। জাতীয় দল স্পেনের হয়ে জিতেছেন ইউরো।

বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন তিনি। ব্যালন ডি’অরে একবার রানারআপ হয়েছেন, দুবার জিতেছেন সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার কোপা ট্রফি। কিন্তু এই সাফল্যের পাশাপাশি মাঠে ও মাঠের বাইরে সাম্প্রতিক কালে তাঁকে নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। কখনো প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, কখনো বিলাসী পার্টিতে উদ্দাম, আবার কখনো আর্জেন্টাইন গায়িকা নিকি নিকোলের সঙ্গে প্রেম-ঘোরাঘুরি, ইয়ামালকে নিয়ে কত গুঞ্জন!

এর মধ্যে আবার চোট। ২০২৫-২৬ মৌসুমের বড় অংশ কাটাতে হয়েছে কুঁচকির চোটে। তবে ফেরাটা ছিল প্রত্যাশিত। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১২ ম্যাচে ৬ গোল, ৮ অ্যাসিস্ট। যেন বুঝিয়ে দিলেন, মাঠের বাইরে যত আলোচনাই হোক, মাঠে তিনি দিন দিন ধারালোই হচ্ছেন। কিন্তু এই ধার কমে যেতে পারে মাঠের বাইরের ঘটনায় বেশি জড়িয়ে পড়লে। নাদাল তাই স্বদেশি তারকাকে দিয়ে রাখলেন সতর্কবার্তা—ফর্ম সামলানো সহজ, খ্যাতি সামলানো কঠিন। সব সময় রাশ টেনে ধরে রাখতে হবে নিজের।

আরও পড়ুনলিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ, বিশ্বকাপ, ব্যালন ডি’অর—সব জিততে চান ইয়ামাল২১ নভেম্বর ২০২৫

মোভিস্টারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইয়ামাল প্রসঙ্গ আসতেই নাদাল বলেছেন, ‘তার চারপাশে এমন সব মানুষ থাকা দরকার, যারা সত্যিই তাকে সমর্থন করবে। সফল মানুষেরা যেসব কথা শুনতে পছন্দ করে না, সেগুলো বলার মতো বুদ্ধিমান হতে হবে ওদের। তার চারপাশে এমন মানুষ থাকা দরকার, যারা সত্যিই তার ভালো চায়। আর তার মধ্যেও সেই মানুষদের কথা শোনার ক্ষমতা থাকতে হবে। আলোয় থাকা একজন তরুণের জন্য এটা সহজ নয়। কিন্তু এটা তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

নাদাল আরও যোগ করেন, ‘তার পাশে এমন মানুষ থাকা দরকার, যারা তার উপকারে আসবে। ওরা পরিবারের মানুষ হতে পারে, কিংবা তার সতীর্থ। দেখুন, সবার বাস্তবতা আলাদা, সবার মানসিকতা আলাদা। সাফল্যের অনেক পথ আছে। কিন্তু সেই সাফল্য কে কীভাবে সামলায়, সেটাই ঠিক করে দেয় মানুষটা সুখী হবে নাকি অসুখী। কারণ, সাফল্য আর খ্যাতি একসময় আপনাকে গ্রাস করে ফেলতে পারে। আপনাকে অসুখী করে তুলতে পারে।’

আরও পড়ুনমেসির মতো হতে ইয়ামালকে যে পরামর্শ দিলেন বার্সা কোচ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইয়ামাল চাইলে নাদালের পরামর্শগুলো নিতে পারেন। কারণ, সাফল্যের যে পথে এখন তিনি হাঁটছেন, সেই পথটা অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছেন নাদাল। মাত্র ১৪ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে পা রেখেছিলেন। ১৯-এ পৌঁছানোর কয়েক দিনের মধ্যে জেতেন প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেন, উঠে যান বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ের ২ নম্বরে। কিন্তু এই খ্যাতি কখনো তাঁকে গ্রাস করতে পারেনি। নিজেকে দারুণভাবে সামলে রেখেছেন বলেই আজ নাদাল টেনিসের সর্বকালের সেরাদের একজন।

এখন ইয়ামালই ঠিক করবেন, তিনি ফুটবলে সর্বকালের সেরাদের হতে চান, নাকি কয়েক মৌসুমের তারকা হয়ে পরে হারিয়ে যাবেন!

সম্পর্কিত নিবন্ধ