গাজীপুরে বাফুফেকে স্টেডিয়াম ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
Published: 12th, October 2025 GMT
গাজীপুরের জয়দেবপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে ২৫ বছরের জন্য ইজারা (লিজ) দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ–মিছিল হয়েছে। স্থানীয় খেলোয়াড়, কোচ ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতারা এ কর্মসূচি পালন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
রোববার বেলা একটার দিকে গাজীপুর প্রেসক্লাব–সংলগ্ন স্টেডিয়ামের ফটক এলাকায় মানববন্ধন করেন জেলার বিভিন্ন ক্রীড়া ক্লাব, খেলোয়াড়, কোচ ও অভিভাবকেরা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) দেশের অন্যান্য কয়েকটি স্টেডিয়ামের সঙ্গে গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামকে ২৫ বছরের জন্য ইজারা নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সম্মতি দেয়। মোট ১৫টি শর্তে স্টেডিয়ামটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। এখন এই ইজারা বাস্তবায়নের দাপ্তরিক কাজ চলছে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খান জাহিদুল ইসলাম, মহানগর ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো.
বক্তারা জানান, সব ধরনের খেলার জন্য শহীদ বরকত স্টেডিয়ামটি ব্যবহৃত হয়। সেখানে নিয়মিত বিভিন্ন ক্লাব বিভিন্ন ধরনের খেলা আয়োজন করে। তাই এই স্টেডিয়াম গাজীপুরের ক্রীড়া চর্চা ও উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্টেডিয়ামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত।
গাজীপুর জেলা ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খান জাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, শুধু ফুটবল খেলার জন্য বাফুফে এই মাঠ ইজারা নিয়েছে। এতে অন্যান্য খেলার সুযোগ কমে যাবে।
গাজীপুর মহানগর ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত ক্রীড়াবান্ধব সিদ্ধান্ত হতে পারে না। বাংলাদেশে ফুটবল ছাড়াও অন্যান্য খেলা আছে। স্টেডিয়ামটি ইজারা না দিয়ে যেন জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার অধীন আগের মতোই চলতে দেওয়া হয়। ইজারার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিনের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন স্থানীয় খেলোয়াড়, কোচ ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতারা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন য ন য ল ইসল ম র জন য ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় শিশু জিসান হত্যা: এলাকাবাসীর আসামির বাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় আলোচিত শিশু জিসান হত্যা মামলায় আসামিদের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে স্থানীয়রা। এ মামলার প্রধান আসামি ফয়সালের মা ও বাবাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারাও এ মামলার আসামি।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে নিখোঁজের তিন দিন পর জিসানের (৭) লাশ মাটি খুড়ে উদ্ধার করে পুলিশ। শিশু জিসানের বাবা আলমগীর হোসেন দেয়াড়ায় অবস্থিত জুট টেক্সটাইল মিলে (মন্ডল মিল) মেকানিক্যাল পদে চাকরি করেন।
আরো পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই: ৪ আসামি গ্রেপ্তার
আজ রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে দেয়াড়া গ্রামে ফয়সালের বাড়িতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হামলা করে। এ সময় তারা বাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
হত্যার ঘটনায় জিসানের বাবা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে ফয়সাল, ফয়সালের মাহিনুর বেগম ও বাবা হান্নান শেখকে আসামি করে হত্যা ও গুমের অভিযোগ এনে দিঘলিয়া থানায় মামলা করেন।
মাহিনুর বেগম ও হান্নান শেখকে লাশ মাটির নিয়ে চাপা দিয়ে লাশ গুম করতে ছেলেকে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর দৌলতপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, জিসান হত্যার বিচারের দাবিতে রবিবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় উপজেলার দেয়াড়া খেয়াঘাট মোড়ে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মনিবুর রহমান, শেখ আবু জাফর, শেখ মামুন আলম, মোল্লা নাজমুল হক, শেখ মিল্টন, মোল্লা রাজু আহমেদ, আব্দুল কাদের জনি, মোহাম্মদ আলী টুটুল, আনোয়ার হোসেন, মোল্লা মাহমুদুল হাসান মিঠু, হালিম খলিফা, সোহেল জাফর মঈন, রাজীব আহমেদ প্রমুখ।
দিঘলিয়া থানার ওসি এইচ এম শাহীন হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে গিয়ে বলেন, ‘‘গ্রেপ্তার যুবক ফয়সাল মাদকাসক্ত। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অসংলগ্ন কথা বলছেন। কখনো বলছেন, তাকে গালি দেওয়ার কারণে ক্ষোভে তিনি হত্যা করেছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে তাদের মধ্যে পূর্বশত্রুতার তথ্য পাওয়া যায়নি।’’
ওসি আরো বলেন, ‘‘শিশু জিসানকে কুপিয়ে হত্যার পর হত্যাকারী ফয়সালকে বাঁচাতে তার মা-বাবা লাশটি মাটিতে পুতে গুম করতে সহযোগিতা করেন বলে তারা স্বীকার করেছেন। এ কারণে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায়ে জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন।’’
পুলিশ জানায়, গত ৯ অক্টোবর বিকাল থেকে শিশু জিসান নিখোঁজ হয়। তার খোঁজ না পেয়ে জিসানের বাবা দিঘলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে সিসিটিভির ফুটেজে পার্শ্ববর্তী দেয়াড়া গ্রামের হান্নান শেখের ছেলে ফয়সালের সঙ্গে জিসানকে সর্বশেষ তাকে দেখা যায়। ফয়সালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।
দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহিন বলেন, ‘‘ফয়সালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জিসানকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করেন। সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তের পর হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন হবে।’’
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল