গাজীপুরের শ্রীপুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির জেরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১) ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলাকালে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে র‌্যাব সদস্যরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আরো পড়ুন:

২২ বছর আগের হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত দুই ভাই গ্রেপ্তার

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির দায়ে ৩ জনের কারাদণ্ড 

অভিযান পরিচালনা করেন, র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসান ও শাহ মোহাম্মদ জোবায়ের।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, র‌্যাব পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট নাফিজ বিন জামাল, বিএসটিআই কর্মকর্তারা অর্ণব চক্রবর্তী ও ফাহাদ আহমেদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাওনা বাজার সড়কে অবস্থিত মেসার্স সততা এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স বিসমিল্লাহ্ এন্টারপ্রাইজ- এই দুটি প্রতিষ্ঠানের গুদামে র‌্যাব অভিযান চালায়। অভিযানে নকল প্রসাধনী, আমদানিকারকের তথ্যবিহীন ও ওষুধজাত প্রসাধনী জব্দ করা হয়।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত মেসার্স সততা এন্টারপ্রাইজকে ৩ লাখ টাকা এবং বিসমিল্লাহ্ এন্টারপ্রাইজকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে। পাশাপাশি দুই প্রতিষ্ঠানের গুদাম থেকে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার দেশি-বিদেশি নকল প্রসাধনী জব্দ করা হয়।

একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা র‌্যাবের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ ও স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় ১ ঘণ্টা মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনো তালিকা ছাড়াই বিপুল পরিমাণ পণ্য জব্দ করে নিয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। বৈধ পণ্যের কাগজপত্র দেখালেও তা উপেক্ষা করা হয়।

বিসমিল্লাহ্ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো.

মারুফ বলেন, “তারা দোকানে ঢুকেই কথা না শুনে মালামাল জব্দ করতে শুরু করেন। বৈধ কাগজ দেখিয়েও লাভ হয়নি। ওই দলে এমন একজন ছিলেন, যিনি আগে আমাদের কাছে তার কোম্পানির পণ্য বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমরা রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এই অভিযান করিয়েছেন।”

ইউনিলিভারের প্রতিনিধি মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা অনুমোদিত পরিবেশকের কাছে পণ্য সরবরাহ করি। রসিদ ও নথিপত্র না দেখে জব্দ করলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।”

খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন।

সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) মো. মেরাজুল ইসলাম বলেন, “র‌্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্ব পালন করছিল। তবে সেখানে দুজন সিভিল পোশাকের ব্যক্তি উপস্থিত থাকায় সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং ভুল বোঝাবুঝি ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।”

ওসি আব্দুল বারিক জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজনের আচরণে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। পরে ব্যবসায়ীরা বিষয়টি বুঝতে পারলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

র‌্যাব-১ এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট নাফিজ বিন জামাল এ বিষয়ে বলেন, “অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।”

ঢাকা/রফিক/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপস থ ত ব যবস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি সোনা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা উদ্ধার করেছে মুন্সিগঞ্জ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) উপপরিদর্শক আক্তারুজ্জামান মুন্সি, মাই টিভির প্রতিনিধি মো. রমজান, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি রমজান আলী, মাইক্রোবাসচালক জাকির হোসেন ও মিরপুরের জুয়েলারি ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীবাহী বাসে করে সোনা নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ভাই। বাসটি গজারিয়া এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের পোশাক পরা তিনজনসহ পাঁচজনের একটি দল ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাদক মামলার অজুহাত দেখিয়ে বাস থেকে নামিয়ে নেন। একপর্যায়ে তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে একটি ‍মাইক্রোবাসে তোলা হয়। পরে তাদের চোখ বেঁধে মারধর করে ১৪৫ ভরি স্বর্ণালংকার, টাকা, মুঠোফোন, এটিএম কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই দুই ব্যবসায়ীকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি এলাকায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়।

খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জ ডিবি পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান শুরু করে। ৯ ডিসেম্বর সকাল থেকে রাজধানীর কাফরুল, মিরপুর ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব এলাকা থেকে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়।

একপর্যায়ে তাঁদের কাছ থেকে ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা, সোনা বিক্রির ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, ২ জোড়া হাতকড়া, ২টি ওয়াকিটকি, পুলিশের ৩ সেট ইউনিফর্ম ও ৭টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।

মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলমের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় গজারিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অবশিষ্ট সোনা ও পলাতক এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষককে হেনস্তা করলেন ডাকসু নেতা
  • ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি সোনা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫