বিশ্বের পরমাণু যুগের জনক হিসেবে পরিচিত ইতালীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মির মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৩৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়া এনরিকো ফার্মি ১৯৫৪ সালের ২৮ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

ইতালির রোমে জন্ম নেওয়া ফার্মি খুব অল্প বয়সেই গণিত ও বিজ্ঞানে তাঁর অসাধারণ মেধার প্রমাণ রাখেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে পিসা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯২৬ সালে তিনি ফার্মি-ডিরাক পরিসংখ্যান তৈরি করে আলোচিত হন। তাঁর তত্ত্ব ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনের মতো কণার আচরণ ব্যাখ্যা করে। আর তাই এসব কণাকে ফার্মিয়ন নামকরণ করা হয়েছে। তাঁর আবিষ্কার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার ভিত্তিও স্থাপন করেছে। ১৯৩৪ সালে বিটা ক্ষয় তত্ত্বও আবিষ্কার করেন তিনি।

১৯৩৪ সালে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের পর ফার্মি নিউট্রন দিয়ে বিভিন্ন মৌলিক পদার্থকে আঘাত করে পরীক্ষা শুরু করেন ফার্মি। তিনি জানান, ধীরগতির নিউট্রন দ্রুতগতির নিউট্রনের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরভাবে নিউক্লীয় রূপান্তর ঘটাতে পারে। ফার্মির এই ভাবনা পরবর্তী সময়ে নিউক্লীয় ফিশনের পথ খুলে দেয়। এই যুগান্তকারী কাজের জন্য তিনি ১৯৩৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। পরে তিনি আমেরিকায় চলে যান ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

আমেরিকায় এসেই ফার্মি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ম্যানহাটন প্রকল্পে একটি মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তার সবচেয়ে বড় প্রকৌশলগত ও বৈজ্ঞানিক অর্জনটি আসে ১৯৪২ সালের ২ ডিসেম্বর। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেগ ফিল্ড স্টেডিয়ামের নিচে একটি অস্থায়ী পরীক্ষাগারে ফার্মি বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম পারমাণবিক চুল্লি শিকাগো পাইল-১ তৈরি করেন। এই চুল্লিতে মানবজাতির ইতিহাসে প্রথম নিয়ন্ত্রিত নিউক্লীয় চেইন প্রতিক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়। এই অর্জন পারমাণবিক শক্তি ও পারমাণবিক বোমা তৈরির ভিত্তি স্থাপন করে।

১৯৪৫ সালে প্রথম আণবিক বোমা পরীক্ষা করার সময় ফার্মি নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। তবে তিনি সামরিক ক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। ১৯৪৯ সালে হাইড্রোজেন বোমা তৈরির বিরোধিতাও করেন তিনি।

সূত্র: নোবেল প্রাইজ ডট অর্গ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পরমাণু যুগের জনক এনরিকো ফার্মির মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিশ্বের পরমাণু যুগের জনক হিসেবে পরিচিত ইতালীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মির মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৩৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়া এনরিকো ফার্মি ১৯৫৪ সালের ২৮ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

ইতালির রোমে জন্ম নেওয়া ফার্মি খুব অল্প বয়সেই গণিত ও বিজ্ঞানে তাঁর অসাধারণ মেধার প্রমাণ রাখেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে পিসা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯২৬ সালে তিনি ফার্মি-ডিরাক পরিসংখ্যান তৈরি করে আলোচিত হন। তাঁর তত্ত্ব ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনের মতো কণার আচরণ ব্যাখ্যা করে। আর তাই এসব কণাকে ফার্মিয়ন নামকরণ করা হয়েছে। তাঁর আবিষ্কার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার ভিত্তিও স্থাপন করেছে। ১৯৩৪ সালে বিটা ক্ষয় তত্ত্বও আবিষ্কার করেন তিনি।

১৯৩৪ সালে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের পর ফার্মি নিউট্রন দিয়ে বিভিন্ন মৌলিক পদার্থকে আঘাত করে পরীক্ষা শুরু করেন ফার্মি। তিনি জানান, ধীরগতির নিউট্রন দ্রুতগতির নিউট্রনের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরভাবে নিউক্লীয় রূপান্তর ঘটাতে পারে। ফার্মির এই ভাবনা পরবর্তী সময়ে নিউক্লীয় ফিশনের পথ খুলে দেয়। এই যুগান্তকারী কাজের জন্য তিনি ১৯৩৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। পরে তিনি আমেরিকায় চলে যান ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

আমেরিকায় এসেই ফার্মি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ম্যানহাটন প্রকল্পে একটি মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তার সবচেয়ে বড় প্রকৌশলগত ও বৈজ্ঞানিক অর্জনটি আসে ১৯৪২ সালের ২ ডিসেম্বর। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেগ ফিল্ড স্টেডিয়ামের নিচে একটি অস্থায়ী পরীক্ষাগারে ফার্মি বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম পারমাণবিক চুল্লি শিকাগো পাইল-১ তৈরি করেন। এই চুল্লিতে মানবজাতির ইতিহাসে প্রথম নিয়ন্ত্রিত নিউক্লীয় চেইন প্রতিক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়। এই অর্জন পারমাণবিক শক্তি ও পারমাণবিক বোমা তৈরির ভিত্তি স্থাপন করে।

১৯৪৫ সালে প্রথম আণবিক বোমা পরীক্ষা করার সময় ফার্মি নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। তবে তিনি সামরিক ক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। ১৯৪৯ সালে হাইড্রোজেন বোমা তৈরির বিরোধিতাও করেন তিনি।

সূত্র: নোবেল প্রাইজ ডট অর্গ

সম্পর্কিত নিবন্ধ