না’গঞ্জ-৩ ও ৪ আসনের যে কোন একটিতে নির্বাচন করবো : অধ্যাপক মামুন মাহমুদ
Published: 18th, October 2025 GMT
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আসছে ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারি মাসের নির্বাচনের রূপরেখা দিয়েছেন। আমরা আশা করি সাধারণ মানুষ যেন তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারে এবং পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পারে।
দেশে এখনো গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আমি নারায়ণগঞ্জ ৩ আসন ও ৪ আসনের এমপি পদপ্রার্থী। আমার প্রাণের দল আমাকে এই দুটি আসনের যেকোনো একটি আসনে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করব। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করব।
সিদ্ধিরগঞ্জে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড তাজমহল চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্টে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় অধ্যাপক মামুন মাহমুদ আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধেয় জিয়াউর রহমানের পরিবার একটি আদর্শবান পরিবার। তারা কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি। বিএনপির সফল তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বৈরাচার সরকারের সাথে কোন ধরনের আপোষ করেনি।
নিজেকে বিনা চিকিৎসায় শেষ করে দিয়েছেন তারপরেও স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করেননি। বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার। শুধু তাই নয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়ে ছিলো।
বিগত ১৭ বছরে বিএনপি’র নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও ঘুম খুন করেছে অবৈধ হাসিনা সরকার। এমন একটি আদর্শবান বিএনপি’র দলের একজন কর্মী হয়ে আমি গর্ববোধ করি। গত বছরের ২৪ সালের ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতন ঘটে।
এ আন্দোলনে বিএনপি’র পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। স্বৈরাচার সরকার আওয়ামী লীগের আমলে মানুষ নিজের ভোট প্রয়োগ করতে পারেনি। ১৭ টা বছর তারা দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছর সাংবাদিকদের সাথে এইভাবে আলোচনা করতে পারিনি। আজকে সকালে সাংবাদিকদের সাথে আলোচনা করে খুব ভালো লাগছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সমাজের আয়না। প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপনারা লিখনের মাধ্যমে সত্য তুলে ধরবেন। আপনাদের যে কোন বিষয় আমরা পাশে থাকবো।
তিনি বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনারের সীমানা নির্ধারণের পূর্বে আমি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী ছিলাম এবং ১৮ সালের নির্বাচনে প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলাম।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন আমাদের সাজানো রয়েছে। এই আসনে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। সেখানেও যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় এটি নতুন জায়গা হবে না।
আবার নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে যেহেতু সিদ্ধিরগঞ্জের অবস্থান, এই সিদ্ধিরগঞ্জের সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের সাথে আমার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং এখানেও নির্বাচন করতে কোন কষ্ট হবে না।
সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে মামুন মাহমুদ বলেন, “সোনারগাঁয় আমার বিচরণ ও কর্মক্ষেত্র এবং দীর্ঘদিন যাবৎ আমি জেলার রাজনীতি করছি। ২০০৮ সালে জেলা যুবদলের সভাপতি হয়েছিলাম। ওই সময় সোনারগাঁসহ প্রত্যেকটি উপজেলায় সংগঠন গড়ে তুলেছি।
সেই সকল নেতাকর্মীরা আজ নিজ নিজ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। জনগণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের সাথেও আমার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কাজেই সেখানেও আমার নির্বাচন করা কষ্টের হবে না বলে আমি মনে করছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে কখনও পিছপা হয়নি, এখনও সে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এখনও মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আশা করি, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই যে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে।
বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য প্রথম থেকেই রাজপথে ছিল। রাজপথ থেকেই দাবি আদায়ের দ্বার প্রান্তে এসেছি। আমরা প্রত্যাশা করি, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে এবং দেশের জনগণ মুক্তভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে কোন কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে না। কোন সংঘাত-সংঘর্ষ হচ্ছে না। যারা প্রার্থী রয়েছেন আমি সকলকে শ্রদ্ধার সঙ্গে বলতে চাই, বলয়ের নেতাকর্মীদেরকে সেইভাবেই পরামর্শ দিবেন- যাতে নিজেদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব-কোন্দল সৃষ্টি না হয়।
কারণ একটাই দল, একটাই প্রতীক একজনই পাবে। চেষ্টা করবে বহুজন, পাবে কিন্তু একজন। সুতরাং নমিনেশন ঘোষণার পরে আবার আমরা একসঙ্গে সেই প্রতীককে নির্বাচিত করব।
সভায় সাংবাদিকদের আরেকটি প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আগস্টের পর বিএনপি যেসব নেতাকর্মী বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে বিএনপি। শুধু তাই নয় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে দল থেকে।
সারাদেশে ৭ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। হাইব্রিড নেতাকর্মী যারা বিএনপি’র আছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপি বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। আমাদের প্রাণপ্রিয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসলে দেশের প্রেক্ষাপট আরো পরিবর্তন হবে।
আপনারা জানেন নারায়ণগঞ্জের জেলা বিএনপির কমিটি তদন্ত সাপেক্ষে বিলুপ্ত করা হয়েছে। তাই কেউ যদি অন্যায় করে তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সাংবাদিকদের আরও একটি প্রশ্নের জবাবে মামুন মাহমুদ বলেন, যারা নিরপরাধ মানুষ ও সাংবাদিকদের মামলার আসামি করেছে আমি তার প্রতিবাদ করেছি। আমি ডিসি, এসপি ও ওসিদের বিভিন্ন সময় মামলা করার আগে সঠিক তদন্ত করে মামলা করার জন্য বলেছি।
এসপি সাহেবকে বলেছি যারা নিরপরাধ তাদেরকে মামলা থেকে যেন অব্যাহতি দেওয়া হয়। যারা মামলায় নিরীহ মানুষকে আসামি করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে আমাদের জোর দাবি রয়েছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ র ন র য়ণগঞ জ ন ত কর ম ব এনপ র র জন য আম দ র আসন র সরক র ৪ আসন
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো ভাড়াটিয়া শিল্পপতিদের আমাদের দলে প্রয়োজন নেই : সাখাওয়াত
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সকল নেতাকর্মীদেরকে বলতে চাই আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকেন। অনেক খেলা দেখছেন, অনেকেই নমিনেশন পেয়ে যাচ্ছেন, অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু আপনারা নিশ্চিত থাকেন আমাদের মাঠ থেকে দলীয় মনোনয়ন পাবে। যারা বিগত ১৬টি বছর নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছে তারাই নমিনেশন পাবে।
আমরা ইনশাল্লাহ কোন ভাড়াটিয়ার প্রয়োজন নেই বিএনপিতে। কোন শিল্পপতিদেরও প্রয়োজন নাই। আমাদের দলকে আমরাই নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। গত ১৫ বছর কিন্তু কোন ব্যক্তিকে আমরা আমাদের পাশে পাই নাই। এমনকি নেতাকর্মীরাও তাদেরকে পাশে পায় নাই।
তারা অনেকেই আজকে মায়া কান্না দেখাচ্ছে এটা আমাদের বুঝতে হবে। আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকেন আমাদের মাঠের নেতাদের মধ্যে যে কোন একজন মনোনয়ন পাবে এবং ধানের শীষের মার্কা নিয়ে নির্বাচন করবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা অন্তর্গত ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মীসভা ও বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল শহরের মন্ডলপাড়ায় ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে আমরা কিন্তু নির্বাচন মুখী। আমরা গত ৩ বছরে মহানগর বিএনপিকে ঢেলে সাজিয়েছি। প্রতিটি ওয়ার্ড ও পাড়ামহলায় আমরা বিএনপির কর্মী তৈরি করে রেখেছি। যেসকল ত্যাগী নেতাকর্মীরা রয়েছে তারা সকল ইউনিটের সকল পাড়া মহল্লায় নেতাকর্মীদ সুসংগঠিত ও বিএনপির পক্ষে জনম তৈরি করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এই ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিএনপি নিবেদিত প্রাণ। আগামী দিনে নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও ধানের শীষের প্রার্থী যেই হবে তার পক্ষে কাজ করে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে ইনশাল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই নির্বাচনকে বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আজকে একটি দল এ নির্বাচনকে কলুষিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তারা ধর্মের কথা বলে ধর্মকে বিক্রি করে। শুধু তাই নয় বড় বড় আলেমরাও কিন্তু বলে জামায়াতে ইসলামী মদিনার ইসলাম করে না।
তারা কিন্তু আমাদের হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর যে ইসলাম সেই ইসলামের মধ্যে নাই। তারা হল মৌদুদী ইসলাম, সেই ইসলাম আমরা মানি না। তারা যদি ক্ষমতা আসে তাহলে বাংলাদেশে মৌদুদীর ইসলাম কায়েম করবে। সুতরাং আমরা সেটা হতে দেব না।
মহানগর ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আল আমিন প্রধানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিরযুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাশিদা জামাল, ডা. মজিবুর রহমান।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাকিত মোস্তাকিন শিপলু, ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাসেম, সদস্য আনোয়ার হোসেন, জনি, আউয়াল হোসেন, রিপন, এমদাদ, মাসুদ রানা, অপু, জুম্মান, আকরাম, কাদির হোসেন প্রমুখ।