‘ছোট’ ব্যাট, ‘মাসল মেমরি’, আরও যেভাবে মিরপুরে ‘স্পিন–স্বর্গে’ ভালো করার পথ খুঁজছে বাংলাদেশ
Published: 20th, October 2025 GMT
সকালের অনুশীলনটা শুরু হয়েছিল অন্য দিনের মতোই। ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে এসে টিম মিটিং, তারপর ওয়ার্মআপ। এরপর ফিল্ডিং অনুশীলন। সবকিছুই যেন নিয়মমাফিক চলছিল।
কিন্তু পরে চেনা দৃশ্যটায় হঠাৎ একটু ভিন্নতা। ইনডোরে ব্যাট–বলের অনুশীলনে যাওয়ার কথা থাকলেও সবাই থেমে গেলেন শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এক পাশে, নেট দিয়ে ঘেরা একটি সেন্টার উইকেটের সামনে।
ফিল্ডিং অনুশীলন শেষে ব্যাটসম্যানরা তখন ব্যাট–প্যাড পরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেই সময়েই প্রধান কোচ ফিল সিমন্স গিয়ে স্টাম্প গেড়ে দেন সেখানে। ইনডোরে যাওয়ার পথে তাঁকে ঘিরে তৈরি হয় ছোট্ট জটলা।
ইনডোরে যাওয়ার আগে ব্যাটসম্যানরা ফিল সিমন্সের সঙ্গে আলোচনা করেছেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল ‘আইএনএস বিক্রান্ত’: মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ সোমবার বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্তে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রশংসা করে বলেছেন, অপারেশন সিঁদুরের সময় যুদ্ধজাহাজটি পাকিস্তানের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল। তিনি বলেন, গোয়া এবং কারওয়ার উপকূলে এই দেশীয় বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে নৌবাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপন করতে পেরে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদি তার বার্ষিক ঐতিহ্য বজায় রেখে এ বছরও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপন করেছেন। ভারতের প্রথম নিজস্ব নির্মিত বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্তে রবিবার রাত্রিযাপন করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানি চুক্তি নবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত
আমাকে পুরস্কার দেওয়া হলে, তা ডাস্টবিনে ফেলে দেব: বিশাল
মোদি আজ সোমবার আইএনএস বিক্রান্তে এক ভাষণে নৌবাহিনীর সাহস ও শৃঙ্খলার প্রশংসা করেন। টেনে আনের অপরেশন সিঁদুরের সময়ে আইএনএস বিক্রান্ত-এর আবদানের কথা। মোদি বলেন, “আইএনএস বিক্রান্ত কেবল একটি যুদ্ধজাহাজ নয় বরং এটি একবিংশ শতাব্দীতে ভারতের কঠোর পরিশ্রম, প্রতিভা, প্রভাব এবং প্রতিশ্রুতির সাক্ষ্য। আইএনএস বিক্রান্ত ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা প্রতিফলিত করে। অপারেশন সিঁদুরের সময় এর নামই পাকিস্তানের ঘুম হারাম (উড়িয়ে দিয়েছিল) করে দিয়েছিল।”
জোর দিয়ে মোদি বলেন, “আইএনএস বিক্রান্ত এমন একটি নাম যা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই শত্রুর সাহস ভেঙে দেয়। এটিই আইএনএস বিক্রান্তের শক্তি।”
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনার পর, ভারতীয় নৌবাহিনী আরব সাগরে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছিল। যার ফলে পাকিস্তান সম্ভাব্য নৌ হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করে। এই মোতায়েনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আইএনএস বিক্রান্ত। সঙ্গে ছিল ৮ থেকে ১০টি যুদ্ধজাহাজও। এই মোতায়েনটি নিয়মিত শান্তিকালীন মহড়ার বাইরে ভারতীয় নৌবাহিনীর বৃহত্তম রিয়েল-টাইম অপারেশনাল মুভমেন্টগুলোর মধ্যে একটি।
আইএনএস বিক্রান্ত রাত কাটানোর অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “আমি এই মুহূর্তে বেঁচে থাকার গুরুত্ব শিখেছি। আপনাদের নিষ্ঠা এত গভীর যে, আমি তার সামান্যই অনুভব করতে পেরেছি। কিন্তু বুঝতে পেরেছি, প্রতিদিন এইভাবে দায়িত্ব পালন করা কতটা কঠিন।”
মোদি জানান, রাতে গভীর সমুদ্র এবং ভোরের সূর্যোদয় দেখা তার দীপাবলিকে বিশেষ করে তুলেছে। তার কথায়, “একদিকে সীমাহীন আকাশ, অন্যদিকে অন্তহীন সাগর - তার মাঝে দাঁড়িয়ে আমাদের শক্তির প্রতীক আইএনএস বিক্রান্ত, অসীম শক্তির প্রতীক। সমুদ্রের জলে সূর্যের রশ্মির ঝলক সাহসী সৈন্যদের দ্বারা প্রজ্জ্বলিত দীপাবলির প্রদীপের মতো।”
নৌবাহিনীর শতাধিক সদস্যকে উদ্দেশ্য করে মোদি আরো বলেন, “গত রাতে যখন আপনাদের দেশাত্মবোধক গান গাইতে দেখলাম এবং অপারেশন সিঁদুরের কাহিনি শুনলাম, তখনই বুঝেছি- যুদ্ধে দাঁড়িয়ে একজন জওয়ান যা অনুভব করে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।”
মোদি স্মরণ করেন যে, যখন যুদ্ধজাহাজটি জাতির কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছিল, তখন নৌবাহিনী ঔপনিবেশিক ঐতিহ্যের একটি প্রধান প্রতীক ত্যাগ করে এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একটি নতুন পতাকা গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী আইএনএস বিক্রান্তকে আত্মনির্ভর ভারতের একটি শক্তিশালী প্রতীক এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে, গত এক দশক ধরে, ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্বদেশীকরণের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে গত ১১ বছরে উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে, প্রায় প্রতি ৪০ দিনে একটি নতুন যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিন নৌবাহিনীতে যোগদান হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের বিশ্বব্যাপী চাহিদার কথাও তুলে ধরেন এবং আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন যে- ভারত শিগগির বিশ্বের শীর্ষ প্রতিরক্ষা রপ্তানিকারকদের মধ্যে স্থান পাবে। এই রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তিনি স্টার্টআপ এবং দেশীয় প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলোকে কৃতিত্ব দেন।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ