কালীপূজার উৎসবের মধ্যেই দেবী কালীমূর্তি ভাঙা কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা পশ্চিমবঙ্গে। ঘটনা মঙ্গলবার রাতে। জানা যায়, কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপের সূর্যনগরে এক কালীমন্দিরে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। সেখানে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

বুধবার সকাল থেকেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে অবরোধ, বিক্ষোভ-পথ অবরোধ শুরু করে স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মৃদু লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

আরো পড়ুন:

দুর্ঘটনার কবলে ভারতের রাষ্ট্রপতি মুর্মুর হেলিকপ্টার

ভূতের রাজ্যে রাশমিকা: বক্স অফিসে শুরুটা কেমন হলো?

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘বুধবার সকালে একটি মূর্তি ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্ত শুরু হলেও, স্থানীয়দের বিক্ষোভে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে, মূর্তির বিসর্জনে বাধা দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের সরাতে ন্যূনতম বলপ্রয়োগ করে পুলিশ। সেই সময়ই পুলিশের উপর পাথর বৃষ্টি করে বিক্ষোভকারীরা। এরপরেই মূর্তির বিসর্জনের ব্যবস্থা করে পুলিশ। অপরাধীদের খোঁজে চলছে তল্লাশি, কাউকে ছাড়া হবে না।’ রাজ্য পুলিশের দাবি, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। জাতীয় সড়ক দীর্ঘক্ষণ অবরূদ্ধ হয়ে পড়ার পরেই পুলিশকে মৃদু লাঠিচার্জ করতে হয় বলে দাবি করেছে পুলিশ। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। তারাই বিসর্জনের ব্যবস্থা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ । পুলিশ এই দাবি করলেও সকাল থেকে আসরে নেমে পড়ে রাজ্য প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা।

বিরোধীদের অভিযোগ উত্তেজনা সামাল দিতে জোরপূর্বক মূর্তির বিসর্জনের উদ্যোগ নেয় পুলিশ। এসময় প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ভাঙা কালীমূর্তি।

এই ঘটনা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই থমথমে গোটা এলাকা। বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কালীমূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার এক্স হ্যান্ডেলে ঘটনার ভিডিও পোস্ট করেন। এভাবে বাংলায় হিন্দুদের ভাবাবেগকে আঘাত করা হচ্ছে বলেই দাবি তার।

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। শাসক শিবিরের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলায় অশান্তি ছড়়ানোর চেষ্টা করছে পদ্মশিবির।

 

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ন দ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরেছেন ৪৭ মৎস্যজীবী

তিন মাসের বেশি সময় বাংলাদেশের জেলে বন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরেছেন ৪৭ জন মৎস্যজীবী। সোমবার বিকেলে গভীর সাগরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড তাদেরকে ভারতীয় কোস্ট গার্ডের হাতে তুলে দেয়। এসময় ভারতের জেলে আটক থাকা ৩২ বাংলাদেশি মৎজীবীকেও ফিরিয়ে দেয় ভারতীয় কোস্টগার্ড।

সোমবার বিকালের পরে আন্তর্জাতিক জলসীমানায় দুই দেশের মৎস্যজীবীদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলে। দু’দেশের হাইকমিশনের আলোচনার ভিত্তিতে এই বন্দিদের নিজেদের দেশে ফেরানো হয়। এদিকে ‘এফবি মা মঙ্গলচণ্ডী-৩৮’, ‘এফবি ঝড়’ এবং ‘এফবি পারমিতা’ নামক তিনটি ট্রলারও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তিন ট্রলারে থাকা ৪৮ জন ভারতীয়ের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয় বিচারাধীন অবস্থায়। ওই মৎস্যজীবীর কফিনবন্দি দেহ আগেই দেশে ফিরেছে। এবার মুক্তি মিলল বাকি ৪৭ জনের।

যারা ছাড়া পেয়েছেন তাদের সিংহভাগেরই বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপে। বুধবার দুপুরে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় মৎস্যজীবীদের নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানাতে। এদের সবার বিরুদ্ধেই ছিল ভারত–বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ। দীর্ঘদিন পর তাদের ফিরে পেয়ে খুশি পরিবারের সদস্যরা। 

একইভাবে ভারতের এলাকায় ঢুকে মাছ ধরার দায়ে আটক করা হয়েছিল বাংলাদেশি ট্রলার ‘বাবার আশীর্বাদ’ ও ‘মায়ের দোয়া।’ তাতে থাকা ৩২ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীরও মুক্তি মিলেছে। 

সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, দুই দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমারেখায় (আইএমবিএল) ওই ৭৯ জন মৎস্যজীবীকে প্রত্যর্পণ করেছে। দু’দেশের এই বন্দি প্রত্যর্পণ দ্রুত সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় হাইকমিশনের তৎপরতায়। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারও মৎস্যজীবীদের দ্রুত মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। গোটা প্রক্রিয়ায় সমস্ত পক্ষের সঙ্গে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠন যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল।
 

ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরেছেন ৪৭ মৎস্যজীবী