চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল বিএসএফ
Published: 25th, October 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ৩১ বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্যরেখায় দর্শনা জয়নগর ও ভারতের গেদে পয়েন্টে বিজিবি ও বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।
বিজিবির পক্ষে দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার মো.
চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাংলাদেশি এসব নাগরিক বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। তাঁদের বেশির ভাগই হরিয়ানা রাজ্যে শ্রমিক হিসেবে কাজের পাশাপাশি সেখানে বসবাস করে আসছিলেন। হরিয়ানা পুলিশ তাঁদের আটকের পর বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। আজ শনিবার দুপুরে তাঁদের দর্শনা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করবে।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ শহিদ তিতুমীর জানান, বিজিবির কাছ থেকে পাওয়া ৩১ জনকে পারকৃষ্ণপুর–মদনা ইউনিয়ন পরিষদে রাখার প্রস্তুতি চলছে। এরপর তাঁদের স্বজনদের কাছে খবর পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা–পুলিশের সহযোগিতায় তাঁদের বাড়ি পৌঁছাতে সহযোগিতা করা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
এখনই দেশে ফিরতে পারছেন না বিএসএফের পুশ ইন করা ভারতীয় নাগরিক
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশ ইন) ছয় ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন পিছিয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয় আদালত) আশরাফুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
অভিযোগ গঠনের দিন পেছানোয় ছয় ভারতীয় নাগরিক এখনই দেশে ফিরতে পারছেন না। এর আগে এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। এতে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ওই ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
ছয় ভারতীয় নাগরিক হলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ধিতোরা গ্রামের দানিশ শেখ (২৮), তাঁর স্ত্রী সোনালি বিবি (২৬), তাঁদের ৮ বছর বয়সী ছেলে এবং সুইটি বিবি (৩৩) ও তাঁর ১৬ ও ৬ বছর বয়সী ছেলে। তাঁদের মধ্যে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা। গত ২০ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ভারতীয় নাগরিকেরা দিল্লিতে কাগজ কুড়ানোর কাজ করতেন। দিল্লি পুলিশ তাঁদের আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মাধ্যমে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটক হলে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আগামী ৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করা হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ছয়জনই ভারতীয় নাগরিক। এ–সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তাঁরা বিএসএফের মাধ্যমে পুশ ইনের শিকার।
গ্রেপ্তার ছয়জনের মামলার তদারক করতে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতের নাগরিক মফিজল শেখ। গতকাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দিল্লি পুলিশ জঘন্য একটি কাজ করেছে। শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে যাচাই-বাছাই ছাড়াই বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। বিচারপতি রায় দিয়েছেন, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দেশে ফেরাতে হবে। শুক্রবার চার সপ্তাহ শেষ হচ্ছে। এরপরও কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি।
মফিজল শেখ বলেন, ‘তারা অসহায়-গরিব মানুষ। আমরা চাই তারা দেশে ফিরে যাক। ছয়জনের মধ্যে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা। বাংলাদেশের কোর্টের কাছে আমরা আবেদন করেছি যে তাঁদের বিচার যেন দ্রুত শুরু করা হয়। বাংলাদেশের আইনকে সম্মান জানিয়েই আমরা তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এন এম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পুশ ইনের পর ওই ছয় ভারতীয় নাগরিক ঢাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসার পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তাঁদের দেশে ফেরার আকুতি ছিল। কিন্তু বৈধ কোনো কাগজপত্র (পাসপোর্ট-ভিসা) না থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করা হয়। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।