যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হরিয়ানার ৫০ তরুণকে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে দেশে পাঠানো হলো
Published: 27th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত জীবনের আশায় জমি বিক্রি, ঘর বন্ধক রেখে এবং এজেন্টদের বিশ্বাস করে তাঁরা দেশ ছেড়েছিলেন। তাঁদের সেই আশা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। অবৈধভাবে বসবাস করা এসব ভারতীয় নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রোববার ভোরে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৫০ তরুণকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। এ সময় তাঁদের হাতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি ছিল।
ফেরত আসা এসব তরুণের অনেকের দাবি, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর পদক্ষেপে ধরা পড়ার পর ঋণের বোঝায় ডুবে গেছেন তাঁরা।
হরিয়ানার কর্মকর্তাদের মতে, ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন কারনালের, ১৪ জন কাইথালের, ৫ জন কুরুক্ষেত্রের ও ১ জন পানিপথের বাসিন্দা। তাঁরা সবাই দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার মধ্য দিয়ে মানব পাচারের ‘ডানকি রুট’ হিসেবে পরিচিত পথ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ সেখানে কয়েক বছর ছিলেন, আবার কেউ মাত্র কয়েক মাস। ফেরত পাঠানোর আগে তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে কারাভোগও করতে হয়েছিল।
ফেরত আসা ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে ছিলেন কারনালের রাহরার অঙ্কুর সিং (২৬)। তিনি বলেন, ২০২২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে তাঁর ২৯ লাখ রুপি খরচ হয়েছিল। ‘দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশ’ হয়ে যেতে তাঁর এই যাত্রায় ‘প্রায় চার মাস’ লেগেছিল।
অঙ্কুর সিং দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমি “ডানকি রুট” হয়ে গিয়েছিলাম। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলছিল। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে একটি মদের দোকানে কাজ করার সময় আমি ধরা পড়ি।’
অঙ্কুর বলেন, এরপর তাঁকে একটি আটককেন্দ্রে রাখা হয়। ২৪ অক্টোবর ভারতে ফেরার জন্য তাঁদের উড়োজাহাজে উঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের এই ফ্লাইটে হরিয়ানার প্রায় ৫০ জন ছাড়াও পাঞ্জাব, হায়দরাবাদ, গুজরাট ও গোয়ার তরুণেরাও ছিলেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৫০০ ভারতীয় নাগরিককে আটটি সামরিক, চার্টার্ড এবং বাণিজ্যিক ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো বা প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং গুজরাটের মানুষ।
আরও পড়ুনজানুয়ারি থেকে ১ হাজারের বেশি ভারতীয়কে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৩০ মে ২০২৫গতকাল রোববার ফেরত পাঠানো দলে ছিলেন কারনালের ঘোরাউন্দা ব্লকের পোপরা গ্রামের হুসন (২১)। তিন বোনের একমাত্র ভাই হুসন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হন। তাঁর কাকা, সুরেন্দর সিং জানান, এজেন্টদের ৪৫ লাখ রুপি পরিশোধ করতে পরিবারকে তিন একর জমি বিক্রি করতে হয়েছিল।
সুরেন্দর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই হুসন ধরা পড়ে। এটা আমাদের জন্য এক বিশাল ধাক্কা ছিল। তাঁরা রোববার রাত ১টার পর দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাঁদের হাতে হাতকড়া এবং পায়ে বেড়ি পরানো ছিল।’
কারনালের কালসী গ্রামের হরিশ এসসি (তফসিলি জাতি) শ্রমিক পরিবার থেকে এসেছেন। তাঁর ভাই রিঙ্কু বলেন, ‘তিনি ২০২৩ সালে কর্মীভিসায় কানাডায় গিয়েছিলেন। প্রায় এক বছর সেখানে থাকার পর গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং সেখানে একটি দোকানে কাজ শুরু করেন। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ধরা পড়েন।
কাইথালের তারাগড় গ্রামের নরেশ কুমার এক বছরের বেশি সময় আটক থাকার পর দেশে ফিরেছেন। তিনি বলেন, ‘উড়োজাহাজে উঠানোর সময় আমাদের হাতকড়া পরানো হয়েছিল। তবে তাঁরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। ফেরত পাঠানোর আগে আমি সেখানে ১৪ মাস কারাগারে ছিলাম।’
আরও পড়ুন৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার পরও বিতাড়িত হলেন ৭৩ বছর বয়সী ভারতীয় নারী২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫নরেশ আরও বলেন, ‘আমি ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি দিল্লি থেকে রওনা হয়ে ব্রাজিল হয়ে ৬৬ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাই। আমাদের এজেন্টরা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা ৫৭ লাখ ৫০ হাজার রুপি নিয়েছিল। প্রথমে তারা ৪২ লাখ টাকায় পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পরে আরও টাকা চাইতে থাকে। আমি এক একরের বেশি জমি বিক্রি করেছি। সুদে ৬ লাখ টাকা ধার করেছি, আমার ভাই ৬ লাখ ৫০ হাজার রুপির জমি বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া আমাদের এক আত্মীয় আরও ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন।’
কাইথালের পুলিশ সুপার উপাসনা বলেন, ওই জেলার ১৪ জন ফেরত আসা ব্যক্তিকে রোববার বেলা ২টার দিকে দিল্লি থেকে নিয়ে আসা হয়। তিনি বলেন, তাঁরা সবাই ‘ডানকি রুট’ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন আবগারি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন। একাধিকবার আদালতের শুনানিতে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।
জিণ্ডর এসপি কুলদীপ সিং নিশ্চিত করেছেন, তাঁর জেলা থেকে তিনজন ফেরত আসা ব্যক্তি ছিলেন। তাঁদেরকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এসপি সিং সতর্ক করে বলেন, ‘ডানকি রুটে’ বিদেশে যাওয়া গুরুতর অপরাধ। এটি পরিবারকে আর্থিকভাবে নিঃস্ব করে এবং জীবনকে বিপন্ন করে তোলে। পথে অনেকেই দুর্ব্যবহার, প্রতারণা, এমনকি মৃত্যুর মুখে পড়েন।
আরও পড়ুন২০৫ অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ক রন ল র পর ব র আম দ র র বব র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার মানুষের মাথাপিছু আয় ৫১৬৩ ডলার
ঢাকা জেলার মানুষের গড়ে মাথাপিছু আয় বর্তমানে ৫ হাজার ১৬৩ মার্কিন ডলার। এটি দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয়ের প্রায় দুই গুণের কাছাকাছি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত অর্থবছর (২০২৪–২৫) শেষে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক প্রণয়নবিষয়ক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ঢাকার মানুষের মাথাপিছু আয়ের এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা চেম্বার জানায়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১১ সালে করা জেলাভিত্তিক জিডিপির তথ্যকে ভিত্তি ধরে এ জেলার বিনিয়োগ, ভোগ, ব্যয়, আমদানি, রপ্তানি, আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা জেলার মাথাপিছু আয়ের এ হিসাব অনুমান করা হয়েছে। যদিও ঢাকার মাথাপিছু আয় ও জিডিপির এসব তথ্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি।
সর্বশেষ গত মে মাসে জাতীয় মাথাপিছু আয়ের তথ্য প্রকাশ করে বিবিএস। এতে উঠে আসে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন (২০২৪–২৫ অর্থবছর) ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার। এই মাথাপিছু আয় এযাবৎকালের রেকর্ড। এর আগের অর্থবছরের চেয়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৮২ ডলার। গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। তবে বিবিএস বিভাগ বা জেলাভিত্তিক মাথাপিছু আয়ের হিসাব করে না।
মাথাপিছু আয় ব্যক্তির একক আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরীণ আয়ের পাশাপাশি প্রবাসী আয়সহ যত আয় হয়, তা একটি দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে এই হিসাব করা হয়।
বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, ২০২১–২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। এরপর ২০২২–২৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৪৯ ডলারে। গত অর্থবছরে তা আরও কমে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার হয়। মূলত ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বিবিএসের হিসাবে মাথাপিছু আয়ের পার্থক্য হয়।
কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ ঢাকায়আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি জানান, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বড় একটি অংশ সম্পন্ন হয় ঢাকা জেলায়। দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ আসে এই জেলা থেকে। ঢাকাকে বিবেচনা করা হয় আর্থিক খাতের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সাড়ে ৭০০–এর বেশি কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঢাকা জেলায় অবস্থিত।
আসাদুজ্জামান জানান, দেশের শহুরে জনসংখ্যার ৩২ শতাংশের বাস ঢাকা জেলায়। আর মোট জনসংখ্যার ১১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ঢাকায় থাকেন। ঢাকা খুবই শিল্পঘন জেলা। দেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪০ শতাংশের বেশি হয় এ জেলা থেকে। সব মিলিয়ে মোট দেশজ আয়ে (জিডিপি) এককভাবে ৪৬ শতাংশ অবদান রাখছে ঢাকা জেলা।
ইপিআই সূচক চালু করবে ঢাকা চেম্বারদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা চেম্বার। প্রতি তিন মাস পরপর ইপিআই সূচক প্রকাশ করা হবে। এতে মূলত শিল্প ও সেবা খাতের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন চিহ্নিত করা হবে এবং তার আলোকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।
ঢাকা চেম্বারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় ইপিআই সূচক নির্ধারণের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিমাপের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন সূচক, যেমন বিসিআই, ইজ অব ডুইং বিজনেস ইনডেক্স, জিডিপি প্রভৃতি রয়েছে। তবে এসব সূচক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রকৃত পরিবর্তন ও কারণগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত করতে পারে না। সরকার অনেক সময় ভূ–অর্থনৈতিক পটভূমি নীতিনির্ধারণ করে, কিন্তু হালনাগাদ তথ্য না থাকায় সেগুলো সব সময় কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না।
এমন বাস্তবতায় ইপিআই সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তাসকিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকা জেলাকে কেন্দ্র করে এই সূচক প্রকাশ করা হবে। ভবিষ্যতে সারা দেশে এর আওতা বাড়ানো হবে।
তাসকিন আহমেদ আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক কার্যক্রম মূল্যায়নের প্রচলিত পদ্ধতিতে আমরা সাধারণত বার্ষিক বা প্রান্তিক জাতীয় হিসাবের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দ্রুত পরিবর্তনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও ব্যবসায়িক আস্থা মূল্যায়নে রিয়েলটাইম বা হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণ জরুরি।’
ডিসিসিআই প্রণীত ইপিআই দেশের উৎপাদন ও সেবা খাতের কার্যক্রম ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে মূল্যায়ন করবে। এর মাধ্যমে উৎপাদন, বিক্রয়, রপ্তানি, ক্রয়াদেশের প্রবাহ, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের প্রবণতা জানা সম্ভব হবে। প্রাথমিকভাবে সূচকের হিসাবে ছয়টি উপখাত রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে তৈরি পোশাক, বস্ত্র, পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়, আবাসন, পরিবহন ও সংরক্ষণ এবং ব্যাংক খাত।
অর্থনীতি ভালো করছেগত বছরের দুটি প্রান্তিকের তথ্য নিয়ে প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক অবস্থান সূচকের (ইপিআই) তথ্য প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার। এ জন্য শূন্য থেকে এক পর্যন্ত মোট ছয়টি স্কোর নির্ধারণ করেছে তারা। এগুলো হচ্ছে (অর্থনীতির গতি) খুবই কম, কম, মাঝামাঝি, বেশি ও অনেক বেশি। এর মধ্যে শূন্য দশমিক ৮০ স্কোর পেয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে ঢাকা জেলার অর্থনীতি বেশি বা ভালো গতিতে এগিয়েছিল বলে জরিপে উঠে আসে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, ওই বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে অর্থনীতি অনেকটা স্তিমিত ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কিছু ত্বরিত সিদ্ধান্তের কারণে পরের প্রান্তিকে অর্থনীতি ভালো করেছে।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন সূচকে দেখা যায়, ‘দেশের অর্থনীতি ভালো করছে। কিন্তু বৈশ্বিক সূচকের কিংবা অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখতে পাই, আমরা বিভিন্ন সূচকে সবচেয়ে নিচের দিকে থাকি। তাই এসব সূচকের তথ্যে আত্মতুষ্টির কারণ নেই; বরং এসব সূচককে বৈশ্বিক মানের সঙ্গে তুলনা করে প্রকাশ করলে সেটি বেশি কার্যকর হবে।’
আর ইপিআই সূচকটি প্রতি মাসে প্রকাশ করা ও সূচকের পরিধি বাড়ানোর পরামর্শ দেন ঢাকা চেম্বারের আরেক সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) মহাপরিচালক মো. নূরুল আলম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের (এসএসজিপি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ নেসার আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক সৈয়দ মুনতাসির মামুন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম আতিকুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (এসএমইএসপিডি) নওশাদ মোস্তফা, পরিচালক মো. সালিম আল মামুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. দীন ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট মিয়া রহমত আলী প্রমুখ।