মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে ৬৫৯ জন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির দাবি জানিয়েছেন চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকেরা (জিএস)। ওই শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করতে ১০ কার্যদিবস সময়ও বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সম্মিলিতভাবে দেওয়া এক বিবৃতিতে চার ছাত্র সংসদের জিএসরা এ সময়সীমা বেঁধে দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধী শেখ হাসিনার পক্ষে ‘বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দ’ নাম ব্যবহার করে বিবৃতি দেওয়ার সংবাদটি জনগণকে স্তম্ভিত ও বিক্ষুব্ধ করেছে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, বিবৃতিটি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ১ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত বলা হলেও ৬৫৯ জন শিক্ষকের নাম রয়েছে।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, আদালত যাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, সেই খুনির পক্ষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এমন পক্ষ নেওয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি সরাসরি অবজ্ঞা প্রদর্শন এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রতি চরম অবমাননাকর।

প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ওই বিবৃতিতে কিছু শিক্ষককে না জানিয়েই তাঁদের নাম স্বাক্ষরকারী হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করেন চার ছাত্র সংসদের জিএসরা। তাঁরা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকদের চিহ্নিত করার জন্য দ্রুত তদন্ত শুরু করতে হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনির পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মিলিত ছাত্র সংসদের আহ্বান, যেসব শিক্ষক মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাঁদের সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করুন। বিবেকহীন এসব শিক্ষককে সামাজিক ও একাডেমিক সব ক্ষেত্র থেকে প্রতিহত করুন।

মানবতাবিরোধী অপরাধীর পক্ষ নেওয়া এই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত ছাত্র সংসদ আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম নবত ব র ধ শ ক ষকদ র র চ কর অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো ১৭০ জনকে

লিবিয়া থেকে অনিয়মিত ১৭০ বাংলাদেশিকে আজ মঙ্গলবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তাঁরা ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লিবিয়া সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা তাঁদের বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফিরিয়ে আনা বাংলাদেশিদের বেশির ভাগই সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার উদ্দেশ্যে মানব পাচারকারীদের প্ররোচনায় ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন বলে জানা যায়। তাঁদের অনেকে লিবিয়াতে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাঁদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা সম্ভাব্য সবার সঙ্গে বিনিময় করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুরোধ জানায়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের প্রত্যেককে পথখরচা, কিছু খাদ্যসামগ্রী এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লিবিয়ার বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে থাকা বাংলাদেশিদের নিরাপদে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ