চিরবিচ্ছেদের নীরবতার স্থিরচিত্র
Published: 3rd, December 2025 GMT
রাজা আর্থারের ক্যামেলট, যা ইউরোপীয় সাহিত্যে আদর্শ রাজত্ব ও বীরত্বের প্রতীক হয়ে আছে। এর অন্তরে লুকিয়ে আছে একটি নিষিদ্ধ প্রেমের শ্বাসরুদ্ধকর ইতিহাস। স্যার ল্যান্সেলট ও রানি গিনিভারের গোপন সম্পর্ক কেবল রাজকীয় বিশ্বাসঘাতকতার গল্প নয়, বরং এটি এক সভ্যতার নৈতিক পতনের রূপক হিসেবেও উপস্থিত। এই প্রেমের দ্বন্দ্বে দেখতে পাওয়া যায় মানুষের চিরন্তন সংকট, যেমন দায়িত্ব ও আকাঙ্ক্ষা, ন্যায় ও প্রেম, আত্মসংযম ও আত্মবিসর্জনের মুখোমুখি সংঘাতকে।
ক্যামেলটের কিংবদন্তি যেখানে ন্যায়, বীরত্ব ও আত্মসংযমের পূজারূপে দাঁড়ায়, সেখানে ল্যান্সেলট-গিনিভারের সম্পর্ক সেই আদর্শকে ভেতর থেকে ভেঙে দেয়। ইতিহাসের নয়, বরং কল্পনায় নির্মিত এই রাজ্যের পতন আমাদের নৈতিক ও মানসিক জগৎকে প্রশ্ন করে যে মানবিক ভালোবাসা কি কখনো আদর্শের ঊর্ধ্বে যেতে পারে?
এই দ্বন্দ্ব মধ্যযুগীয় নৈতিকতার কেন্দ্রে থাকা প্রশ্নকে সামনে আনে, মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ কী—কর্তব্য, নাকি প্রেম?কবি অ্যালফ্রেড লর্ড টেনিসন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সমুদ্রদূষণের কারণে হুমকিতে ডলফিন ও তিমি
নানা কারণে সমুদ্রদূষণ বাড়ছে। সেই দূষণের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছে ডলফিন ও তিমি। বিজ্ঞানীরা ১২৭টি ডলফিন ও তিমি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীরা সমুদ্রের গভীরে বসবাস করলেও বিষাক্ত সব রাসায়নিকের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের কারণে হুমকি আরও বাড়ছে। গভীর সমুদ্রের ডলফিন ও তিমিদের দেহে পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল পদার্থ (পিএফএএস) দূষণের বেশি মাত্রা পাওয়া গেছে। মানুষের তৈরি বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দাগপ্রতিরোধী কাপড়, নন-স্টিক রান্নার পাত্র ও খাদ্যের প্যাকেটে ব্যবহার করা হয়। প্রাকৃতিকভাবে এসব রাসায়নিক পদার্থের ক্ষয় হতে হাজার হাজার বছর সময় লাগবে। সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা ফলাফলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব ওলোনগংয়ের মেরিন ভার্টিব্রেট ইকোলজি ল্যাবের গবেষণা প্রধান ও বিজ্ঞানী ক্যাথারিনা পিটার্স বলেন, ‘ডলফিন ও তিমিকে প্রায়ই তাদের বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমরা আশা করেছিলাম, স্পার্ম তিমির মতো গভীর সমুদ্রে খাদ্যগ্রহণকারী প্রজাতিরা কিছুটা দূষণ থেকে মুক্ত। আমাদের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গভীর সমুদ্রে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি আছে। ডলফিন বা তিমিদের লুকানোর আসলেই কোনো জায়গা নেই।’
আরও পড়ুনডলফিন কি সত্যিই নিজেদের নাম ধরে ডাকতে পারে ২৩ জানুয়ারি ২০২৪অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনি ও অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়ামের গবেষক ফ্রেডেরিক স্যালট্রে বলেন, উপকূল থেকে দূরে থাকা ও গভীর সমুদ্রে ডুব দেওয়া প্রজাতি ঝুঁকির মধ্যে আছে। জলবায়ুর চাপের কারণে ব্যাপক দূষণ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি সৃষ্টি করছে।
এসব দূষণ বন্য প্রাণীর কতটা ক্ষতি করতে পারে, তা এখনো অজানা। তবে এসব পদার্থের কারণে রোগপ্রতিরোধ ও প্রজননব্যবস্থাকে ব্যাহত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের শরীরেও রাসায়নিক পদার্থ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করছে। এর ফলে ক্যানসার, বন্ধ্যত্ব, থাইরয়েড রোগ হওয়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
সূত্র: ইউরো নিউজ