কর্মবিরতি করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের কড়া বার্তা
Published: 3rd, December 2025 GMT
কর্মবিরতিতে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের হুঁশিয়ারি করে বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষকদের একাংশের কর্মবিরতির কারণে দেশের বহু বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, পরীক্ষা না নিলে চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোণায় দুই স্কুলে আগুন, আসবাবপত্র পুড়ে কয়লা
‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার বিকালে (৩ ডিসেম্বর) হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে, যার একটি রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে এসেছে।
অবশ্য এই বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের অগ্রগতিও তুলে ধরা হয়েছে।
সহকারী শিক্ষকদের চারটি সংগঠনের মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বানে বুধবার অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। এদিন শিক্ষক নেতাদের শোকজ করার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা উপজেলা শিক্ষা অফিসগুলোর সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেন।
রাইজিংবিডি ডটকমের প্রতিনিধিদের পাঠানোর খবর ও ভিডিওতে দেখা গেছে, অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকরাই উদ্যোগী হয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন। পানবার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষকরাই পরীক্ষা নিচ্ছেন। যেখানে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।
রাইজিংবিডি ডটকমের ফেনী প্রতিনিধি বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতির চিত্র দেখতে পেয়েছেন। পরীক্ষা হলে শিক্ষক নেই; উত্তরপত্রে লেখালেখি করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা অফিসকক্ষে বসে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন। পরীক্ষার হলে গিয়ে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র বিতরণ করছেন প্রধান শিক্ষক। আর শিক্ষার্থীরা যে যার মতো করে খাতায় উত্তর লিখছে। কয়েকটি কক্ষে অভিভাবকদের পরীক্ষার পরিবেশ সামলানোর চেষ্টা করতে দেখা গেল।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যায়, হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সড়কে বিক্ষোভ করেন।
পূর্বাপর
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে টানা আন্দোলন করছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। অবশ্য একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যান তারা। সেই দাবি এখনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা কর্মবিরতি পালন করার সিদ্ধান্তে যান।
বছরের নভেম্বরের শেষে প্রাথমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় একাংশের শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন, যে কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষপর্যন্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারির বার্তা পাঠাল মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক ও নোয়াখালী সদর উপজেলার ত্রিপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, “আমরা বৃহস্পতিবারও কর্মবিরতি ও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।”
এদিকে বেতন বাড়ানো ও গ্রেড জটিলতা নিরসনের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ যখন বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করছেন, তখন আরেকটি অংশ একই দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলে ‘তালা ঝোলানোর’ হুমকি দিয়েছেন।
একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চ গ্রেডের জটিলতা নিরসন ও সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বারোটি সংগঠনের মোর্চা ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বুধবার বলেন, “একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণে সরকারকে বুধবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলে স্কুলে তালা ঝোলানোর কর্মসূচি শুরু হবে।”
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে ১ কোটির বেশি শিক্ষার্থীর জন্য পৌনে ৪ লাখের বেশি শিক্ষক রয়েছেন। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব র ষ ক পর ক ষ শ ক ষকদ র শ ক ষকর র সহক র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মবিরতি করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের কড়া বার্তা
কর্মবিরতিতে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের হুঁশিয়ারি করে বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষকদের একাংশের কর্মবিরতির কারণে দেশের বহু বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, পরীক্ষা না নিলে চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোণায় দুই স্কুলে আগুন, আসবাবপত্র পুড়ে কয়লা
‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার বিকালে (৩ ডিসেম্বর) হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে, যার একটি রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে এসেছে।
অবশ্য এই বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের অগ্রগতিও তুলে ধরা হয়েছে।
সহকারী শিক্ষকদের চারটি সংগঠনের মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বানে বুধবার অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। এদিন শিক্ষক নেতাদের শোকজ করার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা উপজেলা শিক্ষা অফিসগুলোর সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেন।
রাইজিংবিডি ডটকমের প্রতিনিধিদের পাঠানোর খবর ও ভিডিওতে দেখা গেছে, অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকরাই উদ্যোগী হয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন। পানবার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষকরাই পরীক্ষা নিচ্ছেন। যেখানে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।
রাইজিংবিডি ডটকমের ফেনী প্রতিনিধি বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতির চিত্র দেখতে পেয়েছেন। পরীক্ষা হলে শিক্ষক নেই; উত্তরপত্রে লেখালেখি করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা অফিসকক্ষে বসে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন। পরীক্ষার হলে গিয়ে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র বিতরণ করছেন প্রধান শিক্ষক। আর শিক্ষার্থীরা যে যার মতো করে খাতায় উত্তর লিখছে। কয়েকটি কক্ষে অভিভাবকদের পরীক্ষার পরিবেশ সামলানোর চেষ্টা করতে দেখা গেল।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যায়, হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সড়কে বিক্ষোভ করেন।
পূর্বাপর
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে টানা আন্দোলন করছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। অবশ্য একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যান তারা। সেই দাবি এখনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা কর্মবিরতি পালন করার সিদ্ধান্তে যান।
বছরের নভেম্বরের শেষে প্রাথমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় একাংশের শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন, যে কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষপর্যন্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারির বার্তা পাঠাল মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক ও নোয়াখালী সদর উপজেলার ত্রিপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, “আমরা বৃহস্পতিবারও কর্মবিরতি ও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।”
এদিকে বেতন বাড়ানো ও গ্রেড জটিলতা নিরসনের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ যখন বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করছেন, তখন আরেকটি অংশ একই দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলে ‘তালা ঝোলানোর’ হুমকি দিয়েছেন।
একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চ গ্রেডের জটিলতা নিরসন ও সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বারোটি সংগঠনের মোর্চা ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বুধবার বলেন, “একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণে সরকারকে বুধবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলে স্কুলে তালা ঝোলানোর কর্মসূচি শুরু হবে।”
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে ১ কোটির বেশি শিক্ষার্থীর জন্য পৌনে ৪ লাখের বেশি শিক্ষক রয়েছেন। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন।
ঢাকা/রাসেল