ব্রাকসুর তফসিল প্রত্যাখান শিক্ষার্থীদের
Published: 19th, November 2025 GMT
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই তা প্রত্যাখান করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের এই তফসিল ঘোষণা করে ব্রাকসুর নির্বাচন কমিশনার হয়। ছুটির মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তা প্রত্যাখান করেছেন।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোণায় প্রভাষকদের পদোন্নতির দাবিতে কর্মবিরতি
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ
মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা বলেন, বন্ধের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি প্রতারণার শামিল। এ নির্বাচনের তারিখ পূনর্বিবেচনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী আলবীর বলেন, “আমরা এটা প্রত্যাখান করি। কারণ এতে নিবাচন অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর হবে না। এছাড়াও আরো সমস্যা আছে। এ সময়গুলোতে জাতীয় নির্বাচনের উৎসব চলে আসবে। তখন আমাদের ব্রাকসু হবে কিনা- এটা নিয়ে সংশয় পড়ে যাব।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন বলেন, “আজ একটি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক ধরনের হঠকারিতা করলো। এটাকে নির্বাচন বিলম্বিত করা এবং ব্রাকসুকে দীর্ঘায়িত করার একটি প্রচেষ্টা বলে আমরা মনে করি।”
তিনি বলেন, “বন্ধের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি প্রতারণার শামিল। এই তফসিলকে প্রত্যাখ্যান করে আমরা বলতে চাই, তফসিল পুনঃবিবেচনা করে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে।”
ইলেক্টিকেল ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, “তারা নামমাত্র একটা তারিখ প্রকাশ করেছে, যাতে নির্বাচন করা সম্ভব না হয়। তাই আমরা বলব শীতকালীন ছুটির আগে তারা কোনো তারিখ পুনরায় বিবেচনা করুক। যদি তারা না করে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।”
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার সহযোগী অধ্যাপক মাসুদ রানা বলেন, “ব্রাকসু নির্বাচনের সময়ে বন্ধ থাকবে না। শীতকালীন ছুটিটা জানুয়ারিতে হবে। একাডেমিক কাউন্সিলে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করা যেন না লাগে, এজন্য সময়টা ওইভাবেই দেওয়া।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এনজিওর ৬০০ কোটি টাকা প্রতারণা, সিআইডির অভিযানে তনু গ্রেপ্তার
অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নওগাঁ সদর এলাকার বাসিন্দা। সিআইডির মিডিয়া বিভাগ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সিআইডি জানায়, নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বাদী অভিযোগ করেন নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিওতে তিনিসহ আরো অনেক সদস্য সঞ্চয় জমা দান, মাসিক ডিপিএস, এককালীন ঋণ গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেন। ভুক্তভোগী ছাড়াও আরো অনেকে আলাদাভাবেও এককালীন আমানত হিসাবে অর্থ জমা করেন। প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেতেন গ্রাহকরা। বাদীর আমানত হিসেবে মোট ২০ লাখ টাকা ছিল। এছাড়াও ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায়শই অর্থ উত্তোলন, জমা দেওয়াসহ আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন হতো। গ্রেপ্তার তনু আলোচিত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন।
সিআইডি জানায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেতেন গ্রাহকরা। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এ হারে লভ্যাংশ দেওয়া হতো। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি পরিচালকরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করলে সাধারণ মানুষ ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ এ গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। বিনিয়োগকারীরা বেশিরভাগই ছিল দরিদ্র জনগোষ্ঠী। ২০২৪ সালের আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা তাদের জমা করা কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
পরবর্তী সময়ে গত বছরের নভেম্বর মাসে পুনরায় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ অফিসে উপস্থিত হয়ে বাদীসহ অন্যান্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কোনো প্রকার অর্থ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে অফিস থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে। মামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় এ পর্যন্ত মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ