তার হাতের স্পর্শে শাড়ির জমিন আর গয়নায় মূর্ত হয় ফুল, লতা, পাতা আর জ্যামিতিক নকশা। শখ করে শুরু করেছিলেন এই কাজ।এখন শখকে নেশাকে পেশায় রূপদান করেছেন হাবিবুন নাহার বৃষ্টি। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নিজেকে একটু একটু করে সফলতার দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন। 

হাবিবুন নাহার বৃষ্টির বেড়ে ওঠা জামালপুরে।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোম ইকোনমিক্স ইউনিট থেকে ‘শিল্পকলা ও সৃজনশীল শিক্ষা’ বিভাগে পড়াশোনা শেষ করেছেন।  পড়ালেখা শেষে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই হয়েছেন উদ্যোক্তা। অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতেও  কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

২০২০ সালের ফ্রেবুয়ারির ৪ তারিখ থেকে সামান্য কাঠের কিছু পণ্য নিয়ে যাত্রা নিয়ে শুরু করেছিলেন তিনি। ব্যবসার প্রচারের জন্যে  অনলাইনের একটি পেইজ খুলেন তিনি। নাম দেন অনিন্দতা। কাঠের গায়না, হ্যান্ডপেইন্ট শাড়ি-পাঞ্জাবী, কাস্টমাইজড গয়না নিয়ে কাজ করেন তিনি। 

অভিজ্ঞতা না থাকায় শুরুতে  কিছুটা হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে, কিন্তু কাজের প্রতি ভালোবাসা ও ইচ্ছাশক্তিকে  কাজে লাগিয়ে  বৃষ্টি সেই ভয় কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় নেননি। অনলাইনে ব্যবসা শুরুর উদ্যোগ নেওয়ার পরপরই  অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হন এরপর আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচিতি বাড়াতে সক্ষম হন। বৃষ্টির বুটিকের নকশাদার শাড়ি, পাঞ্জাবী দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে গেছে। এ ছাড়া প্রবাসী বাঙালিরাও তার পণ্যের ক্রেতা। 

বৃষ্টি বলেন, ‘‘ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এসে বিভিন্ন মানুষের সাথে পরিচিত বৃদ্ধি হয়েছে, তাদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।’’

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বৃষ্টির পরামর্শ—
পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো উদ্যোক্তা হতে চাইলে অবশ্যই একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে হবে। প্রথমে আপনার মূলধনের উৎস নির্ধারণ করুন। কোন বিষয়ের প্রতি আগ্রহী সেটা নির্ধারন করুন। কাঁচামালের  উৎস খুঁজুন।  আমার পণ্যের কোয়ালিটি দিকে নজর দিবেন, কাস্টমাররে চাহিদা বুঝতে হবে । কাস্টমারের সাথে আন্তরিকতা বজায় রেখে যোগাযোগ করতে হবে। অনেক ধৈর্যশীল হতে হবে, কাজের প্রতি জেদ ও ভালোবাসা থাকতে হবে।  সব শেষে বলতে চাই, এখন অনেক প্রতিযোগিতা অনলাইন প্লাটফর্মে। যারা নতুনভাবে কাজ শুরু করতে চান, তাদের অবশ্যই কাস্টমার ডিমান্ড অনুযায়ী ইউনিক টাইপ পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।

তিনি মনে করেন, নতুন উদ্যোগতাদের উদ্যোগ এগিয়ে দিতে বিভিন্ন ফাউন্ডেশন, সরকার, ব্যাংক ঋণ অবদান রাখতে পারে। 

নতুন বছরের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নতুন বছরে কাজ নিয়ে একটু বেশি ব্যস্ত থাকবো। গ্রাহকদের পছন্দমতো ডিজাইনের পণ্য হাতে দিতে পারলেই আনন্দ। ব্যবসা বড় করার জন্য বেশ কিছু প্রশিক্ষণ নিয়েছি, আরো নেবো। নিজের ব্যবসাকে গ্রাহকদের কাছে পছন্দনীয় করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবো।’’

হাবিবুন নাহারের ব্যবসায়ের লাভ মূল পুঁজিতে যোগ করার চেষ্টা করছেন। এভাবে ব্যবসায়ের পরিসর বাড়িয়ে নিতে চান। এ ছাড়া প্রতি মাসে গড়ে ২০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬: সূচি ও ভেন্যু ঘোষণা

নারী ক্রিকেটের বৈশ্বিক মঞ্চে আবারও আলো ছড়াতে প্রস্তুত হচ্ছে ইংল্যান্ড। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) যৌথভাবে ঘোষণা করেছে ২০২৬ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়সূচি ও ভেন্যুর তালিকা। ১২ জুন শুরু হয়ে এই ক্রিকেট উৎসব চলবে ৫ জুলাই পর্যন্ত, যার সমাপ্তি ঘটবে ঐতিহ্যবাহী লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে জমকালো ফাইনালের মাধ্যমে।

এই আসরে প্রথমবারের মতো ১২টি দল অংশ নিচ্ছে, যারা দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে মোট ৩৩টি ম্যাচে। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ২৪ দিনের রোমাঞ্চকর এক প্রতিযোগিতা অপেক্ষা করছে।

টুর্নামেন্টের সূচি উন্মোচনের অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় লর্ডসে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ, ইসিবি প্রধান রিচার্ড গুল্ড, ইংল্যান্ড নারী দলের কোচ চার্লট এডওয়ার্ডস এবং বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার।  
 
বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে সাতটি ঐতিহাসিক ও আধুনিক ভেন্যুতে— লর্ডস (লন্ডন), ওল্ড ট্রাফোর্ড (ম্যানচেস্টার), হেডিংলি (লিডস), এজবাস্টন (বার্মিংহাম), হ্যাম্পশায়ার বোল (সাউদাম্পটন), দ্য ওভাল (লন্ডন) এবং ব্রিস্টল।

আরো পড়ুন:

স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার সিক্স অনুর্ধ্ব-১৯ মেয়েরা 

অস্ট্রেলিয়াকে নাড়িয়ে দিয়েও বাংলাদেশের হৃদয় ভাঙা হার 

আগামী আসরে সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আট দল: স্বাগতিক ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বাকি চারটি দল আসবে কোয়ালিফায়ার পর্ব পেরিয়ে, যেখানে বাংলাদেশসহ আরও বেশ কিছু দলকে লড়াই করতে হবে মূলপর্বে জায়গা পাওয়ার জন্য।

আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এক বার্তায় জানান, “২০১৭ সালে নারী ক্রিকেট ইতিহাসে যে অধ্যায় লর্ডসে রচিত হয়েছিল, এবার আমরা সেই আবহে ফিরে যেতে চাই। ২০২৮ সালের অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তির দিকেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

ইসিবি প্রধান রিচার্ড গুল্ড বলেন, “আমরা গর্বিত যে বিশ্বের সেরা কয়েকটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারছি। নারী ক্রিকেটকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আর লর্ডসে ফাইনাল আয়োজন—এটা প্রতিটি ক্রিকেটারের স্বপ্নপূরণের এক সম্ভাবনা।”

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ