চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডাস্টবিনগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাঙ্গাত্মক ছবি সাঁটিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীরা সেগুলোর নাম দিয়েছেন ‘হাসিনাবিন’।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসের আটটি ডাস্টবিনে শেখ হাসিনার এ ব্যাঙ্গাত্মক ছবি লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিনে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হোসেন বলেন, “শেখ হাসিনা গত ১৭ বছরে মাফিয়া চক্রের মাধ্যমে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে ফ্যাসিজম কায়েম করেছেন। তিনি হাজারো ছাত্র-জনতাকে খুন করেছেন। তার প্রতি আমাদের কোনো সহানুভূতি নেই। তাই আমরা পুরো ক্যাম্পাসের ডাস্টবিনে তার ছবি সংযুক্ত করেছি।”

আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ হোসেন বলেন, “হাসিনা জুলাই অভ্যুত্থানসহ বিগত সময়ে হত্যা, খুন-গুমের মহারাজত্ব কায়েম করেছিল। তার প্রতি ঘৃণা ছাড়া দেশের মানুষ আর কিছুই দিতে পারবে না। তাই ঘৃণার প্রতীক হিসেবে তার ছবি আমরা ডাস্টবিনগুলোতে লাগিয়ে হাসিনাবিন নাম দিয়েছি।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের জোর করে বোরকা পরাবে না: শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, তাঁদের দল দেশের শাসনক্ষমতায় গেলে নারীদের জোর করে বোরকা পরানো হবে না। তিনি বলেছেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য করবে—এমন ভয় দেখানো হয়। তবে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কাউকে জোর করে বোরকা পরাবে না।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে রূপসী প্রো-অ্যাকটিভ ভিলেজ রোডে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এ কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর পেশাজীবী পরিষদ।

সমাবেশে শফিকুর রহমান বলেন, যোগ্যতা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নারীরা দেশ গড়ার কাজে অংশ নেবেন। বর্তমানে নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মান নেই। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।

জনগণকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ভোটের মাধ্যমে যাতে বিবেকের প্রতিফলন ঘটে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় আসবে, জামায়াত তাদের অভিনন্দন জানাবে। আর জামায়াত জিতলেও যেন তারা অভিনন্দন জানায়।

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে উল্লেখ করে দলটির আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অঙ্গীকার একেবারেই স্পষ্ট। আমরা শিক্ষা-স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব।’

বর্তমানে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভালো নয় আর স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভঙ্গুর বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির। এ ছাড়া তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখা, সবার জন্য সমান সুযোগ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, ভাঙাচোরা অর্থনীতিকে পুনরায় গড়ার এবং আমূল পরিবর্তন করার অঙ্গীকার করেন।

জামায়াত একটা অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি রাজনৈতিক দল, নির্বাচনের প্রার্থী, প্রার্থীর কর্মী, সহযোগীসহ সবাইকে রাজনীতিতে নেমে ‘কাদা–ছোড়াছুড়ি’ না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাজনীতি যেন নীতি দিয়ে করা হয়। কেউ যেন গায়ের জোর খাটানোর চেষ্টা না করে, কালোটাকা দিয়ে মানুষের বিবেক কেনার দুঃসাহস না দেখায়।

শফিকুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়েছিল, ২০৪১ সাল পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় থাকবে। সবকিছু সাজানো হয়েছিল ৪১ সালের জন্য। কিন্তু ২৪ সাল যে ৪১ হয়ে যাবে, তারা বুঝতে পারেনি।

গত বছর নিরস্ত্র মানুষের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘যারা বলেছিলেন আমরা পালাই না, তারা জানি না এখন কীভাবে কোথায় গেলেন। আমরা কোনো দিন এটা বলিনি যে আমরা পালাই না। তবে আলহামদুলিল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আমাদের এটুকু মেহেরবানি করেছেন যে আসলেই আমরা পালাইনি। আমরা ফাঁসির রশি গলায় নিয়েছি, কিন্তু দেশ থেকে পালাইনি।’

জামায়াত সংস্কারের দিকে যতবার এগোতে চেয়েছে, ততবার পেছনের দিকে টেনে ধরা হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এটা চাই না, ওটা চাই না, এটার দরকার নাই, শুধুমাত্র ইলেকশন দরকার। তো ইলেকশন তো আগেও হয়েছে, এই ইলেকশন তো এ দেশের মানুষকে কল্যাণ এবং মুক্তি তো দিতে পারেনি।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, নির্বাচন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে নির্বাচনের মতো নির্বাচন প্রয়োজন। পুরোনো স্টাইলের নির্বাচন দিয়ে দেশে কেউ কল্যাণ আনতে পারবে না।

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, দুর্নীতি—তোমাকে লাল কার্ড। সন্ত্রাস—তোমাকে একেবারে কালো কার্ড। অবিচার—তোমার জায়গা সমাজে হবে না। একটা দুর্নীতিমুক্ত, সামাজিক সুবিচারে পরিপূর্ণ, একটা ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনীতির দেশ হিসেবে বুক চিতিয়ে যুদ্ধ করা যুবকদের হাতে, তাদের মেধার মূল্যায়ন করে, তাদের এ দেশের দেশ গঠনে কাজে লাগানো—সেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে জামায়াত।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ