ঢাকা থেকে নিখোঁজ কিশোরী সুবা নওগাঁয় উদ্ধার
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে নিখোঁজ কিশোরী আরাবি ইসলাম সুবাকে নওগাঁ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ও র্যাব।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নওগাঁ শহরের আরজি নওগাঁ মধ্যপাড়া থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী।
ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, “ঢাকা থেকে সুবা মিসিং হয়েছে এমন একটি তথ্য আমাদের কাছে ছিল। সুবা নওগাঁয় অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আরজি নওগাঁ মধ্যপাড়া এলাকায় সুবার কথিত প্রেমিক মুমিনের বাসায় অভিযান চালানো হয়। পরে মুমিনের বাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি স্বীকার করেন, সুবা তাদের কাছে রয়েছে। এরপর পাশের বাড়ি থেকে সুবাসহ মুমিনকে আটক করে পুলিশ এবং র্যাব-৫। এরপর তাদের দুইজনকে র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পে নেওয়া হয়।”
আরো পড়ুন:
রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে বখাটের হেনস্তা, বাউফলে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ঝালকাঠিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ
ওসি আরো বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় সুবা স্বীকার করে, টিকটকের সুবাদে তাদের দুই জনের পরিচয় হয়। তবে এবিষয়ে আমাদের বেশি কিছু জানা নেই। পরবর্তীতে তাদের দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদাদের মাধ্যমে বিস্তারিত জানা যাবে।”
ঢাকা/সাজু/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অল্প বয়সে বিয়ে, ধীরে ধীরে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে ফ্রিল্যান্সার তানিয়ার মাসিক আয় লাখ টাকা
মাত্র ১৪ বছর বয়স। যে বয়সে কিশোরীরা স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে দুরন্তপনায় মেতে থাকে, সে বয়সেই বাল্যবিবাহের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল তানিয়া নাসরিনকে। অল্প বয়সে সংসারের ভার, এরপর কোলজুড়ে আসে এক ছেলে ও এক মেয়ে। পড়াশোনা শেষ করার আগেই সংসারে প্রবেশ করায় চাকরি করার কোনো যোগ্যতা বা সুযোগ কোনোটাই ছিল না তাঁর। এর মধ্যেই সংসারে শুরু হয় তীব্র অর্থনৈতিক টানাপোড়েন।
সাধারণ কোনো গল্প হলে এখানেই হয়তো সমাপ্তি ঘটত। কিন্তু তানিয়া নাসরিন হার মানতে নারাজ। সেই কঠিন সময় পাড়ি দিয়ে তানিয়া আজ একজন সফল ডিজিটাল ডিজাইনার। মাসে আয় করছেন হাজার ডলারের বেশি। একজন গৃহিণী থেকে শুরু করলেন, তারপর পড়াশোনা শেষ করে হলেন সফল ফ্রিল্যান্সার। তানিয়া নাসরিনের এই যাত্রাপথ কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না।
ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পতানিয়া নাসরিনের বাবা আবদুল খালেক ছিলেন একজন প্রবাসী, থাকতেন দুবাইয়ে। মা রাশেদা বেগম, গৃহিণী। ২০০১ সালে প্রবাসেই তাঁর বাবার ক্যানসার ধরা পড়ে। তখনই শুরু হয় তানিয়ার বিয়ে নিয়ে আলোচনা। সেই অল্প বয়সেই মেয়েকে বিয়ে দিতে হয়। বিয়ের দেড় মাস পর তানিয়ার বাবা মারা যান।
বাবাহারা অল্প বয়সি মেয়ের জীবনে আসে শূন্যতা। তানিয়ার স্বামীর নাম জাহিদ হাসান, পেশায় একজন ব্যাবসায়ী। জাহিদ তানিয়াকে বললেন, ‘তুমি চাইলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারো।’ তখন ২০০২ সাল প্রথম সন্তান জেবা ফারিহা এসেছে ঘরে। সেভাবে পড়াশোনাই আর করতে পারেননি। সংসারে ব্যস্ত সময় কাটে তানিয়ার।
২০০৭ সালেই সংসারে আসে দ্বিতীয় সন্তান জুবায়ের আহম্মেদ। সে বছরেই তানিয়া আবিষ্কার করেন নিজেকে। সন্তান মানুষ করার পাশাপাশি নিজেকে কিছু করতে হবে। আর কিছু করতে গেলে পড়াশোনাটা আগে শুরু করতে হবে। যেই ভাবনা সেই কাজ। যেহেতু স্বামীর বাসা ঢাকার লালবাগ, সেখানেই ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে তানিয়া ভর্তি হন। এরপর সংসার, বাচ্চা সামলানো আর পড়াশোনা।এরপর ভর্তি হন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি প্রোগ্রামে। এইচএসসি পাস করে শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করেন। তানিয়ার গ্রামের বাড়ি ঢাকার দোহার উপজেলায়। দুই ভাই ও দুই বোন। তিনিই সবার ছোট ছোট।
সংসারের অভাব-অনটনের দিনগুলোতে তানিয়া খুঁজছিলেন এমন কোনো পথ, যা তাঁকে ঘরের বাইরে না গিয়েও আয়ের সুযোগ দেবে। একদিন এক বান্ধবীর ভাবির কাছ থেকে জানতে পারেন গ্রাফিক ডিজাইনের কথা। জানতে পারেন, এ কাজ শিখে ঘরে বসেই সম্মানজনক আয় করা সম্ভব। সেই ভাবি নিজেও তখন ঘরে বসে ভালো আয় করছিলেন। অন্যের সাফল্য দেখে নিজের মনেও সাহস সঞ্চার করেন তানিয়া। সংকল্প করেন তিনিও পারবেন।
তানিয়া নাসরিন মনে করেন, বিয়ে হয়ে যাওয়া মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া নয়