Samakal:
2025-09-18@00:53:49 GMT

ইসলামের জ্ঞানপিপাসু নারী

Published: 7th, February 2025 GMT

ইসলামের জ্ঞানপিপাসু নারী

নব্যুয়ত-পূর্ববর্তী জাহিলিয়াতের সময়ে যে সমাজে কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়ার প্রচলন ছিল; কন্যাসন্তান জন্মের সংবাদে পিতারা অসম্মান বোধ করতেন। নব্যুয়ত-পরবর্তী সেই সমাজেই দেখা যায় কন্যাদের হাতে জ্ঞানের চাবিকাঠি তুলে দিচ্ছেন পিতারা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে কোরআন এবং ইসলামী জীবনযাপনের পদ্ধতি শিক্ষালাভের জন্য নারীরাও এগিয়ে এসেছেন; প্রশ্ন করে জেনে নিয়েছেন। সত্য প্রকাশে কখনও কাউকে ভয় পাননি। 

হিজরি প্রথম ও দ্বিতীয় শতক ইসলামের সর্বোত্তম ও স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচিত ছিল। এই সময়টি ছিল সাহাবিদের সময়। নবীজির (সা.

) মুখনিঃসৃত বাণী সাহাবিরা অন্তরের মাঝে গেঁথে নিতেন। রাসুলুল্লাহর (সা.) ওফাতের পর যখন হাদিস সংকলন এবং সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তখন সাহাবিদের মধ্য থেকে প্রত্যেকেই নানাভাবে সেই কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকেই হাদিস চর্চা করতেন।

প্রথম ও দ্বিতীয় হিজরি শতকে নারীদের বর্ণিত অনেক হাদিস বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থগুলোয় লিপিবদ্ধ হয়, যা থেকে মানুষ এখনও শিক্ষা গ্রহণ করে আসছে। 
হাদিস ও ফিকহ শাস্ত্রে সাহাবিদের (নারী-পুরুষ) মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন আয়েশা (রা.)। তিনি ২ হাজার ২১০টি হাদিস বর্ণনা করেন। এর মধ্যে ২৯৭টি হাদিস বুখারি ও মুসলিমে স্থান পেয়েছে। ছয়টি হাদিস গ্রন্থে বেশিসংখ্যক হাদিস বর্ণনাকারীর মধ্যে তাঁর স্থান দ্বিতীয়। আবু হুরায়রার (রা.) পরেই তাঁর স্থান।
আয়েশার (রা.) পর বেশি হাদিস বর্ণনাকারীর মধ্যে ছিলেন উম্মে সালামা (রা.)। তিনি ৩৭৮টি হাদিস বর্ণনা করেন। এ ছাড়া আসমা বিনতে ইয়াজিদ ইবনুস সাকান, উম্মুল মুমিনিন মাইমুনা, উম্মুল মুমিনিন হাফসা, আসমা বিনতে আবু বকর, আসমা বিনতে উমাইস, আমারা বিনতে আব্দুর রহমান (রা.)-সহ অনেক নারী সাহাবি হাদিস বর্ণনা করেছেন।

সাহাবিদের মধ্যে, হোক তিনি পুরুষ কিংবা নারী; সুন্নাহ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে শিক্ষার্থীরা সুদূর ইরাক ও সিরিয়া থেকে মদিনা ভ্রমণ করতেন। মুহাদ্দিসাত ফাতিমা আল বাতাইহিয়া সিরিয়া থেকে মদিনায় এসে মসজিদে নববিতে পড়াতেন। তাঁর কাছে বড় বড় আলিম পড়তেন।

সেই সময়ে নারীরা ফতোয়া দিতেন, বিচারকাজ করতেন, সাক্ষ্য দিতেন, হাদিস মুখস্থ ও লেখার কাজ করতেন। প্রায় প্রতিটি ঘরে নারীরা কোরআন মুখস্থ করতেন। কোরআন ও হাদিসের যে কোনো ব্যাপারে ব্যাখ্যা জানতে সাহাবিরা আয়েশার (রা.) কাছে হাজির হতেন। তাঁর ফতোয়ার ওপর সবাই আস্থা রাখতেন।

ওই সময়ে নারী শিক্ষকরা মসজিদ, ফলের বাগান, নিজেদের ঘর, হাদিসের মজলিসে শিক্ষা দিতেন। তাদের কাছ থেকে জ্ঞান লাভ করতেন বিশিষ্ট আলিম থেকে শুরু করে সাধারণ নারী-পুরুষ। যে নারী জ্ঞানের আলোয় নিজেকে রাঙাননি, তিনি কোনো কল্যাণ লাভ করেননি।

হাজার বছর আগে যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এত বিকশিত হয়নি, সেই সময়ে নারীরা জাগতিক যশ, খ্যাতি, দুনিয়ার প্রাচুর্য কিংবা ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষায় জ্ঞানসমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েননি। বরং আখিরাতের প্রাচুর্যের আকাঙ্ক্ষায় তারা দীনি জ্ঞান অর্জন করেছেন, সেই অনুযায়ী আমল করেছেন এবং অন্যকে শিক্ষা দিয়েছেন। এতে তারা দুনিয়াতেও যেমন সম্মানিত হয়েছেন, আখিরাতেও তারা তাদের প্রতিদান পাবেন ইনশাআল্লাহ। 

নারীর বই পড়া মানে পুরো একটি পরিবারের বই পড়া। তখন নারীর জ্ঞানার্জনে কেউ কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বরং পিতারা নিজ নিজ কন্যাদের হাদিসের ক্লাসে নিয়ে যেতেন। কেউ পিতার কাছ থেকেই শিক্ষা নিতেন। কেউ পিতাকে জ্ঞানার্জনে সহায়তা করতেন।

অনেক নারী মুহাদ্দিসাত থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তাদের পিতা, তাদের স্বামী, তাদের ভাই। অনেক আলেম কোনো বিষয়ে জটিলতায় পড়লে স্ত্রীর কাছ থেকে সমাধান পেতেন। সেসব স্ত্রী ছিলেন জ্ঞানের আধার। এমন অনেক মুহাদ্দিসাতকে তাদের পিতা ধনাঢ্য কারও কাছে বিয়ে না দিয়ে জ্ঞানী ছাত্রদের কাছে বিয়ে দিতেন, যাতে তাদের কন্যাদের জ্ঞানার্জন অব্যাহত থাকে। 

ইসলামের স্বর্ণযুগের মতো জ্ঞানপিপাসু সেই নারীদের আজ বড় প্রয়োজন। সাজসজ্জার চেয়ে জ্ঞানার্জনে নারীরা গুরুত্ব দিলে পরিবার ও সমাজের পরিবর্তন হতে পারে।

মেহেরুন নেছা রুমা: লেখক 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ঞ ন র জন ই সময় ইসল ম করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের ক্ষুদে ফুটবলার জিসানের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্থানীয়রা ফুটবলে জিসানের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ বলে ডাকেন। 

তারেক রহমানের পক্ষে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জিসানের গ্রামের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি জিসানের বাবা ও এলাকাবাসীকে এ খবরটি জানিয়ে আসেন।

উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের অটোরিকশাচালক জজ মিয়ার ছেলে জিসান। মাত্র ১০ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান ফুটবলারের অসাধারণ দক্ষতার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। স্থানীয় চর ঝাকালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সে। 

কখনও এক পায়ে, কখনও দু’পায়ে, কখনও পিঠে ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কসরত করে জিসান। দেখে মনে হবে, ফুটবল যেনো তার কথা শুনছে। এসব কসরতের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

অনলাইনে জিসানের ফুটবল নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হন তারেক রহমান। তিনি জিসানের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে জিসানের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। 

জিসানকে উপহার হিসেবে বুট, জার্সি ও ফুটবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেন তিনি। এছাড়া জিসানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।

জিসানের ফুটবল খেলা নিজ চোখে দেখে মুগ্ধ আমিনুল হক বলেন, “জিসান ফুটবলে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। তারেক রহমান জিসানের প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিমাসে জিসানের লেখাপড়া, ফুটবল প্রশিক্ষণ ও পরিবারের ব্যয়ভারের জন্য টাকা পাঠানো হবে।”

জিসান জানায়, মোবাইলে ম্যারাডোনা, মেসি ও রোনালদোর খেলা দেখে নিজেই ফুটবলের নানা কৌশল শিখেছে। নিজ চেষ্টায় সে এসব রপ্ত করেছে।

জিসানের বাবা জজ মিয়া বলেন, “আমি বিশ্বাস করতাম, একদিন না একদিন কেউ না কেউ আমার ছেলের পাশে দাঁড়াবে। আজ আমার সেই বিশ্বাস পূর্ণ হয়েছে।”

ঢাকা/রুমন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর  করতে ডায়েটে যে পরিবর্তন আনতে পারেন
  • অনুষ্ঠান করে স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন স্বামী
  • ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান