সিদ্ধিরগঞ্জে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সোর্স ইকবালের ডাকাতি
Published: 13th, June 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সোর্স একাধিক মামলার আসামি ইকবাল দিন দিন বেপরোয়া উঠছে। থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো থানা এলাকা।
নানা অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশের সোর্স ইকবাল সুযোগ বুঝে থানার পাশ^বর্তী অন্য থানা এলাকাতেও নির্বিঘ্নে অপরাধ সংগঠিত করছে।
গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন ) রাত সাড়ে নয়টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ট্রাক স্টেশনের পাশে অবস্থিত রিভারভিউ রেস্টোরেন্টে পুলিশ পরিচয়ে দুর্র্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় নগদ ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও ৮টি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পুলিশের সোর্স ইকবালকে প্রধান অভিযুক্ত করে অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের কা হয়।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সাড়ে নয়’টার দিকে থানার শিমরাইল ট্রাক স্টেশনের পাশে অবস্থিত রিভারভিউ রেস্টোরেন্টে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে ওয়াকিটকি ও স্টিলের লাঠি হাতে ডাকাত দলের ১০/১২ জন অতর্কিত ভাবে হোটেলে প্রবেশ করে ম্যানেজারসহ স্টাফদের এলোপাথারী মারপিট করে তাদের শরিরে নীলাফুলা জখম করে এবং প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে চুপচাপ থাকতে বলে।
এসময় ডাকাত দল হোটেলের ক্যাশে থাকা নগদ ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ ম্যানের ও স্টাফদের কাছে থাকা ৮টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাদের ভিতরে আটক রেখে বাহির থেকে গেইট লাগিয়ে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ভিতরে আটক থাকা ম্যানেজার ও স্টাফদের ডাক চিৎকারে আশ পাশের সাধারণ লোকজন গেটের ছিটকিরি খুলে দিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজি দক্ষিনপাড়া এলাকার হাফিজুল ইসলামের ছেলে একাধিক মামলার আসামী পুলিশের সোর্স ইকবাল।
গত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় পুলিশের সাথেই গাড়ি, মোটরসাইকেল, হ্যান্ডকাফ নিয়ে আসামি ধরতে ঘুরে বেড়ানোর কারনে অনেকে তাঁকে পুলিশই মনে করে। বিভিন্ন জায়গায় নিজেই পুলিশ পরিচয়েও গ্রেপ্তারের নামে ফিটিং বানিজ্য করে বেড়ায়।
সিদ্ধিরগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় রাতে চলাচলরত মানুষকে তল্লাশির নামে পকেটে ইয়াবা কিংবা গাঁজার পুরিয়া দিয়ে ফিটিং দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আবার কখনও কখনও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়েও সে নিরপরাধ মানুষের অর্থকড়ি হাতিয়ে নেয়।
এছাড়াও পুলিশের সাথে আতাত করে ইকবাল বিভিন্ন এলাকায় মাদক সাপ্লাই দিয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে উঠতি বয়সের যুবকদের ভবিষ্যৎ।
একাধিক সূত্রমতে, সোর্স ইকবালের ভুয়া তথ্যে পুলিশ সদস্যদেরও অনেক সময় অনাকাক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। আবার অপরাধীদের নির্বিঘ্নে অপরাধ সংঘঠিত করে পার পেয়ে যায়। ইকবাল নাসিক ১, ২, ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকায় দাবিয়ে বেরাচ্ছে।
বিশেষ করে নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড শিমরাইল এলাকার প্রতিটি মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৬টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত গড়ে ৫’শ থেকে ১’হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করে এবং পুলিশ আসার ভয় দেখিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এক কালিন ৫ থেকে ১০’হাজার টাকা আদায় করে।
পুলিশ অভিযানে আসার আগেই ইকবাল মাদক ব্যবসায়ীদের বলে দেয় পুলিশ আসতেছে এখন মাদক ব্যবসা বন্ধ কর, অন্যথায় ধরে নিয়ে গেলে আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মো.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স র স ইকব ল স দ ধ রগঞ জ অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত
বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ।
সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।
আরো পড়ুন:
একা বাস করতে পারে যে পাখি
কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?
সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।
তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না।
এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস।
তিনি জানেন, প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে। বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।
সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন।
একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।
সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।
চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।
গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা/লিপি