স্মার্টফোনে থাকা তথ্য চুরির জন্য নিয়মিত সাইবার হামলা চালিয়ে থাকে হ্যাকাররা। কয়েক বছর ধরে এ ধরনের হামলার পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। ম্যালওয়্যারসহ বিভিন্ন ধরনের স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে স্মার্টফোনে সাইবার হামলার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে। তবে চাইলে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে স্মার্টফোনের নিরাপত্তা বাড়ানো যায়। পদ্ধতিগুলো দেখে নেওয়া যাক—

সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন রিস্টার্ট করা

স্মার্টফোনকে সুরক্ষিত রাখতে সপ্তাহে অন্তত একবার বন্ধ করে পুনরায় চালু করা পরামর্শ দিয়ে থাকেন সাইবার নিরাপত্তা–বিশেষজ্ঞরা। এ পদ্ধতি মেনে চললে ‘জিরো-ক্লিক এক্সপ্লয়েট’ নামের সাইবার হামলা প্রতিরোধ করা যায়। জিরো ক্লিক এক্সপ্লয়েটের ফলে ব্যবহারকারী কোনো কিছুতে ক্লিক না করলেও হ্যাকাররা দূর থেকে ফোনে প্রবেশ করতে পারে। আর তাই সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন বন্ধ করে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করে  চালু করা উচিত। পাশাপাশি নিয়মিত সফটওয়্যার হালনাগাদ করা জরুরি।

ব্লুটুথ সংযোগ বন্ধ রাখা

ব্লুটুথ সংযোগ চালু রাখার অভ্যাস বদলানো উচিত। ব্লুটুথ ব্যবহারের মাধ্যমে হ্যাকাররা বিভিন্ন পদ্ধতিতে ফোনে প্রবেশ করতে পারে, বিশেষত জনবহুল এলাকায় এই ঝুঁকি বেশি থাকে। নিরাপত্তা বাড়াতে ও হ্যাকাররা যাতে সহজে শনাক্ত করতে না পারে এ জন্য ফোনের ব্লুটুথ নাম পরিবর্তন করে সাধারণ কিছু রাখা যেতে পারে, যেমন- ‘ডিভাইস ১২৩’। প্রয়োজন না হলে ব্লুটুথ বন্ধ রাখলে ব্যাটারির স্থায়িত্বও বাড়বে।

পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্ট এড়িয়ে চলা

পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্ট ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে এনএসএ। বিমানবন্দর, ক্যাফে কিংবা হোটেলের উন্মুক্ত ইউএসবি চার্জিং পোর্ট থেকে ফোন চার্জ করা বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ এসব পোর্ট ব্যবহার করে হ্যাকাররা ‘জুস জ্যাকিং’ নামের এক ধরনের সাইবার হামলা চালিয়ে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাতে পারে অথবা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে। আর তাই পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্টের পরিবর্তে সব সময় ব্যক্তিগত চার্জার বা পোর্টেবল পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করতে হবে।

পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করা

পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক সাধারণত সুরক্ষিত থাকে না এবং হ্যাকারদের জন্য এটি সহজ লক্ষ্যবস্তু। অনেক সময় প্রতারণার ফাঁদ হিসেবে ‘ফ্রি ওয়াই-ফাই’ নামে ভুয়া নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়, যেখানে সংযুক্ত হলে হ্যাকাররা সহজেই ফোনের তথ্য চুরি করতে পারে। নিরাপদ থাকতে কোনো পাবলিক নেটওয়ার্কে সংযোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাছ থেকে প্রকৃত নেটওয়ার্কের নাম নিশ্চিত হওয়া জরুরি। আরও নিরাপত্তার জন্য ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ডাটা এনক্রিপ্ট করে হ্যাকিং প্রতিরোধ করে।

মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা সুরক্ষিত রাখা

মাইক্রোফোন ও ক্যামেরার সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। অনেক সময় ‘হট-মাইকিং’ নামে এক ধরনের সাইবার হামলার মাধ্যমে হ্যাকাররা ফোনের মাইক্রোফোন গোপনে চালু করে ব্যবহারকারীর কথোপকথন শুনতে পারে। সাধারণত ক্ষতিকর অ্যাপ বা ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে এই কাজটি করা হয়। তাই ফোনের অ্যাপ পারমিশন নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। আরও নিরাপদ থাকতে ক্যামেরা কভার ও মাইক্রোফোন ব্লকার ব্যবহার করা যেতে পারে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন টওয় র ক প বল ক ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ